কালের খবরঃ
বয়স্কভাতাপ্রাপ্ত জীবিত বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে ভুয়া প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার অভিযোগে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শাওন ও নারী সদস্য আসমা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভুগী নারী।
সোমবার (২৫ মার্চ) একই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আয়না বেগম বাদী হয়ে কাশিয়ানী আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি ওই গ্রামের অসুস্থ আব্দুল রউফ মোল্যার স্ত্রী।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিষয়টি বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আশিক জামান উপল নিশ্চিত করে
মামলার বিবরণে বলেন, বাদী আয়না বেগম ২০১৭ সাল থেকে বয়স্ক ভাতা পেয়ে আসছেন। কিন্তু তিনি গত ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন উল্লেখ করে ইউ.পি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম একটি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন। একই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য আসমা বেগম। অথচ আয়না বেগম এখনও জীবিত আছেন। এতে আয়না বেগমের নামের বয়স্ক ভাতার কার্ডটি বাতিল হয়ে যায়। দীর্ঘদিন আয়না বেগমের মুঠোফোনে ভাতার টাকা না আসায় তিনি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় গিয়ে খোঁজ নেন। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন আয়না বেগমের নামে ‘মৃত্যুবরণ’করেছেন মর্মে একটি সনদ জমা রয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে ইউ,পি চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যের কাছে গেলে তার কোন সমাধান দেয়া হয়নি। উল্টো অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং হুমকি-ধামকি দেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন বাদী আয়না বেগম। এসব ঘটনার পর আয়না বেগম বাদী হয়ে ওই ইউ,পি চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
ভূক্তভোগী আয়না বেগম সাংবাদিকদেও বলেন, ‘আমি জীবিত থাকার পরও চেয়ারম্যান ও নারী ইউ.পি সদস্য আমাকে মৃত দেখিয়ে আমার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করে দিয়েছেন। আমি শয্যাশায়ী স্বামীকে নিয়ে অন্যের জায়গায় থাকি। এ ভাতার টাকা দিয়ে ওষুধ কিনে খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।’
ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শাওন প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘যখন লাইফ ভেরিভিকেশন হয়েছে, তখন ওই বৃদ্ধাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ওই ওয়ার্ডের ইউ,পি সদস্যরা সনাক্ত করলে, তিনি ‘মৃত্যুবরণ’করেছেন মর্মে আমি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি। তবে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।’
সংরক্ষিত নারী সদস্য আসমা বেগম জানান, ‘আমাদের ভুল হয়েছে। তার ভাতা আমরা ঠিক করে দিব।’
এ ব্যাপারে কাশিয়ানী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ বজলুল রশিদ বলেন, ‘চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে কার্ডটি বাতিল করা হয়েছে। এখানে আমাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই।’
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply