কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জ-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ঘাম ঝড়াচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীক । এই দুইজন প্রার্থীই আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় সমানে চলছে তাদের প্রচার প্রচারণা। কেউ যেন অন্যের থেকে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য কর্মী সমর্থক নিয়ে তারা প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। দুইজনই অনেকটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মতো ভোটারের বাড়ি বাড়ি, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান,ধর্মীয় উপাশনালয়সহ ওলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন। দুই প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
গোপালগঞ্জ-০১ আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী লেঃ কর্ণেল ( অবঃ) মুহাম্মদ ফারুক খান। তিনি ইতোপূর্বে এই আসন থেকে পাঁচ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন এবং নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রচারণা করছেন। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় সহজেই জয় পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম উপকমিটির সদস্য মোঃ কাবির মিয়া। তিনি এবার তার গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছেন। দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে বলায় এবার তিনি সুযোগ পয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার। তাইতো তিনিও সমান তালে ঈগল প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন এবং ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন বলে দাবী করেছেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচার কালে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেন, বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিলো বলেই মুকসুদপুরসহ দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।এই উন্নয়ন ধরে রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, এটা জাতীয় নির্বাচন এই নির্বাচনে ভোট দিলে সরকার পরিবর্তন হয়। আর ইউনিয়ন বা উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিলে স্থানীয় ভাবে কিছু উন্নয়ন হয়। তাই এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও জয়ী করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। তাহলেই দেশ আরো উন্নত হবে। আপনাদের ছেলে মেয়ে আধুনিক প্রযুক্তিগত উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাড়াতে সহায়তা করবে এবং পুনরায় নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। আমাদের বাপ দাদারা নৌকায় ভোট দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন আর আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ঘটাবেন।
তিনি ঈগল প্রতীকের ব্যাপারে আরো বলেন,কাবির মিয়া পাখি নিয়ে ঘুরছেন, এটা কোন পাখি বুঝি না। চিল না ঈগল না শকুন না বাজপাখি কিছুই বুঝি না। নৌকার বিপক্ষে কোন পাখি কাজ কবরে না।এই ঈগল প্রার্থীকে কি আপনারা এলাকায় দেখেছেন, যাকে জীবনে দেখেন নাই, যে লোক আপনাদের কাছে কখনও সুখে দুখে আসেন নাই তার মার্কা এখানে উঠলো কি করে।
অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ কাবির মিয়া বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারী নৌকার প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হবেন। ঈগল প্রতীকের বিজয় হবে। ৮০/৯০ শতাংশ ভোট পেয়ে ঈগল বিজয়ী হবে। নৌকার প্রার্থীর সময় ঘটে গেছে । ৭ জানুয়ারী ১১টায় তার ১২টা বেজে যেতে পারে। ঈগল এখন ঘারে আছে। ৭ তারিখ আকাশে উড়বে। ঈগলকে কেই ছুতে বা ধরতে পারবে না। আর আমার বিপক্ষের প্রার্থীকে আর এলাকায় দেখা যাবে না। আমি এলাকার ছেলে এলাকায়ই থাকবো। তাই ঈগল প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবে জনগণ।
মুকসুদপুর উপজেলার ননীক্ষির ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আল মামুন সিকদার বলেন, এমপি ফারুক খানের সময় মুকসুদপুরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এটা সত্য কিন্তু বর্তমান মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রবিউল আলম সিকদার সেই সুনাম নষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি এলাকায় ঘুষের রাজত্ব কায়েক করেছে। ঘুষ ছাড়া কোন কাজ করেননা। রাজনীতিতে নিজের লোকজনকে সুযোগ সৃস্টি করে দিয়েছেন। ত্যাগীনেতাদের মূল্যায়ন করেন না। তার বিরুদ্ধে এমপি সাহেবের কাছে নালিশ করে কোন লাভ হয়নাই। তিনিই এমপির প্রধান সেনাপতি। এ কারনে এবারের নির্বাচনে নৌকার পরাজয় হতে পারে।
মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হায়দার হোসেন বলেন, কাস্টিং ভোটের অধিকাংশ ভোট নৌকা প্রতীকে পড়বে। স্বাধীনতা পরবর্তী সকল জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কা বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়ে আসছে। সেসব বিরোধী প্রার্থীরা জামানত হারিয়েছে। বিগত ১৫ বছরে বিল বেষ্টিত মুকসুদপুর উপজেলার প্রতিটি গ্রামে মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। যেসব স্থানে নৌকায় করে যাতায়াত করতে হতো সেখানেও রাস্তা হয়েছে। মুকসুদপুরের মানুষ নৌকার উপর আস্থাশীল তাই এবারও সম্মানিত ভোটারগণ নৌকাকেই বেছে নিবেন। আর অন্যসব প্রার্থীরা পূর্বের মত জামানত হারাবেন।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply