মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পিছনে ধাক্কা। প্রাণ হারালো দুই মোটর সাইকেল আরোহী গোপালগঞ্জ-০২ আসনে গণফোরামের শাহ মফিজ নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় ! বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সেলিমুজ্জামান মুকসুদপুরে অপহরণের ১৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৯ মাসের শিশু রুম্পা উদ্ধার গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো বাইসাইকেল প্রতিযোগিতা টুঙ্গিপাড়ায় গাড়ি ভাংচুর ও মশাল মিছিল মামলায় দুই আ.লীগ নেতা কারাগারে গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর জয়নগর ফেরী ঘাট উদ্বোধন , দুই জেলার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে কোটালীপাড়ায় ভ্যান চাপায় শিশু নিহত আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণে বিরত থাকতে সেলিমুজ্জামান সেলিমের নির্দেশ এসএম জিলানী মনোনয়ন পাওয়ায় কোটালীপাড়ায় বিএনপির আনন্দ মিছিল

গোপালগঞ্জে প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজ পেয়ে ৪২০ চাষী বিপাকে ক্ষতিপূরণের দাবী

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১.৪৯ পিএম
  • ১৯২ Time View

কালের খবরঃ

পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে গোপালগঞ্জে ৬’শ প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে পেঁয়াজ বীজ দেওয়া হয়েছিল। তবে বীজ বপনের পর ৪২০ জন চাষীর জমিতে ৫ ভাগ চারাও গজায়নি। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষীরা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কৃষি বিভাগ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতাও পেয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের পুনরায় ক্ষতিপুরন দেয়ার সিধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কৃষিবিভাগ সূত্রে জানাগেছে, এ বছর জেলায় ৩ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ৫০ হাজার মেট্রিক টন।যা দেশের পিঁয়াজের চাহিদা মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

তাই পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় গেল নভেম্বর মাসে গোপালগঞ্জ কৃষি বিভাগের মাধ্যমে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র ৬’শ পেঁয়াজ চাষীদের বিনামূল্যে ১ কেজি করে বারি-১, বারি-৪ ও তাহেরপুরী  জাতের পেঁয়াজ বীজ, ১০ কেজি ডিএপি এবং এমওপি সার প্রদান করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পেরেশন। প্রণোদনা পাওয়ায় এসব বীজ আর সার দিয়ে পেঁয়াজচাষীরা মনের আনন্দে ৬০০ বিঘা জমির বীজতলায় পেঁয়াজের আবাদ শুরু করে। এর মধ্যে বারি-৪ ও তাহেরপুরী জাতের পেঁয়াজ বীজ দেয়া হয় ৪২০ জন কৃষকে। কিন্তু বীজ বপনের ১০ দিন পর অঙ্কুরোদগম হলেও বীজতলায় ৫ শতাংশ চারা গজায়নি। এতে প্রায় ৯৫ ভাগ পেঁয়াজ বীজ থেকে চারা না গজিয়ে অঙ্কুরেই নষ্ট হয়েছে বীজতলা। ফলে ওই জমিতে কোন ফসল বুনতে পাড়ছেন না ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। এতে রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি বলে মনে করছেন কৃষক ।

কাশিয়ানীর বালিয়াকান্দি গ্রামের পেঁয়াজচাষী নূর হোসেন বলেন,এবছর তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।এর মধ্যে সরকার থেকে ১ কেজি বীজ পাই।সেই বীজ একটিও গজায়নি। এতে আমি বিরাট একটি ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেছি।বীজটা পেয়ে খুব খুশি ছিলাম। কিন্তু একটা বীজও গজায়নি।এখন জমিতে বীজ দেয়ার ও সময় নেই। তাই সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি আমাদের যেন ক্ষতির একটা বিধি ব্যবস্থা করে।

হোগলাকান্দি গ্রামের চাষী টুটুল মোল্লা বলেন, আমিসহ আমাদের গ্রামে ৭/৮জন কৃষক সরকারি ভাবে পেঁয়াজ বীজ পায়।কিন্তু একজনেরও বীজ গজায়নি। অথচ বাইরের দোকান থেকে বীজ বপন করেছি তাদেরটা ঠিকঠাক গাজিয়েছে। তিনি বলেন,সরকারি বীজ তো। বীজ ক্রয়ের সময়ইতো সমস্যাটা হয়েছে। ঠিকাদারের মাধ্যমে বীজ কিনছে তাতে পুরান বীজ দিছে।যে ঠিকাদার বীজ সরবরাহ করেছে তার ক্ষতিপুরন দেয়া উচিৎ। গ্রামের অনেক কৃষক ধার দেনা ও ঋণ নিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করে লাভবান হবার স্বপ্ন দেখেছিলেন। অনেকে আবার বর্গা চাষ করছে।বর্গা নিতে বিঘাপ্রতি ৮/১০ হাজার টাকা দিতে হয়। সেই টাকাটাও ক্ষতি হলো। কিন্তু সরকারী বীজে প্রতারণার শিকার হওয়ায় এখন আমরা বিপদে পড়ে গেছি। অন্য ফসলও দিতে পারছিনা। জমি ফাঁকা রাখতে হবে তাই বাধ্য হয়ে হাট থেকে পেঁয়াজের চারা কিনে রোপন করতে হচ্ছে। তাতে অতিরিক্ত খরচ হবে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দ্রুত ক্ষতিপূরণের দাবী করছি।

একই গ্রামের পেঁয়াজ চাষী তুহিন মোল্লা বলেন,সরকারি বীজ পরীক্ষা না করে আমাদের দিয়েছে। বীজ গজায়নি তাতে আমাদের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে বীজ দিছে। কোন বীজই গজায়নি। কোন পারসেন্টেই নাই।এতে আমরা খুব ক্ষতির মুখে আছি। তাই ক্ষতিপুরনে সরকারের সুনজর কামনা করি।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, উপ-পরিচালক, আব্দুল কাদের সরদার, এবছর প্রনোদনার আওতায় ছয়শ জন কৃষক পেঁয়াজের বীজ সহায়তা পায়। এর মধ্যে ১৮০জন বিএডিসির বারী-০১ জাতের বীজ পায়। এই বীজের মান ভালো ছিল। বাকী ৪২০জন কৃষক বিএডিসি থেকে সরবরাহ কৃত বারী-০৪ বীজ ও তাহেরপুরী (গোল্ডেন এন্টাপ্রাইজ) নাম প্যাকেটে লেখাছিল। সেই পেঁয়াজ বীজটা অঙ্কুরিত হয়নাই।যাও অঙ্কুরিত হয়েছে তা খুবই নগন্ন। ৭/১০ পারসেন্ট অঙ্কুরিত হয়েছে। ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকসহ কৃষি বিভাগ মাঠে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলেছি। সরেজমিন দেখেছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। কৃষি অধিদপ্তরে উর্ব্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়েছিল। এই ঘটনা শুধু আমাদের গোপালগঞ্জ জেলায় না। পার্শ্ববর্তি ফরিদপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষিবিভাগ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পুনরায় তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন । সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION