কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মোবাইল চুরির মিথ্যা অপবাদে শান্তি বৈদ্য নামে এক যুবককে স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে হয়রানি ও জোরপূর্বক জরিমানা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে । স্থানীয় ইউ.পি সদস্য ও প্রভাবশালীরা এই জরিমানা আদায় করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ভুক্তভোগী যুবকের পিতা উপানন্দ বৈদ্য বাদী হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য দুলাল বাড়ৈ সহ ৫ জনকে আসামী করে কোটালীপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।উপজেলার ২নং সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের পীড়ারবাড়ী গ্রামের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগ কারী ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রের পিতা উপানন্দ বৈদ্য বলেন, কিছুদিন আগে পার্শ্ববর্তী বাড়ির প্রধান শিক্ষিকা অনিতা জয়ধরের ঘর থেকে কিছু নগদ টাকা ও তার ব্যাবহৃত মোবাইল সেটটি হারিয়ে যায়। এই বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার কিছুই না জানলেও গত ৩০ এপ্রিল পূর্ব বিরোধের জের ধরে গ্রামের একটি প্রভাবশালী মহল তার কলেজ পড়ুয়া ছেলের উপরে চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে গ্রাম্য শালিসি পরিচালনা করে।
ওই শালিসে ইউপি সদস্য দুলাল বাড়ৈর নেতৃত্বে দুলাল হালদার, মনোরঞ্জন গাইন, বিপুল হালদার, মনিমোহন বাড়ৈ সহ আরো অনেকে চাপ প্রয়োগ করে আমার ছেলেকে চুরির দায় স্বীকারের চেষ্টা করে।কিন্তু আমার ছেলে মানতে না চাইলে এক পর্যায়ে অন্যায়ভাবে তাকে মারপিট করে ৬২ হাজার টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য করে। তিনি জানান, যে মোবাইল সেট চুরির অপবাদে আমাকে জরিমানা করলো, কয়েক দিন পরেই অন্য একজনের কাছ থেকে সেই মোবাইল ফোন উদ্ধার করে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ। আমাদের প্রতি যে অন্যায়ভাবে হয়রানি করা হয়েছে তার বিচারের দাবী জানান তিনি।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য দুলাল বাড়ৈ জরিমানার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই ছেলেটা ফ্রি ফায়ারে আসক্ত ছিলো, এই গেইম খেলতে যে টাকার দরকার হতো ওটা ম্যানেজ করতে সে টাকা মোবাইল চুরি করতে পারে। এছাড়াও সে শালিসিতে স্বীকার করেছে চুরির বিষয়টি, তাই শিক্ষিকার ক্ষতিপূরণ বাবদ উপস্থিত সকলের মতামতে তার কাছ থেকে ৬২ হাজার টাকা নেয়া হয়। কিন্তু এখন শুনলাম মোবাইলটি অন্য একজনের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রশিদ জানান, যে ছেলেটিকে চুরির অপবাদ দেয়া হয়েছে তার কাছ থেকে নয়, বরং শালীসকারী মনিমোহন বাড়ৈর ছেলের কাছ থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়েছে।এ বিষয়ে গত ১মে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রের পিতা উপানন্দ বৈদ্য থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলেও তিনি জানান।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে একজনকে জরিমানা করা হয়েছিল, অতপর মোবাইলটি অন্য একজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী যুবকের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply