
টুঙ্গিপাড়া প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মাদক ব্যবসায়ী আটকের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে দুই গ্রাম পুলিশকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের জোয়ারিয়া এলাকায় এঘটনা ঘঠে। গত বুধবার রাতে এঘটনায় বিএনপি নেতাকে প্রধান আসামি করে যুবদল ও ছাত্রদল নেতা সহ ৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ৭ জনকে আসামি করে টুঙ্গিপাড়া থানায় মামলা করেন উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মোসলেম আলী।
আসামিরা হলেন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈ, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বাইন, হৃদয় তালুকদার ভোলা ও অয়ন বাইন।
মামলা ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকালে পাটগাতী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড ও ৩ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ কৃপা মন্ডল ও সুরজিত ঘরামী বিশেষ কাজে গোপালপুর যায়। ফেরার পথে তারা থানার এস.আই মোসলেম আলীকে জানায় জোয়ারিয়া এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট বেচাকেনা চলছে।তখন থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদক ব্যবসায়ী বিজন বিশ্বাসকে ১৪ পিস ইয়াবাসহ আটক করে। এসময় ঘটনাস্থলে থাকা অন্য তিনজন মাদক ব্যবসায়ী দৌড়ে পালিয়ে যায়। তখন আটক বিজনকে নিয়ে থানায় রওনা দিলে গ্রাম পুলিশ দু’জন পুলিশের পিছনে আসে।
কিছু দূর যাওয়ার পর বিএনপি নেতা জীবেশ বাড়ৈর নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক দুই গ্রাম পুলিশের গতিরোধ করে। তখন পুলিশকে মাদকের খবর দিয়ে বিজনকে কেন গ্রেপ্তার করাহলো এই বলে বকাঝকা ও গাছের ডাল দিয়ে পেটাতে শুরু করে। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন উপস্থিত হলে গ্রাম পুলিশ দু’জনকে হত্যার হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়। ঘটনার পর থেকে গ্রাম পুলিশ কৃপা ও সুরজিত টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আর আটক মাদক ব্যবসায়ী বিজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে আলাদা ভাবে মামলা করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আহত দুই গ্রাম পুলিশ কৃপা ও সুরজিত বলেন, পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী বিজনকে আটক করে থানায় রওনা দেয়। আমরা পুলিশের পিছনে গেলে হঠাৎ বিএনপি নেতা কিছু লোকজন নিয়ে আমাদের গতিরোধ করে। তারপর বিজনকে কেন পুলিশে ধরিয়ে দিলাম বলে বকাঝকা ও পেটানো শুরু করে। আমরা তাদের বিচার চাই।
এবিষয়ে গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈ গ্রাম পুলিশদের পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গ্রাম পুলিশ দু’জন পাটগাতী থেকে এসে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বিজন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। তখন তাদের পরিচয় জানার পর সাথে থাকা লোকজন কিছু বকা দিয়েছে কিন্তু তাদের পেটানো হয়নি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুই গ্রাম পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় গত বুধবার রাতে একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং বাকীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে, এঘটনায় গোপালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জীবেশ বাড়ৈকে কারন দর্শানো নোটিশ দিয়েছে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপি। তাকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে জবাব দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION