
কালের খবরঃ
আর কিছু দিন পর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জের মন্ডপে মন্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। তাইতো প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পী ও আয়োজকরা। আর এরই মধ্যে শিল্পীদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণতা পাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এসব প্রতিমা। অনেক মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ হলেও অপেক্ষায় রয়েছে রঙের জন্য। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সিমিত পরিসরে পূজার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো পূজা মন্ডপের তালিকা অনুযায়ী গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় এবছর ১ হাজার ২৯৪টি মন্ডেপে শারদীয়া দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৫১টি,কাশিয়ানী উপজেলায় ২৩৬টি, কোটালীপাড়া উপজেলায় ৩২২টি, মুকসুদপুর উপজেলায় ২৯৩টি ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৯২টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে।এরপর ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর সপ্তমী, ১১ অক্টোবর অষ্টমী, ১২ অক্টোবর নবমী ও দশমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে।আর ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
প্রতিমা শিল্পী রাজিব সেন বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবছর ভিন্ন রকম পরিবেশ চলছে। এই কারনে আমরা সে ভাবে কাজ করতে পারছিনা। প্রথমে কাজ ছিলনা । এখণ কিছু কাজ হয়েছে। গতবছর ১০টা মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ করেছি আর এবছর ৬টা করছি।
তিনি আরও বলেন,গত বারের তুলনায় মজুরি অর্ধেকে নেমেছে। আদি পেশা টিকিয়ে রাখতেই কাজ করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সব প্রতিমা গড়ার লক্ষ্যে কর্মব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি আমরা।।
সাম্প্রদায়ীক সম্প্রতির এ জেলায় সব ধর্ম-বর্নের মানুষের সহযোগীতায় এবছর অনাড়ম্বর ভাবে দুর্গোৎসব পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ বাজার যুব সংঘের সভাপতি দিলীপ কুমার সাহা। তিনি তার বক্তব্যে বলেন,প্রতিবছর মতো এবছরও দুর্গা পূজা উপলক্ষে বড় কিছু করার ইচ্ছা ছিল।কিন্তু বাস্তবতার নিরিক্ষে তা করা সম্ভব হচ্ছে না।গত ৫ আগস্টের পর দেশ ব্যাপী সংখ্যালঘুদের উপর অন্যায় অত্যারচ করা হয়েছে তার কারনে মানুষের মনে তেমন একটা শান্তি না থাকায় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে পুজা করবো।
গোপালগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মৃনাল কান্তি রায় চৌধূরী পপা বলেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা পূজা অর্চনা পালন করবো। স্থানীয় ভাবে আমরা পূজার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।বাংলাদেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতে অন্তরবর্তি সরকার সংখ্যালঘুদের এই উৎসবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে বলে আমি আশা করি। এবং মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নিজস্ব পাহারার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য জোর দিতে বলা হয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে মা দুর্গা যেন সকলের সহায় হন।দেশে শান্তি ফিরে আসে সেই প্রার্থণা আমাদের।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ইতিমধ্যে আমরা পূজা মন্ডপের তালিকা ঢাকায় প্রেরণ করেছি। এছাড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আসন্ন শারদীয়া দুর্গোৎসবকে আমরা উৎসব মুখর ভাবে পালন করতে চাই । এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে সব ধর্মের মানুষের প্রতি আন্তরিক ভাবে কাজ করা অনুরোধ করেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী রবিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দদের সাথে সভা করা হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিত্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।নিরাপত্তার জন্য মন্ডপে-মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। সব মন্ডপে পুলিশ আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন হবে বলে আশাব্যক্ত করেন।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION