কাশিয়ানী প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মা ও মেয়েসহ ৬ জন নিহত ও অন্তঃত ২৪ জন আহত হয়েছে।আজ রবিবার (১সেপ্টেম্বর) ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতি বাসস্ট্যান্ডের পূর্বপাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলা হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। দ্রুতগতি ও ঘুম ঘুম চোখে গাড়ী চালানোর কারনে এ দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী প্রশাসন ও স্থানীয়দের।গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুল কবির চন্দন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ৬ জন হলেন, খুলনা সদরের টুটপাড়ার আবু হাসানের স্ত্রী তহুরা বেগম (৫৫) ও তার মেয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ইতালী প্রবাসী আসলাম উদ্দিন কুদ্দুস এর স্ত্রী তানিয়া আফরোজ (২৮)। অপর নিহতরা হলো গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশাহী গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে রহিচ শেখ (২৪), সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাতালী গ্রামের সৈয়দ এরশাদ আলীর ছেলে সৈয়দ মামশাদ আলী (৩১), বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার টাউন নওয়াপাড়া গ্রামের আ. সামাদ গাজীর ছেলে সাইদুর রহমান (৪৪), একই জেলার মোল্লাহাট উপজেলার সারুলিয়া গ্রামের মো. হাছির মোল্যার ছেলে মো. সাগর মোল্যা (২৪)। এর মধ্যে ৫জন ঘটনাস্থলে ও একজন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার উপ-পরিদর্শক মো. সেলিম মিয়া জানান, রবিবার ভোর পোৗনে ৫টায় খুলনার ফুলতলা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস ৪১ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। এসময় বাসটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়নী উপজেলার মাঝিগাতিতে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে বাস ও ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এসময় বাসটি সড়কের পাশের দুইটি গাছ ভেঙ্গে রাস্তার খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে বাসের এক নারীসহ ৫ যাত্রী নিহত ও ২৫ যাত্রী আহত হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে। মারাত্মক আহত ১৭ জনকে খুলনা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো এক নারী মারা যায়।
দূর্ঘটনার পরপরই প্রায় দেড়ঘন্টা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে মহাসড়কের দুই পাশে বেশ কিছু যানবাহন আটকা পড়লে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা। পরে পুলিশ দূর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাকটি সরিয়ে নিলে যান চলাচলা স্বাভাবিক হয়।
নিহত তহুরা বেগমের জামাতা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, আমার স্ত্রীর বড়বোন তানিয়ার স্বামী ইতালী প্রবাসী। সে স্বামীর কাছে যাওয়ার জন্য ইতালীয়ান ভিসার কাজে তার মাকে নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। পথিমধ্যে এই দুঘটনায় মা ও মেয়ের প্রাণ চলে গেল।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ করেই প্রকট শব্দ পেয়ে আমরা দ্রুত ছুট যাই। গিয়ে দেখি বাসটি মহাসড়কের পাশে গাছের মধ্যে ঢুকে দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। দ্রুতগতি ও ঘুম ঘুম চোখে গাড়ী চালানোর কারনে এ দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে তারা মনে করেন।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি আবু সাঈদ মো. খায়রুল আনাম বলেন,যেহেতু বাসটি খুলনা থেকে ভোর পৌনে পাঁচটায় ছেড়ে এসেছে তাই চালকের ঘুম আসতে পারে। এছাড়া বাসের গতি অতিরিক্ত ছিল বলে ধারনা করা হচ্ছে। এই কারনে দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।
গোপালগঞ্জর কাশিয়ানী ১০০-শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার গোলাম মোস্তফা বলেন, দূর্ঘটনার পরপরই হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে ৫জন মারা যায়। বাকী আহতদের কাশিয়ানীসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মরহেদের ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে পর স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply