
কালের খবরঃ
হার্টের অসুখের বিষয়ে সচেতনতা যতটা বৃদ্ধি পেয়েছে, তার চেয়েও বেশি জরুরি বিষয় হলো এর পেছনের নিরব বিপদগুলো জানা। বয়সের সাথে হার্টের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, তবে বয়স কিংবা শারীরিক অবস্থা নির্বিশেষে এই রোগ সবার জন্যই বিপজ্জনক। কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, এবং ধমনী ব্লকেজের মতো ঝুঁকিগুলোর পাশাপাশি, আরও একটি বিপদ আছে। উচ্চ পটাশিয়াম বা হাইপারক্যালেমিয়া। এটি হার্টের জন্য এক শত্রু, যা শারীরিকভাবে নীরবভাবে ক্ষতি করে।
পটাশিয়াম কি এবং এর ভূমিকাঃ
পটাশিয়াম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা হৃদযন্ত্রের বৈদ্যুতিন কার্যক্রম বজায় রাখতে সহায়ক। পটাশিয়ামের সঠিক মাত্রা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখতে এবং শরীরের সেলের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু, যদি এর মাত্রা বেড়ে যায়, তবে এটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধির কারণঃ
বিশেষজ্ঞদের মতে, অধিকাংশ মানুষ নিয়মিত কলা, আলু এবং অন্যান্য পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে থাকেন। তবে, যদি কারো কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তাহলে এই ধরনের খাবার শরীরে অতিরিক্ত পটাশিয়াম জমা করতে পারে। যা বিপদজনক হতে পারে। কিডনি যদি ঠিকমতো কাজ না করে, তবে অতিরিক্ত পটাশিয়াম শরীর থেকে বের হয়ে যেতে পারে না এবং এটি হৃদযন্ত্রে বিপত্তি সৃষ্টি করতে পারে।
কোন ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকিতে?
কিডনি রোগী (বিশেষ করে ডায়াবেটিসজনিত কিডনি সমস্যা), উচ্চ রক্তচাপের রোগী, রক্ত পাতলা করার ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারকারী ব্যক্তিরা।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের তালিকাঃ
কলা, কমলালেবু, আপেল, অ্যাভোকাডো, শাকসবজি (পালং শাক, কুমড়া, বেগুন, শসা),আলু, মিষ্টি আলু, গাজর,ডাল, শিম, শুঁটি জাতীয় খাবার,এপ্রিকট এবং অন্যান্য শুকনো ফল।
করণীয়ঃ
পটাশিয়াম সাপ্লিমেন্ট স্বেচ্ছায় গ্রহণ করবেন না। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করে পটাশিয়ামের মাত্রা জেনে নেয়া উচিত, বিশেষত যাদের কিডনি বা হৃদরোগের সমস্যা থাকে। ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া ডায়েট থেকে কোনো উপাদান বাদ দেবেন না। তবে, সচেতন থাকা উচিত।পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ এবং রেগুলার ডায়েট সম্পর্কে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
উপসংহারঃ
হাইপারক্যালেমিয়া, যদিও অনেকের কাছে অপরিচিত, কিন্তু এটি হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। একে “নীরব ঘাতক” বলা যায়, কারণ এর প্রভাব বুঝতে না পারলে পরিণতি হতে পারে মারাত্মক। তাই, কোলেস্টেরল ও অন্যান্য ঝুঁকি ফ্যাক্টরের পাশাপাশি পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়েও সচেতন থাকা উচিত, বিশেষত যাদের হৃদরোগ বা কিডনি সমস্যা রয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION