কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
সরকারি বিধি মোতাবেক ১৮ বছর বয়সের প্রার্থীদের চাকরীতে নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও বিধি ভঙ্গ করে ১৭ বছরের এক কিশোরকে চাকুরীতে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে চাকুরী বঞ্চিত একাধিক প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ভেন্নাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে এই সরকারি চাকুরীর বিধি ভঙ্গ করে নিয়োগ দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে।
জানাগেছে, মঙ্গলবার (১৪নভেম্বর) ভেন্নাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ৩জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে নয়ন বল্লভ নামে ১৭ বছরের এক কিশোরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নয়ন বল্লভকে নিয়োগ দেওয়ার পর নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদের কাছে লিখিত ভাবে জানায়।
নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থী প্রদীপ বালা বলেন, আমি অফিস সহায়ক পদে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু ঘুষ না দিতে পারায় যোগ্যতা থাকা সত্যেও আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ৩টি পদেই প্রধান শিক্ষক গবিন্দ চন্দ্র বাড়ৈ সভাপতি দিলীপ কুমার গাইনসহ নিয়োগ কমিটির সদস্যরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের নিয়োগ দিয়েছেন। নিয়োগ পাওয়া এই ৩ প্রার্থীর মধ্যে নয়ন বল্লভের বয়স ১৭ বছর।আমরা অবৈধ এই নিয়োগ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য অমল চন্দ্র বসুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কাকে কাকে কোন কোন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাহা আমার জানা নেই। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গবিন্দ চন্দ্র বাড়ৈ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরে আলম সিদ্দিক আমাকে যেখানে যেখানে স্বাক্ষর করতে বলেছেন আমি সেই সেই জায়গায় স্বাক্ষর করেছি।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক গবিন্দ চন্দ্র বাড়ৈ বলেন, নিয়োগ দেওয়ার আগে নয়ন বল্লভের বয়সের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। নিয়োগের পরে আমরা জানতে পারলাম নয়ন বল্লভের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হতে কয়েক মাস বাকি আছে। আমরা ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর নয়ন বল্লভকে অফিসিয়াল ভাবে যোগদান করাবো। এই নিয়োগে ঘুষ গ্রহণের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে নাম প্রকাশ না করা শর্তে উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, বর্তমানে যিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আছেন তাকে টাকা না দিয়ে কোন বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। আমরা কোন কাজে তার কাছে গেলে অফিসে ঢুকতেও টাকা দিতে হয়, আবার বের হতেও টাকা দিতে হয়। বর্তমানে উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসটি ঘুষ বানিজ্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বা কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষার আগে তাকে মোট অংকের ঘুষ দিতে হয়।
অভিযুক্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সিদ্দিক নুর আলম ঘুষ গ্রহণের কথা অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় যারা যারা আবেদন করে আমরা তাদের সকলকে তো আর চাকুরী দিতে পারবো না। যারা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয় তারাই ঘুষ গ্রহণের কথা তুলে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দায়ের করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, এ বিষয়ে আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply