দেশীয় বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান করছেন শিল্পী অজিৎ হালদার
কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
হারমোনিয়ম,দোতরা,বেহালা, তবলা,খোল,সারিন্দাসহ গানের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র তৈরী করে চলেছেন সত্তর বছর বয়সী অজিৎ হালদারের সংসার। প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি এই পেশার সাথে জড়িত।এই ৪০ বছর ধরেই তিনি গতানুগতিক বাদ্যযন্ত্রের বাহিরে গিয়ে নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। দীর্ঘদিন পরে হলেও তিনি তার এই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে পেরেছেন। তৈরী করেছেন সঙ্গীতের নতুন বাদ্যযন্ত্র ‘মনতুরা’।
অজিৎ হালদারের তৈরী এই নতুন বাদ্যযন্ত্র ‘মনতুরা’ ইতোমধ্যে এলাকার সঙ্গীতাঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে।শুধু গোপালগঞ্জ জেলায়ই নয়, এর আশপাশের এলাকার বাউল ঘরানার শিল্পীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই মনতুরা। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ২শত জনের কাছে এই বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করেছেন বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন।
অজিৎ হালদার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কালীগঞ্জ বাজারে দুলালী মিউজিক মার্ট নামে একটি ছোট প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।এখানে বসেই বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র তিনি তৈরী ও বিক্রি করেন।
কালিগঞ্জ বাজারের পাশেই বুরুয়া গ্রামে অজিৎ হালদারের জন্ম। তার পিতার নাম জগদীশ হালদার।তিনি শুধু বাদ্যযন্ত্র তৈরীই করেন না, বিভিন্ন সঙ্গীত প্রেমিদের গান এবং বাদ্যযন্ত্র শিক্ষাও দিয়ে থাকেন।
মৃত্যুর পরে তার কাছে শিক্ষা গ্রহন করা সঙ্গীত বা বাদ্যযন্ত্রের ছাত্র-ছাত্রী এবং বাদ্যযন্ত্র মনতুরার মাঝে বেঁচে থাকতে চান অজিৎ হালদার।তিনি বলেছেন, বর্তমান সময়ে সমাজের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধরে রাখতে সঙ্গীতের কোন বিকল্প নাই। তাই সরকারের উচিৎ সঙ্গীতাঙ্গনে বেশী করে দৃষ্টি দেওয়া।
অজিৎ হালদার তাঁর তৈরী মনতুরা সম্পর্কে বলেন, এটি হচ্ছে দোতরার একটি আধুনিক রুপ। এটি তৈরীর পর আমি দেশের অনেক বড় বড় শিল্পীদের কাছে এর নাম কি দেওয়া যায়, এ বিষয়ে পারামর্শ নিয়েছি। এরপর এটির নাম দিয়েছি মনতুরা। মনতুরা এক সময় দেশের সকল সঙ্গীত প্রেমিদের মনে ঝড় তুলবে।
গীতিকার ও সঙ্গীত শিল্পী সুশান্ত বর্ণিক বলেন, আমি শ্রদ্ধেয় অজিৎ হালদারের কাছ থেকে গান ও বাদযন্ত্র বাজানো শিখেছি। তার তৈরী মনতুরা বাদ্যটি আমাদের সকলের মন কেড়ে নিয়েছি।আমি এখন মনতুরা বাজিয়ে গান গাই।
মনতুরা একটি সুন্দর বাদ্যযন্ত্র বলে জানিয়েছেন কোটালীপাড়া শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষক দিলীপ ভাবুক। তিনি বলেন, সকল ধরনের গানেই মনতুরা ব্যবহার করা যায়। তবে বাউল ঘরানার গানে এটি বেশী ব্যবহৃত হবে বলে আমি মনে করি। ইতোমধ্যে আমরা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে এই মনতুরা বাজিয়ে গান শিক্ষা দেওয়া শুরু করেছি। আমরা চাই সারা দেশে এই বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার শুরু হোক
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply