বক্তব্য রাখছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন
টুঙ্গিপাড়া প্রতিনিধিঃ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন,নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, তাহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র সংকটের মধ্যে পড়ে যাবে। নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হবে । কোন কোন রাজনৈতিক দল আনুপাতিক হারে নির্বাচন চাচ্ছে। নারী আসনে সরাসরি ভোটের কখা বলছেন। তাদের মাথায় কি আছে! আমি জানি না আল্লাহ জানেন। তারা পুরো পরিস্থিতি নিয়ে হ-য-ব-র-ল করার তালে আছে। তারা নির্বাচন বিলম্বিত করা ষড়যন্ত্র করছে । কারণ অনেক রাজনৈতিক দলের ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার লোক নেই।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর আজ সোমবার (৩০জুন) বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পৌর বাস টার্মিনাল মাঠে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ সালাহউদ্দিন আহম্মেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ফরিদপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী। বিশেষ বক্তার বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. কাজী আবুল খায়ের।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান বাবলু, যুগ্ম আহবায়ক মাহবুবুর রহমান নাসির, পৌর বিএনপির (ভারপ্রাপ্ত) আহবায়ক সুশান্ত সরকার, সদস্য সচিব এমদাদ মোল্লা প্রমূখ ।
ড. আসাদুজ্জামান রিপন আরো বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত নানা ভাবে দুর্বল করার জন্য সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করছে। ইতমধ্যে সীমান্ত দিয়ে পণ্য আমদানী রফতানী করতে না পরে সেজন্য বাঁধা সৃষ্টি করছে। কারণ বাংলাদেশের সব দিয়ে দেওয়ার মতো বন্ধু রাষ্ট্র আর নেই। শেখ হাসিনা এক সময় বলতেন, ভারতকে এতকিছু দিয়েছি ভারত সারা জীবন মনে রাখবে। সারা জীবন মনে রাখার কারণে শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। ভারত এখন আমাদের কাছে যা চায়, তা পায়না বলে এই বাংলাদেশের মানুষকে শাস্তি দেওয়ার জন্য, বাংলাদেশের মানুষকে অশান্ত রাখার জন্য একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। ভারত সরকারকে বলতে চাই আপনারা কি এখন আওয়ামী লীগ বান্ধব প্রতিবেশী থাকবেন, নাকি জনগন বান্ধব প্রতিবেশী হবেন। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত এখন বন্ধুহীন দেশ হয়ে পড়েছে। তাদের এখন আর প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র নেই। বাংলাদেশের সাথে ভারত একেবারে শত্রুতা সৃষ্টি করছে।
তাই বর্তমান অন্তর্বতী সরকারকে আহবান জানাবো , আমদের পররাষ্ট্র নীতি নতজানু হওয়ার কোন কারণ নেই। ভারত যদি আমাদের আমদানী-রফতানী বন্ধ করে দেয়, তা হলে আমাদেরও উচিৎ হবে ভারত থেকে যে সমস্ত পন্য আমরা আমাদানী করি সেটা বন্ধ করলে অসুবিধা নেই। আমাদের দেশের মানুষ সংগ্রাম করে বেঁচে থাকবে। ভারত যদি আমদানী-রফতানী বন্ধ করে দেয়, আমরা বাংলাদেশের মানুষ সাবলম্বী হয়ে বাঁচব। ভারতের অন্যায় আবদারের কাছে আমরা মাথানত করবো না। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাংলাদেশের মানুষ পছন্দ করেন না। কারণ ভারত বাংলাদেশের জনগনের বিরুদ্ধে যে সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সরকারকে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আহবান জানাচ্ছি।
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ অন্তবর্তীকালীন সকারের সমালোচনা বলে বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই করেছি। এখনও লাড়াই শেষ হয়নি। অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইউনূস একটা ইমার্জেন্সী সময়ে দায়িত্ব নিয়েছে। এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের এক বছর হয়ে যাচ্ছে। তাদের কথাবার্তা শেষ হচ্ছেনা। তাদের সংস্কার কমিশনের কাজও শেষ হচ্ছেনা। প্রত্যেকদিন বৈঠক করে যাচ্ছে।
তিনি দেশের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে আরো বলেন, আমাদের ছাত্র উপদেষ্টা যখন বিদেশে যায় তখন তার ব্যাগে অস্ত্র ম্যাগাজিন পাওয়া যায়। উনি বলেছেন। সাফাই গেছেন, এই অস্ত্র ম্যাগাজিন তার এবং তার পরিবারের সুরক্ষার জন্য নাকি রেখেছেন। তাহলে যখন আমরা ফ্যাসীবাদ মুক্ত বাংলাদেশে একটি আইনের শাসন চাই। যখন আমরা পুলিশের উপর ভরশা রাখতে চাই । এই সময়ে যদি একজন উদেষ্টার ব্যাগে অস্ত্র রাখতে হয় তাহলে আমারা যারা সাধারণ জনগণ তারা কোথায় আছি।
১৭ বছর পর এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়ায় সাজসাজ রব বিরাজ করছিলো। বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ করা হয় তোরণ। বৃষ্টি উপেক্ষা করে উৎসবের আমেজে হাজার-হাজার নেতা-কর্মী এ সম্মেলনে অংশ নেয়। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা পরিবেশন করা হয়।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply