কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জে মধুমতি নদীর ভাঙ্গনের ফলে বাড়ীঘর ফসলি জমি হারিয়ে স্বর্বশান্ত হয়েছে অনেকে। স্থানান্তরিত হতে হয়েছে অনেক পরিবারকে। এসব ক্ষতি বিবেচনা করে ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২শ’ মিটার তীব্র ভাঙ্গন এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেছে গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর এই বাঁধ হওয়ায় আশার আলো দেখছেন নদী পাড়ের অনেক পরিবার। তবে আরো ৩শ’ মিটার এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজ করার দাবী স্থানীয়দের। বরাদ্দ পেলে বাকী অংশেও কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে,গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদাহ এলাকায় মধুমতি নদীর ভাঙ্গনের চিত্র বহু পুরনো।কয়েক বছর আগে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় বাড়িঘর, ফসলী জমি, গাছপালা,মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, স্কুল, খেলার মাঠ ও পাকা রাস্তা। স্বর্বশান্ত হয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করতে হয়েছে অনেক পরিবারকে। এসব বিবেচনায় নিয়ে ওই এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ১২শ’ মিটার এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।নদীতে তীব্র স্রোত থাকলেও জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলে ভাঙ্গন ঠেকিয়ে নদীর তীর ব্লক দিয়ে বাঁধাই করে প্রতিরক্ষা কাজ শুরু করা হয়।এ প্রতিরক্ষা কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফলে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পেতে যাচ্ছে বাড়িঘর, ফসলী জমি, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, স্কুল, খেলার মাঠ ও পাকা রাস্তা এবং একটি আশ্রয়ন প্রকল্প সহ বহু স্থাপনা। নিশ্চিন্তে রাত কাটাতে পারবে নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
মানিকদাহ গ্রামের ইনসান মোল্রা ও চরমানিকদাহ গ্রামের রহমত খান জানান, বাঁধ নির্মাণ করায় আমরা খুব খুশী। এখন একটা নিশ্চয়তা হলো। পরিবার পরিজন নিয়ে পৈত্রিক ভিটায় বসবাস করতে পারবো। বর্তমানে ভাঙ্গনের আশঙ্কা নেই বললেই চলে। আরো প্রায় ৩শ মিটার জায়গা আছে সেটাও যদি সরকার বাঁধ করে দিত তাহলে আমাদের পুরোপুরি একটা ভরসা হতো।
একই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দা রিপন শিরালী বলেন, মধুমতি নদীর পাড় ভাঙ্গনের কারনে গতিপথও পরিবর্তন হয়েছে। নদীর পশ্চিম তীর আরো প্রায় আধা কিলোমিটার পশ্চিমে ছিল। বর্তমানে যেখানে নদী বহমান সেখানটা আমাদের জমি। এই ফসলী জমি নদীতে চলে যাওয়ায় আমাদের ক্ষতি হয়েছে। এখন বাঁধ হওয়াতে সুবিধা হলো। নদীর পূর্ব পাড়ের জমি মালিকরা সামান্য হলেও চিন্তা মুক্ত । এছাড়া সরকারি ভাবে ঘাটলা তৈরী করে দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর গোসল করতে খুব সুবিধা হবে।
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাজী হায়াৎ মাসুদ জানান, প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করায় এ এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে, নিশ্চিন্তে নিরাপদে মানুষ চাষাবাদ করতে পারে।আগের মতো ফসল উৎপাদন হবে।
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম.রেফাত জামিল জানান, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে মানিকদাহে মধুমতি নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় দুটি প্যাকেজে ৬শ’ মিটার করে ১২শ’ মিটার প্রতিরক্ষা কাজ শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।তবে পুরোপুরি নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে আরো ৩’শ মিটার এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজ করার দাবী স্থানীয়দের।বরাদ্দ পেলে বাকী ৩শ’ মিটার এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজ করলে ভাঙ্গন থেকে আপাতত রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন এই নির্বাহী প্রকৌশলী।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply