মুকসুদপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ও আহত ছাত্রদের বাড়িতে মৌসুমী ফল বিতরণ শেষে ফেরার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ছাগলছিড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় রচপ্রসন্নদি গ্রামের আজিজ শেখের ছেলে সাগর শেখকে আটক করেছে মুকসুদপুর থানা পলিশ।
ছাত্র নেতাদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন দুজন। তারা হলেন , মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর ইসলাম (২৩) ও কিরণ আক্তার (২৬)। এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ, আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম, মিথিলা ফারজানা মরধরের শিকার হন। আহতরা মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাজৈর উপজেলাধীন জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ও আহত পরিবারের ৫ জনের পরিবারের সঙ্গে আমরা ঈদ উপলক্ষে সাক্ষাৎ ও মৌসুমি ফলমূল বিতরণ করে ফিরছিলাম। ফেরার পথে আমরা একটি রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়ালে মিজান পরিবহনের কয়েকজন আমাদের দেখে কটুক্তিমূলক কথা বলে। এরই প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের কয়েকজন সদস্যদের সঙ্গে মিজান পরিবহন গাড়ির স্টাফদের কথা কাটাকাটি হয়। এরপরেই পরিবহনের স্টাফ ও রেস্টুরেন্টে কর্মীরা একত্রিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা নারী সদস্যরাও হামলাকারীদের হাতে মারধরের শিকার হই। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের একটি দল জুলাই আন্দোলনের সময় নিহত ও আহত ছাত্রদের বাড়িতে মৌসুমী বিতরণ করে গাড়িতে করে মাদারীপুর শহরে ফিরছিলেন। তাদের বহনকারী একটি পিকআপভ্যান রাজৈর উপজেলার সীমান্তবর্তী গোপালগঞ্জ জেলাধীন ছাগলছিড়া এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে বিরতি জন্য থামান। এ সময় মিজান পরিবহনের কর্মীদের ছাত্রদের ভ্যান দেখে কটুক্তিমূলক মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদ করতে ওই বাসে ওঠেন কয়েকজন ছাত্র। এরপরেই বাসের কর্মীদের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়। এরই জেরে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বাসের শ্রমিক ও বরিশাল গেট হোটেলের কর্মীরা মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। পরে সাধারণ জনগণ এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ সম্পর্কে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার অখিল সরকার বলেন, দুজন ছাত্র নেতা গুরতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আরও কয়েকজন মারধরের শিকার হয়েছে। সবাই শঙ্কামুক্ত বলে জানান তিনি।
মুকসুদপুরের সিন্ধিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোঃ আলমগীর হোসেন ও মুকসুদপুর খানার ওসি মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চরপ্রসন্নদি গ্রামের আজিজ সেখ ছেলে সাগর সেখ নামে একজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মুকসুদপুর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা অভিযোগ দিলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply