
কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জে এ্লজিইডির বেশ কয়েকটি কাজের দুর্নীতি ও অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাড়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তা এইচবিবি থেকে উন্নিত করে কার্পেটিং ও কোটালীপাড়ায় মাটির রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযানে নামে দুদক। আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এলজিইডির কাশিয়ানী উপজেলা প্রকৌশল অফিস ও কোটালীপাড়া অফিসের কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শন নামে গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের দুদক কর্মকর্তাগণ। এই দুইটি কাজ সাবেক আওয়ামীলীগ সরকারের বিশেষ বরাদ্দে গোপালগঞ্জ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত বরছে এলজিইডি ।
দুদক গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ মশিউর রহমান জানিয়েছেন,জেলার কাশিয়ানী উপজেলার সিংগা হাই স্কুল হতে রামদিয়া পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তা দুইটি অংশে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে ৩ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার রাস্তা বাবদ ৪ কোটি ৯৫ লক্ষ ৪৩ হাজার ৬৩০ টাকা পরিশোধ করা হয়। অপর অংশ ৩ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ৫ কোটি ২২লক্ষ ২৫ হাজার ৫৫৬টাকার বিলের মধ্যে ৩কোটি ৪৮ লক্ষ ৩৭ হাজার ৯৬৩টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এই রাস্তার কার্পেটিং এর পুরুত্ব সরেজমিনে কম পাওয়া গেছে। রাস্তার কিছু অংশ ভেঙ্গে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং বাকের মুখে গর্ত হওয়ায় দুর্ঘনার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কয়েকটি ব্রীজের এপ্রোচে ব্রিজের সাথে রাস্তার সংযোগে উচু নিচু থাকায় চলাচলে গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তাটির দুই পাশে অনেক জায়গায় মাটি না থাকায় ভেঙ্গে গেছে ও ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে।

এছাড়া বিচারপতি খিজির হায়াৎ চৌধুরীর বাবার ব্যক্তিগত বাড়িতে যাওয়ার জন্য ৬৫ মিটার রাস্তা নির্মাণ করে ৮ লক্ষ ৫৮হাজার ৭৫৬.২৫ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
এমনিতে ঠিকাদার রাস্তার মান খারাপ করেছে। আবার ওই রাস্তার পাশে অবস্থিত বিচারপতি খিজির হায়াৎ এর বাসভবনের সামনে প্রায় ৬৫ মিটার রাস্তা সরকারী টাকায় করে দেন মর্মে দেখা গেছে। সাবেক বিচারপতি খিজির হায়াৎ চৌধুরী ঠিকাদার ও এলজিইডি অফিসের সাথে যোগসাজশ করে গরীব জনগণের ট্যাক্সের টাকায় নিজ বাড়ীর সামনে রাস্তা করিয়ে নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়।
অপর দিকে একই প্রকল্পের আওতায় কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের মান্দ্রা খেয়াঘাট টু বাপার্ড পর্যন্ত ৬.০৬৫ কিলোমিটার মাটির রাস্তা তৈরীতে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমান পেয়েছে দুদক।পরিদর্শনকালে মাটির কাজের উপর হেরিং বন্ড( ইটের সলিং) কাজ এর প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে দেখা যায়। কাজটি চলমান রয়েছে।দুদকের এই কর্মকর্তা জানিয়েছে ২ কোটি ১৩লক্ষ ৪১ হাজার ৮৮০টাকা ব্যায়ে এলজিইডি রাস্তাটি পিআইসি কমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের ৭৩ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে কমিটির সভাপতি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরীকে ১ কোটি ৮২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৮৫১ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ দীর্ঘ দুই বছরে সম্পন্ন না হওয়ায় গ্রামবাসীর চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।রাস্তার পাশের বাড়ি থেকে রাস্তার উচ্চতা বেশি করলে এবং বাড়ি থেকে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা রাখা হলে রাস্তাটি সুদৃঢ় হতো বলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকৌশলীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেয় হয়।

রাস্তার নির্মাণ কাজের পিআইসি ও কুশলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরী রাস্তার প্রস্থতা ও উচ্চতার প্রশ্নে বলেন, বিগত একবছর আগে রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।সেখানে এইচবিবি রাস্তা হয়েছে। মানুষের হাটাচলায় রাস্তা কিছুটা দেবে গেছে আর বৃষ্টি বর্ষার কারনে দুইপাশের মাটি নেমে গেছে।যেটুকু কাজ শেষ হয়েছে অফিস আমাকে সেই পরিমান বিল পরিশোধ করেছে। আমি অতিরিক্ত কোন বিল উত্তোলন করিনি।
এলজিইডির কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সফিউল আজম বলেন,প্রকল্পের কাজ যেটুকু শেষ হয়েছে সেইটুকু বুঝে নিয়ে বিল দেয়া হয়েছে।বাকী কাজ সম্পন্ন হলে যাচাই বাছাই করে বিল পরিশোধ করা হবে।তবে উচ্চতা ও প্রস্থতা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা সঠিকনা একবছর আগের কাজ কিছুটা দেবে যাবে বা পাশের রাস্তা বৃষ্টির কারনে নেমে যাবে এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার।
এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ এলজিইডি-র নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক জানান, বিচারপ্রতির বাড়ীর রাস্তার কাজটি সরকারি সরকারি নির্দেশনা মেনে করা হয়েছে। অামরা কাজটি বাস্তবায়ণ করেছি মাত্র। অার কাশিয়ানী উপজেলার সিংগা হাই স্কুল হতে রামদিয়া পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তায় ফাইনাল বিল এখনও পরিশোধ করা হয়নি। রাস্তায় কোন সমস্যা হয়ে থাকলে সেগুলো অামরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দিয়ে ঠিক করে দিব।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION