
কালের খবরঃ
বিএনপি‘র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি ড. আসাদুজ্জামান রিপন খান বলেছেন, ১৬ বছর আমরা মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছি। বাংলাদেশে আমরা গনতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে চেয়েছিলাম। এখনও বিএনপি জনগনের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে চায়। তাই এই সরকারের উচিত হবে ধানাইপানাই বাদ দিয়ে নির্বাচন দেন।
আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি)দুপুর আড়াইটায় স্থানীয় পৌরপার্কের উনমুক্ত মঞ্চে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোন উপদেষ্টা যদি বলেন আগে স্থানীয় নির্বাচন হবে। তারপর জাতীয় নির্বাচন। আবার কোন কোন দল বলছে আগে শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের বিচার শেষ করে নির্বাচন করতে হবে। আওয়ামী লীগ কত বছরে জামায়াতের নেতাদের বিচার করে ফাঁসি দিয়েছে। তাতে ৫/১০ বছর সময় লেগেছে। তাহলে কি আমরা নির্বাচনের জন্য ৫ বছর ১০ বছর অপেক্ষা করবো। এমনিতেই তো আপনারা পারছেন না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাত ৩ টার সময় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। দেশে একটা নির্বাচিত সরকার না থাকার কারণে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সাধারনের নাগালের বাইরে চলে গেছে। চুরি, ডাকাতি আর রাহাজানি বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে যে সব ডিসি, এসপি ও ওসি রাতের ভোটে সহায়তা করেছে তাদের কেন এখনও পোষা হচ্ছে। তাদেরকে এখনো চাকরী থেকে বাদ দেয়া হয়নি। ভুত সরকারের মধ্যে রেখে কখনও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তাই ওই সব কর্মকর্তাদের চাকরী থেকে বাদ দিতে হবে। আমাদের একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হবে। একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাজনীতি হানাহানি মারামারি, শক্রুতা রাখা যাবে না। আমি বিশ্বাস করি যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে গোপালগঞ্জের মানুষ আর নৌকা মার্কায় ভোট দিবে না। কারণ অতীতে তারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন।

তিনি বলেন, নেতা যখন দেউলিয়া হয়ে যায়, জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন তাকে স্বৈরাচারী হতে হয়, জুলুমবাজ হতে হয়। আর এটা হচ্ছে ফ্যাসিবাদ। ফ্যাসিবাদ কারো গায়ে লেখা থাকে না। এই ধরনের চরিত্র যাদের থাকে তারা জনগনকে বিশ্বাস করেন। আর ৫ আগস্টে ফ্যাসিবাদীর পতন ঘটেছে। কিন্তু তাদের দোসররা নানা জায়গায় আছে।
প্রধান বক্তা জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেছেন, তারেক জিয়ার ৩১ দফা গোপালগঞ্জের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিতে হবে। গত ১৬ বছরে যত গুম হয়েছে খুন হয়েছে হাসিনার অর্ডারে হয়েছে। হাসিনার অর্ডারে গুলি করা হয়েছে। হাসিনার অর্ডারে আয়না ঘরে আটকে নির্যাতন করা হয়েছে। আজকে এর প্রত্যেকটা ঘটনার বিচার এ দেশের মাটিতে হতে হবে। গোপালগঞ্জের মাটি আমরা মনে করি ধানের শিষের ঘাটি। গোপালগঞ্জে যারা আওয়ামী লীগ করতো তারাও কিন্তু হালুয়া রুটির ভাগ পায়নি।
শামা ওবায়েদ বলেছে, ইউনুস সরকার ডেভিল হান্ট শুরু করেছে। গোপালগঞ্জে অনেক ডেভিল রয়েছে। তাই আমি গোপালগঞ্জ থেকে ডেভিল হান্ট শুরু করার জন্য বলবো। কারণ ৫ আগস্টের পরেও গোপালগঞ্জে আমাদের কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, বিএনপি কেন্দ্রীয নির্বাহী কমিটির সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন মিজবা।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি‘র আহবায়ক শরীফ রফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে সাবেক বিএনপি‘র জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এমএইচখান মঞ্জু, সাবেক জেলা বিএনপি‘র সভাপতি এএইচএম শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর, সাবেক জেলা বিএনপি‘র সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাবেক বিএনপি‘র সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান পিনু, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এম. তৌহিদুর রহমান তাজ, জেলা বিএনপি‘র সদস্য কেএম বাবর, জেলা যুবদলের সভাপতি শেখ রিয়াজ উদ্দিন লিপ্টন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মিকাইল হোসেন, সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এরআগে সকাল ১০ টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শুরু আগেই সমাবেশ স্থল কাণায় কাণায় পূর্ণ হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আসার পরও বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল সহকারে বিএনপির নেতাকর্মিরা সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হন।
                                Design & Developed By: JM IT SOLUTION