
কালের খবরঃ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়েখে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন,যদি ১৯৪৭ সালে আমরা ভারত থেকে পাকিস্তান থেকে আলাদা না হলে কেয়ামত পর্যন্ত আন্দোলন করেও আমরা আলাদা হতে পারতাম না।
এই ভূখণ্ড বারবার পরিবর্তন হয়েছে। সাড়ে ৭শ বছর যাবত মুসলমানরা এ ভুখন্ড শাসন করেছে। কিছু মোনাফেকের কারণে প্রায় ২০০ বছর ব্রিটিশরা এদেশ শাসন করে। ব্রিটিশ হটাও আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় মুসলমানরা। এক সময় মুসলমানরা ব্রিটিশ হটাও আন্দোলনকে ফরজে আইন বলে মনে করতো। তাই মুসলমানরা একত্রিত হয়ে ব্রিটিশ হটাও আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশ থেকে বিতাড়িত করে।
আমরা ভেবেছিলাম বৈষম্য দূর হবে। সমস্ত মানুষ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার এর মাধ্যমে স্বাধীনতা ভোগ করবে, মানুষ মুক্তি পাবে। কিন্তু আমরা কি দেখলাম ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমানদের সাথে বৈষম্য করছে, তাদের অধিকার দিচ্ছে না।আবার মুসলমানরা আন্দোলন শুরু করে। শেখ সাহেব ( শেখ মুজিবুর রহমান) পাকিস্তান পক্ষে আন্দোলন করেছিল। ১৯৪৭ সালে মুসলিম লীগের নেতৃত্বে ভারতবর্ষ থেকে পাকিস্তান নামের নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
শেখ সাহেব তার বইয়ের মধ্যে লিখে গেছেন মুসলমানদের জন্য আলাদা একটা ভূখণ্ড ব্যতীত আমাদের কোন মুক্তি নেই শান্তি নেই। ভারত থেকে আলাদা হওয়ার একটাই উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের মুক্তি ও শান্তির জন্য।
কিন্তু পাকিস্থান থেকে আলাদা হওয়ার পরে তারা আমাদের ভোটের মূল্যায়ন করতে পারেনি। তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ট আসন পেলেও আমাদের ভোটের অধিকার দিতে পারেনি। ফলে ১৯৭১ সালে এদেশের মুক্তিকামি মানুষের যার যা ছিলো তা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। বাংলাদেশ নামের একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
গতকাল শনিবার (১৫ ফেরুয়ারী) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গোপালগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে গন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম এ কথা বলেন। গোপালগঞ্জ পৌরপার্কে এ গন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মুহাম্মদ ফয়জুল করিম শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য বলেন ,২০১৪,২০১৮ ও ২০২৪ বিগত বছর গুলোতে আমিই আমার বক্তব্যে বলেছিলাম  আপনি যতই  উন্নয়নের মহাসড়কের গল্প শোনান না কেন, যেহেতু আপনি ভোটের মর্যাদা দিতে পারেননি, যেমনটি পাকিস্তানিরা করেছিল, আপনারও পাকিস্তানের মত পরিনতি  বরন করতে হবে।
সে তো ( শেখ হাসিনা) খোদা হয়ে সিংহাসনে আসীন হয়েছিলো। ভেবেছিলো দুনিয়ায় তাকে নড়াবার মতো কেউ নেই। সে বুজতে পারেনি তার চেয়ে বড় খোদা একজন আছে।
তিনি আরো বলেন, বরিশালে নির্বাচন করেছিলাম , রক্ত ঝরিয়েছে। মাত্র এক বছর আগে আল্লাহর কাছে বলেছিলাম, আল্লা এই জালেমের পতন নিজের চোখে দেখতে চাই। তখন বাংলাদেশের সকল ক্ষমতা শেখ হাসিনার কাছে। এক বছর যেতে না যেতে নিজের চোখে জালেমের পতন দেখেছি। আল্লাহ আমার ডাক কবুল করেছে।
বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে তিনি বলেন, আজ শেখ সাহেবকে অপমান করা হচ্ছে। এ দায় কার? শেখ হাসিনাকে এই দায় নিতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগের নেতারা হাজার হাজার মানুষকে গুন্ডা, চোর, ডাকাত, জালেম বানিয়েছে।
শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়েখে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম আরো বলেন, শেখ হাসিনা বলেছে তার পিয়ন ৫০০ কোটি টাকার মালিক। এই টাকা কি তার বাপের। দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের ভ্যাট- ট্যাক্সের টাকা দিয়ে তার পিয়ন ৫০০ কোটি টাকার মালিক হবে, আর মানুষ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে? তাতো হতে পারেনা।
বাবার মূর্তি বানানোর জন্য চার হাজার কোটি ও মুজিব বর্ষ উদযাপনের বামে জন্য ৪০০ কোটি টাকা ব্যায় করেছেন। যেদেশে মানুষ খেতে পারেনা, পড়তে পারেনা, চিকিৎসার জন্য ভালো একটা মেডিকেল নেই,রাস্ত- ব্রীজ ডিজাইন করার জন্য বিদেশ থেকে ইঞ্জিনিয়ার আনতে হয়। সেই দেশে মুর্তি ও মুজিব বর্ষ পালনের নামে এত টাকা ব্যায় করা হয় কিভাবে?
তিনি বিচার বিভাগ সম্পর্কে বলেন, এ বিচার বিভাগের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে সব আসামিরা খালাস পাবে স্বামী নয় তারা জেল খাটবে। এমন বিচার বিভাগ আমরা চাই না। আমরা চাই বিচার বিভাগের সাথে সরকারের কোন সম্পর্ক থাকবে না। আওয়ামী লীগ করার কারণে কাউকে আসামি করা না হোক। অন্যায় করার কারণে তাকে আসামি করা হোক ।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, মাত্র কয়েকটি পরিবারের হাতে বাংলাদেশের সকল টাকা। আমরা অর্থনৈতিক ভারসাম্য চাই। বাংলাদেশের কোন নাগরিক যদি বিদেশ যেতে চায় উন্নয়নে বিদেশ পাঠাতে হবে। তারা বিদেশ গিয়ে সরকারে অর্থ ফেরত দিবে। যারা গরীব কৃষক তারা সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ নিয়ে উৎপাদন করবে। উৎপাদনের পর সরকারের অর্থ ফেরত দিবে।
গোপালগঞ্জ জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা তসলিম হুসাইন সিকদারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ( ফরিদপুর বিভাগ) মোহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহীম শেখ। এছাড়াও গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলার বাগেরহাট,নড়াইল, পিরোজপুর মাদারীপুরেরননেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
                                Design & Developed By: JM IT SOLUTION