কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষকে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের তান্ডব উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি । এর সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারেরও দাবী জানানো হয়।
আজ রবিবার (১২ জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান। এসময় জেলা বিএনপির সদস্য ডাঃ কেএম বাবর, অ্যাডভোকেট এম ইমতেখার সেলিম,তৌফিকুল ইসলাম তৌফিক, জিয়াউল কবির বিপ্লব, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন,জেলা যুবদল সভাপতি রিয়াজউদ্দিন লিপটন, সাধারণ সম্পাদক রাশেকুজ্জামান পলাশ,পৌর বিএনপি সভাপতি শেখ হাচিবুর রহমান হাচিব, ছাত্রদল সভাপতি মোঃ মিকাইল হোসেনসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, গত শুক্রবার রাতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়নি। বরং পতিত সরকারের দোসররা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। কারন দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পতিত সরকারের দোসরদের দলে স্থান দেয়া যাবে না। উল্টো কেন্দ্রীয় বিএনপির সহআইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদিন মেজবাহ সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিগত ১৬ বছর আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রেখে সুযোগ সুবিধা নেয়া আহাজ্জাত মহসিন খিপুসহ দোসরদের দলে অনুপ্রবেশ করাচ্ছেন। সংঘর্ষের এ ঘটনাকে তথ্যগত ত্রুটি উল্লেখ করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবী জানান তারা। গোপালগঞ্জ বিএনপিতে কোন গ্রুপিং নেই বলেও দাবী করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে জেলা আইনজীবী কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
গত শুক্রবার মুকসুদপুর উপজেলা সদরে দফায় দফায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্ততঃ ২৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের পক্ষ থেকে মোট ১৮৭জনকে আসামী করে মুকসুদপুর থানায় অভিযোগ দুইটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি রয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীর নাম রয়েছে। গত শনিবার রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমের সমর্থক উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম খান বাদী হয়ে মুকসুদপুর থানায় ৫৩জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৮০/৮৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগে সাবেক মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহাজ্জাত মহসিন খিপুসহ মোট ১৩৮জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী ও দাঙ্গা হাঙ্গামা করে লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অপর অভিযোগটি করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ- আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ নজরুল আবেদীন মেসবাহ সমর্থক মোঃ হাবীব মোল্লা। এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০/৩০জন। এই মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম খান, সাধারণ সম্পাদক রাজু মুন্সীসহ মোট ৪৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে হামলা, ভাংচুর, ছিনতাই ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতির অভিযোগ করেছেন।
মুকসুদপুর থানার ওসি মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন দুই পক্ষেরই অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের সাথে তিনি বিস্তারিত কোন তথ্য দিতে রাজী হননি।
গোপালগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (মুকসুদপুর সার্কেল) মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, গত শনিবার বিকালে দুই পক্ষের মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এই মামলায় এখনও কোন গ্রেপ্তার বা আটক নাই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply