শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কোটালীপাড়ায় পরিত্যাক্ত ককটেল বিস্ফোরণে এক নারী আহত সংবাদ সম্মেলন করে মুকসুদপুরে তিন আওয়ামী লীগ নেতার গোপালগঞ্জে জলাবদ্ধতাসহিষ্ণু বিনা ধান-২৬ চাষাবাদ সম্প্রসারণে মাঠ দিবস ভূমধ্যসাগর ট্রাজেডি, মুকসুদপুরের দুই জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৬ জন মুকসুদপুরে ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী নিহত মুকসুদপুরে সংবাদ সম্মেলন করে চার আওয়ামী লীগ নেতার পদত্যাগ গোপালগঞ্জে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি নবাগত জেলা প্রশাসকের কোটালীপাড়ায় ককটেল হামলার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল গোপালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময় নির্মাণের ছয় বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি গোপালগঞ্জে ট্রমা সেন্টারটি

কৃষকের স্বপ্ন পানির নিচে

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২, ৬.৪১ পিএম
  • ৪১২ Time View

কালের খবরঃ

অসংখ্য বিলের মধ্যে গোপালগঞ্জের সবচেয়ে বড়  বিল হচ্ছে মুকসুদপুরের চান্দার বিল। এই বিলসহ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার সিংগা, পুইশুর, হাতিয়ারা, সদর উপজেলার মোল্লা বিল, চেচানিয়াকান্দি, রঘুনাথপুর,বোড়াশী বিলের হাজার হাজার একর বিঘা জমির বোরো ধান জোয়ারের পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে হাজারও কৃষকের স্বপ্নের ধান এখন পানিতে ভাসছে । রোদ বৃষ্টির কারনে জমির ধান গঁজিয়ে এখন চারা গাছে রুপান্তরিত হয়েছে। খরচ উঠবেনা বিধায়  অনেকেই জমি থেকে ধান কাটছেন না। ফলে কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানির গহিনে।  ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে আবার কেউ কেউ আধাপাঁকা ধান কেঁটে ঘরে তুলছেন। এদিকে জমির পাকা ধান কাটার জন্য পর্যাপ্ত কৃষক পাওয়া যাচ্ছে না। ফি বছর জোয়ারের পানি থেকে ফসল বাঁচাতে বিলের চারপাশে উঁচু বেড়ি বাঁধ আর প্রয়োজনীয় স্লুইসগেট নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন কৃষকরা।

গোপালগঞ্জ শহরতলীর চেচানিয়াকান্দি গ্রামের ষাটোউর্ব্ধ   সুবল ঢালী  বলেন,ছেলে পেলে নিয়ে কিভাবে খেয়ে বেঁচে থাকবো তাই বুঝে উঠতে পারছিনা। কি ভাবে বা চালাবো তাদের লেখাপড়া ও ভরন পোষন।  কোন দিক দিশা পাচ্ছিনা। আমাদের দিকে সরকার নজর না দিলে আমরা  বিপাকে পড়বো। গোপালগঞ্জ  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছেন,  চলতি বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জে ৮০ হাজার ৫২০হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ ধান ঝড়ে পড়ে যায়। পড়ে যাওয়া ধান থেকে কৃষকদের যত ক্ষতি হয়েছে। ঠিক তখনই চাপ হয় দক্ষিনের জোয়ারের পানির।  এই দুইটি দুর্যোগ এক হয়ে কিছু কিছু জমির ধান পানির নিচে তলিয়েগেছে।  পরে রোদ ও বৃষ্টির কারনে জমিতেই ধান গজিয়ে ওঠে। আর সেই সাথে যোগ  হয়েছে ধানকাটা কৃষকের সংকট। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরী করার  জন্য  সংশ্লিষ্ট ব্লকের কৃষি সহকারীদের  নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

খাটরা গ্রামের আজগার আলী হাওলাদার বলেন, সাত বিঘা জমি চাষ করেছি। সাত বিঘার মধ্যে সাড়ে তিনবিঘা পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। কৃষানের অভাব। এই ক্ষতি পোষানোর মতো আমাদের সংগতি নাই।

এছাড়া জেলার উৎপাদিত ধানের একটি বড়  অংশ হয়ে থাকে মুকসুদপুরের চান্দার বিলে। এই বিলটি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরে অবস্থিত । বিল এলাকার শতকরা ৯০জন মানুষ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল । ধান উৎপাদনই তাদের প্রধান আয়ের উৎস। হাজার হাজার পরিবার এক ফসলি বোরো ধান চাষ করে সারা বছরের খরচ চালায়।

উজানী ইউনিয়নের পাটিকেলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য অশোক কুমার বিশ্বাস বলেন, জোয়ারের পানি ঢোকার কারণে আমার ১৫ বিঘা জমির ধান ডুবে নষ্ট হয়েছে। সময়মতো পর্যাপ্ত শ্রমিক পেলে আমার এতো ক্ষতি হতো না। চাষাবাদে শ্রমিক সংকটই বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে।

কাশিয়ানী উপজেলার সিংগা গ্রামের কৃষক বৈদ্যনাথ বিশ্বাস, পংকজ মন্ডল, সুভাস ঢালীসহ বেশ কয়েকজন কৃষককের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তারা জানান, কার্তিক মাসে ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় বীজতলা নষ্ট হয়। পরে আবার ধানবীজ কিনে চারা তৈরী করি। এতে সময়মতো ধান রোপন করা সম্ভব হয়নি। আবার ধান যখন কাটার সময় হয়েছে হঠাৎ করে সিংগা বিলে জোয়ারের পানি ঢুকে পাকা ধান তলিয়ে গেছে। পনির নিচের ধান কৃষকরা কাটে না। এখন যা হয়েছে তাতে একটা ধানও ঘরে আসবে না। সারাটা বছর চাল কিনে খেতে হবে। আর শ্রমিক সংকট যে ভাবে হচ্ছে তাতে আগামীতে জমি অনাবাদি থেকে যাবে।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, চান্দার বিলসহ জেলার বিভিণœ এলাকার জমি নিচু, এসব বিলে একবার পানি উঠে গেলে সহজে নামে না। হারভেস্টার মেশিনও সেখানে চলে না। এলাকা চিহিৃত করে জোয়ারের পানি নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। #

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION