রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কাশিয়ানীতে তিন মাদক করবারিকে গ্রেপ্তার কোটালীপাড়ায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প কোটালীপাড়ায় দুর্গা মন্ডপ পাহারায় আনসার নিয়োগে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ কোটালীপাড়ায় দ্বিতীয় শ্রেণির শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সিরিয়াল ধর্ষক গ্রেপ্তার চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে সপ্তমী বিহিত পুজা অনুষ্ঠিত গোপালগঞ্জের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করলেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাজহার আল কবির খোকন গোপালগঞ্জে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল যুবকের, আহত ১ কোটালীপাড়ায় এক যুবকের বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ বর্ষায় বিল পাড়ের দরিদ্র মানুষের আয় শাপলা বিক্রি টুঙ্গিপাড়ায় ৫০জেলে পরিবার পেল ইলিশ আহরনে বিরত থাকা চাল

গাজায় ফিলিস্তিনি শিশুদের বোমা দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে! আজ মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোথায় – প্রধানমন্ত্রী

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪, ৬.৩০ পিএম
  • ১৪৩ Time View

কালের খবরঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে বিশ্বব্যাপী অনেকেই শিশু অধিকার, শিশু শিক্ষা ও মানবাধিকারের কথা বলে আবার পাশাপাশি দেখি তারাই দ্বিমুখি কার্যক্রম করে। গাজায় শিশুদের উপর যখন বোমা ফেলা হয়, হত্যা করা হয়, হাসপাতালে বোমা ফেলা হয়, ফিলিস্তিনিদের উপর যখন আক্রমন করা হয় তখন এই মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোথায় থাকে। আর তাদের মানবিকতাবোধটা কোথায় থাকে।

রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে জাতির পিতার ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে “বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখেছি। আমরা সব সময় নির্যাতিত মানুষের পাশে আছি। তাই তো আমাদের প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমারে মানুষের উপর অত্যাচার হলো তখন আহতাবস্থায় শিশুদের নিয়ে আশ্রয় চাইলো তখন আমরা মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু আমি জানি না আজকে গাজার শিশুদের যে অবস্থা আমরা দেখছি বিশ্ববিবেক কেন নাড়া দেয়না বলে কঠোর সমালোচনা করেন ।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সব সময় নজর ছিলো শিশুদের দিকে। তিনি দুঃস্থ শিশু, দরিদ্র শিশু, অসহায় অথবা এতিম শিশুদের পুর্নবাসনের জন্য শিশু আতœরক্ষা সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।  ৯৬ সালে ২১ বছর পরে আমরা সরকার গঠন করে শিশুদের সুরক্ষা দেয়ার পদক্ষেপ গ্রহন করি। ২০০০ সালে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন করে শিশুদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করি। ২০১০ সালে জাতীয় শিশু নীতি। আমরা শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষা দেয়ার জন্য ২ কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে প্রাথমিক স্কুল করে দিয়েছি। আজকে আমাদের দেশের ৯৮ ভাগ শিশু স্কুলে যায়। আমরা কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছি। স্কুলগুলোতে আমরা কম্পিউটার ল্যাব করে দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের ছোট বেলা থেকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার ব্যাপারে শিক্ষা দিতে হবে। যাতে করে আজকে যে দূর্ঘটনা ঘটে সেগুলো আর না ঘটে। রাস্তায় কিভাবে নিরাপদে চলতে হবে তাও শিখাতে হবে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা শিখাতে হবে। যারা প্রতিবন্ধি ও অটিস্টিক শিশু তাদের সাথে কেউ যেন দুর্ব্যবহার না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের যেন সবাই আপন করে নেয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের শিশুরা ডিজিটাল যুগে। কাজেই ডিজিটাল শিক্ষার ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। এখন আমাদেরকে স্মার্ট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দেখতে হবে। এই শিশুরাই তো একদিন প্রযুক্তি ব্যবহার শিখবে। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ অর্থাৎ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার মুল কারিগরই হবে আজকের শিশুরা।  তাদের নেতৃত্বেই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী। এই দিনটাকে আমরা শিশু দিবস হিসেবে পালন করি। জাতির পিতা আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। একটি দেশ দিয়েছেন। আত্ম পরিচয় এনে দিয়েছেন। জাতির পিতা এদেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। তাই তাঁর জীবনের সমস্ত সুখ সুবিধা বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন যাতে বাংলাদেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং উন্নত জীবন পায়। তাই ৪৮ সাল থেকে শুরু করে ৭১ সাল পর্যন্ত তাকে ( বঙ্গবন্ধুকে) বার বার কারাবরণ করতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দিয়েছেন। ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সকল সুযোগই একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছিলো। মাত্র ৩ বছর ৭ মাসে জাতির পিতা আমাদের একটা সংবিধান দিয়েছিলেন। যে সংবিধানে এদেশের মানুষের প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক করা, নারী শিক্ষার সুযোগ, নারী নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য পার্লামেন্টে সংরক্ষিত আসন থেকে শুরু করে সব ব্যবস্থা তিনি করে গিয়েছিলেন।

অশ্রæসিক্ত নয়নে ও কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই টুঙ্গিপাড়ার মাটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জন্মগ্রহন করেন। টুঙ্গিপাড়া তখন রাজধানী ঢাকা থেকে অনেক দুরে। ২২ থেকে ২৪ ঘন্টা সময় লাগতো টুঙ্গিপাড়া আসতে। এই মাটিতেই তিনি ঘুমিয়ে আছেন। আজকে এখানে আমরা জাতীয় শিশু দিবস পালন করতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। আমরা একটা জিনিসই চাই এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি। কারণ শিশু কাল থেকেই বঙ্গবন্ধু দেখেছেন এদেশের মানুষের ক্ষুধাপিড়িত কঙ্কালসার অবস্থা। পেটে খাবার নেই , রোগের চিকিৎসা নেই। যা বঙ্গবন্ধুকে ব্যথিত করতো। তাই তিনি গরীব অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করতেন। আমার দাদির কাছে শুনেছি তিনি বন্ধুদের নিজের বই, মাথার ছাতাটাও দিয়ে দিতেন। কাপড়চোপড়ও বিলিয়ে দিতেন। এরজন্য কখনো তারা বাবা-মা বঙ্গবন্ধুকে বকাঝকা দিতেন না। বরং উৎসাহিত করতেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের আয়োজনে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)। সভাপতিত্ব করেন ক্ষুদে শিক্ষার্থী পিয়াসা জামিল।

এরপর প্রধানমন্ত্রী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী অসচ্ছল, মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর্থিক অনুদান বিতরণ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফটোসেশনে অংশ নেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বইমেলা ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

এরআগে, এদিন সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার সমাধি সৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকসদল রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে অনার গার্ড প্রদান করেন। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট নিহত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রূহের মাগফেরাত কামনায় ফাতেহাপাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী দলীয়ভাবে নেতাকর্মিদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, বেসামরিক বিমান  ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারন সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে সকাল সাড়ে ১০ টায় জাতির পিতার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রী ও ছোট বোন শেখ রেহানা সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী পৌঁছানোর ৫ মিনিট পরে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতিকে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে অভ্যর্থনা জানান।

পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সমাধি সৌধের পাশে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন।সকাল সাড়ে ১১ টায় রাষ্ট্রপতি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী শিশু সমাবেশে যোগ দেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র কওে টুঙ্গিপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মান করা হয় তোরণ। নেতা-কর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে আনন্দ-উদ্দীপনা। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অতিথিদের নিরাপত্তা দিতে টুঙ্গিপাড়াসহ গোপালগঞ্জ জেলা জুড়ে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা । পরে প্রধানমন্ত্রী বিকালে হ্যালিকপ্টার যোগে ঢাকা উদ্দেশ্যে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION