কালের খবরঃ
বাজারে সোয়াবিন বা ভোজ্য তেলের দাম প্রতি লিটার ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। এক লিটার তেল এত টাকা দিয়ে কিনে খেতে কষ্ট হয়। এই অবস্থা থেকে উত্তোরনের জন্য আমরা সরিষার আবাদ বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, আগে আমাদের জমিতে মুগ মসুর ও খেসারী কলাই চাষ করতাম। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং ভোজ্য তেলের আমদানী কমাতে কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি এবছর দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এই সরিষা থেকে পরিবারের প্রয়োজনমত তেল বের করবো। আর অবশিষ্ট সরিষা বিক্রি করে বাজার সদাই করবো। এসব কথা বলেন,গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদাহ গ্রামের সরিষা চাষী রাখেশ বাইন।
একই গ্রামের রিয়াজ শেখ বলেন, বাজারে তেলের খুব দাম। তাই আমরা সরিষা লাগিয়েছি। এই সরিষা থেকে তেল হবে আর সেই তেল আমরা সারা বছর খাবো। তাতে বেশী দামে সোয়াবিন কিনতে হবেনা। বাজারেরসোয়াবিনেভেজাল থাকে। কিন্তু আমাদের উৎপাদিত তেলে কোন ভেজাল থাকছে না।
অপরচাষী অনুপ বালা বলেন, গাছে যেভাবে ফুল বা ফল এসেছে তাতে মনে হয় ফলন ভালো হবে। এই সরিষার তেলে আমাদের পুরো বছর চলে যাবে। ভেজালমুক্ত তেল খেতে পারবো। শরীর ও ভালো থাকবে। আর্থিকভাবেও লাভবান হবো।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে,বাজারে ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে ভোজ্য তেলের দাম । যা সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এই অবস্থা থেকে রেহাই পেতে বা আমদানী বাণিজ্যের উপর চাপ কমাতে গোপালগঞ্জের কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষাবাদ বাড়িয়ে চলেছেন। এতে একদিকে যেমন কৃষকদের নিজেদের ভোজ্য তলের চাহিদা মিটবে, তেমনি প্রয়োজনাতিরিক্ত সরিষা বিক্রি করে লাভবানের আশা তাদের।
গোপালগঞ্জ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে,গেল চাষ মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলার ৪ হাজার ৫৭০ হেক্টরে জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। আর চলতি মৌসুমে আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৯৮০ হেক্টর। সে হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলায় ৪১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৫ হাজার ৯৪১ মেঃ টন সরিষা। আর এ বছর সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৬ হাজার ৪৭৪ টন। যা ভোজ্য তেলের চাহিদা মিটাবে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের সরদার বলেন, ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতা কমাতে তেল জাতীয় ফসল চাষের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কৃষকদের রবি ফসলের মধ্যে তৈল জাতীয় বীজ সরিষা চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এই কারনে গত মৌসুমের থেকে চলতি মৌসুমে ৪১০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ বেড়েছে। এভাবে দেশ ব্যাপী যদি তৈলবীজ উৎপাদন বাড়ানো যায় তাহলে দেশে ভোজ্যতেল আমদানী নির্ভরতা কমে আসবে। দেশ অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হতে পারবে। তাই ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতা কমাতে তেল জাতীয় ফসল চাষাবাদের উপর জোর দিতে চাষী ভাইদের অনুরোধ করছি।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply