কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
গোপালঞ্জের কোটালীপাড়ায় সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের বই বিতরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বই উৎসবের দিনে যারা টাকা দিতে পারেনি তাদেরকে বই দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন কয়েকজন অভিভাবক।
উপজেলার ৫২নং সিতাইকুন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। যথারীতি রশিদ বই ছাপিয়ে বই বিতরণের দিনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শ্রেণিভেদে ১শত টাকা থেকে ১শত ২০টাকা করে আদায় করেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হাওলাদার। শুধু তাই নয়, এই প্রধান শিক্ষক রশিদ বই ছাপিয়ে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন ভর্তি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০টাকা ও পঞ্চম শ্রেণির বিদায়ী শিক্ষার্থীদের প্রত্যয়ণপত্রের জন্য ২শত টাকা করে আদায় করেছেন।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মুমিন, ইমরান হাসান, আব্দুর রহমান ও রমজান বলেন, বই উৎসবের দিনে আমরা সকলে নতুন বই পেয়েছি। তবে আমাদের হেড স্যার বই নেওয়ার সময় আমাদের কাছ থেকে ১শত২০টাকা করে নিয়েছেন।
দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১শত টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহাত, তামিম গাজী ও সজিব তালুকদার।
সিতাইকুন্ড গ্রামের কুলসুম বেগম বলেন, আমার নাতনী রুকাইয়াকে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করেছি। এর জন্য ভর্তি ফি বাবদ আমাকে ৫০টাকা দিতে হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, বই উৎসবের দিনে টাকা না দিতে পারায় আমার ছেলেকে বই দেওয়া হয়নি। আমি মঙ্গলাবার (২জানুয়ারি ) ১শত ২০টাকা দিয়ে আমার ছেলের জন্য বই নিয়ে এসেছি। এ জন্য প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হাওলাদার আমাকে একটি রশিদও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হাওলাদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি ম্যানেজিং কমিটির নির্দেশে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই টাকা নিয়েছি।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রশিদ হাওলাদার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২শত ৪০জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য আমরা বই বিতরণের সময় শ্রেণিভেদে ১শত থেকে ১শত ২০টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভর্তি ও অন্যান্য খাদে যে টাকা নেওয়া হয় তাহা বিদ্যালয়টির উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, বই বিতরণ, ভর্তি বা অন্য কোন বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টাকা নেওয়ার কোন বিধান নেই। ৫২নং সিতাইকুন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হাওলাদার যদি এসব বিষয়ে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply