
মুকসুদপুর প্রতিনিধিঃ
মাত্র ৩০ সেকেন্ডের ঝড়ে গোপালগঞ্জের দুই উপজেলার অন্তত শতাধিক বাড়ীঘর ও দোকান বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি। সব কিছু হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ক্ষতিগ্রস্থরা পরিবার। বিদ্যুতহীন হয়ে পড়েছে দুই উপজেলার অন্তত পাঁচ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের অর্থিক সহায়তা দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।বৃহস্পতিবার ( ৬ অক্টোবর) সারা দিনই চলে টানা বর্ষন। সন্ধ্যায় হঠাৎ করে মুকসুদপুর উপজেলার বাসুদেবপুর, মহাটালী, ডিগ্রিকান্দি, টিকারডাঙ্গা ও কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যায় টর্নেডো।

মাত্র ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী এ ঝড়ে বিধ্বস্ত হয় অন্তত শতাধিক বাড়ীঘর ও দোকান। উপড়ে পড়ে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি। সহায় সম্বল হারিয়ে এখন নিঃস্ব পরিবারগুলোকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুতহীন হয়ে পড়েছে গ্রামগুলো। আতœীয় স্বজনদের পাঠানো খাবার খেয়ে জীবন বাচাঁতে হচ্ছে তাদের। টর্নেডোর আঘাতে ঘরের নিচে চাপা পড়ে আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। আহতদের স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ মুকসুদপুর উপজেলার মহাটালী গ্রামের তরিকুল ইসলাম,হিটলার বালা, শ্মশান বালা, গৌতম চন্দ্র সরকার, সাধন বর ও বাসুদেবপুর গ্রামের মনোজ কুমার বিশ্বাস, হাসমত মুন্সী, ইঙ্গুল লস্কর, কালেম লস্কর, আজগর লস্করসহ বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায়। রাত থেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। আত্মীয়রা পাশের গ্রামথেকে খাবার নিয়ে এসেছে। তাই খেয়ে জীবন চালাচ্ছি। ঘরের সবকিছু ঝড়ে উড়িয়ে নিয়েগেছে। এখন কি ভাবে ঘরবাড়ি ঠিক করবো। কিবা খাব ভেবে পারছিনা। সরকার যদি আমাদের না দেখে তাহলে মরণ ছাড়া কোন উপায় নেই।

ক্ষতিগ্রস্থ উজানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি বোস বলেন, আমার ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের অন্তত ৭০টি ঘর ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি পরিবারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাদের বসবাস করার মত কোন অবস্থা নেই। তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। আর ২০/৩০টি পরিবারের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এদের সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন। ইউএনও স্যার এসেছিলেন । দেখে গেছেন । ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার প্রতি শুক্রবার বিকেলে নগদ আর্থ ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।
মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ইমাম রাজী টুলু বলেন, টর্নেডোতে বাসুদেবপুর সহ ৪টি গ্রামের ৪০টি পরিবারের ৭০টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃষ্টির সাথে প্রবল ঝড়ে বাড়ি-ঘর গুলো ভেঙ্গে পড়ে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরূপনের কাজ শুরু করেছি। ক্ষতিগ্রস্থ গরিব ও অসহায় পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, মুকসুদপুরে উজানী ও কাশালিয়া ইউনিয়ন ও কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া গ্রামের উপর দিয়ে প্রবল ঝড় বয়ে যায়। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা ও ক্ষতির পরিমান নিরুপণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক ঢেউটিনসহ প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগীতা করা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION