মুকসুদপুর প্রতিনিধিঃ
এবার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে এইচ এস সি পরীক্ষায় বসেছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী অরিত্র ইশতিয়াক আলম। অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে শ্রুতি লেখক দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন মেধাবী অন্ধ এই শিক্ষার্থী । অরিত্র অন্ধত্বকে বাধা মনে না করে অন্ধত্বকে জয় করতে মানবিক বিভাগ থেকে গতকাল কাল বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা বিষয়ে অংশ গ্রহণ করে শ্রুতি লেখক দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। লেখক প্রশ্ন পড়ে শুনালে তিনি পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি কক্ষে বসেই সেই প্রশ্নের উত্তর মুখে বলে দিচ্ছে । আর তার হয়ে শ্রুতি লেখক দশম শ্রেণির ছাত্রী সুচিত্রা বিশ্বাস খাতার লিখে দিচ্ছে উত্তর।
অন্ধ শিক্ষার্থী অরিত্র সরকারি মুকসুদপুর ডিগ্রী কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ নিয়ে মুকসুদপুরের সরকারি সাবের মিয়া জসিমুদ্দীন এসজে উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা বসেছে। সে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ফিরোজ আলম মৃধার ছেলে।
ইশতিয়াক আলম অরিত্রর পিতা ফিরোজ আলম মৃধা সাংবাদিকদের জানান, আমার ছেলে জন্ম থেকেই একটু চোখে কম দেখতো। প্রথমে বাম চোখে সমস্যা ছিলো। পরে ডানচোখেও সমস্যা ধরা পড়ে। আস্তে আস্তেসে অন্ধত্ব বরণ করে। প্রথমে ইন্ডিয়া থেকে তার চোখের অপারেশন করানোহয়।ভালো না হওয়ায় তাকে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা করা হচ্ছে। এতো সমস্যা থাকার পরেও তার অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ থাকায় আমি তাকে বাধা না দিয়ে এইচ এসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে উৎসাহ যুগিয়েছি। আমার ছেলে চোখে দেখতে পায়না তাই একজন শ্রুতি লেখক দিয়ে পরীক্ষা দেয়ার আবেদন করলে পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষসেটি অনুমোদন করেছে। আমি আমার সন্তানের জন্য সকলের নিকট দোয়া চাই। সে যেন দৃষ্টি ফিরে পায়।
সরকারি এসজে উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সুপার ও সরকারি মুকসুদপুর কলেজের প্রভাষক ড. কবির আহম্মেদ জানান, অরিত্র আমার কলেজের একজন ছাত্র, সে কলেজের নিয়মিত আসতো। কলেজে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন সময়ে পুরষ্কারও পেয়েছে। সে তার অন্ধত্বকে জয় করে শ্রুতি লেখক দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। আশা করি সে ভালো ফলাফল করবে।
মুকসুদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহাদৎ আলী মোল্যা জানান, অরিত্র শিক্ষা বোর্ড থেকে অনুমতি সাপেক্ষে শ্রুতি লেখক দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার এই ইচ্ছা শক্তিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আশা করি সে ভালো ফলাফল করবে। তিনি আরও জানান, এবারের অনুষ্ঠিত এইচ এসসি পরীক্ষা সরকারি মুকসুদপুর কলেজ ও সরকারি এসজে উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি কেন্দ্রে ঊনিশত ছেষট্রিজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply