বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৫:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কাশিয়ানীতে সেচ দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘ-র্ষ। নি-হ-ত ১, আহত ১০ জামায়াত ইসলামী ধনী দল ! টাকা উপরে পাঠায়, নিচে নয় টুঙ্গিপাড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে সরকারি ৩ প্রকল্পের সন্ধান পেল দুদক বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে মুকসুদপুরে সচেতনাতামূলক সভা আগুনে পুড়ে যায় দিনমজুর শিপুলের ঘর! নতুন ঘর দিলেন ইউএনও গোপালগঞ্জের বোড়াশীর দুই ইউপি মেম্বারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ১০ কাশবন সাহিত্য পত্রিকা পুরষ্কার পাচ্ছেন ১১ ক্যাটাগরিতে ১৭ জন গোপালগঞ্জে শিশুশ্রম নিরসন সংক্রান্ত সভা ও সেমিনার ইসলামী হুকুমত, আইন ছাড়া বাংলাদেশে শান্তি আসার সম্ভাবনা নেই- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নেতা কোটালীপাড়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী শ্রীঘরে

পদ্মা সেতু গোপালগঞ্জবাসীর জন্য আর্শিবাদ হয়ে দাড়িছে

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩, ১.২৫ পিএম
  • ১৭৬ Time View

কালের খবরঃ

পদ্মা সেতুর চালুর পর থেকে গোপালগঞ্জের মানুষের আর্থসামাজিক পরিবর্তণ শুরু হয়েছে। এলাকার উৎপাদিত কৃষি পন্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বল্প সময়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে। সেই সাথে জেলার বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় পন্য সমগ্রী জেলায় আনতে সহজতর হয়েছে।অনেকে কারখানা স্থাপনের জন্য ইতো মধ্যে জায়গা ক্রয় করেছে।আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এর সুফল গোপালগঞ্জবাসী ভোগ করতে পারবে বলে মনে করছেন জেলাবাসী ও  প্রশাসন।

দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের জেলার মধ্যে গোপালগঞ্জের অবস্থান। এ জেলায় প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষের বসবাস। কৃষি নির্ভর জেলায়, ধান, গম, পাট, সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের পন্য উৎপাদন হয়ে থাকে।এসব পন্য জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে।বিগত সময়ে এসব পন্য যাতায়াতের অসুবিধার জন্য বাইরে পাঠানো কষ্টসাধ্য ছিল। বাজার মূল্য পাওয়া যেত কম। ফলে কৃষক লাভবান হতো না। এখন পদ্মা সেতু চালুর পর উৎপাদনকারীরা মালামালের দাম পাচ্ছে ভালো। তাতে উৎপাদনকারীরা লাভবান হওয়া শুরু করেছে। এছাড়া গত একবছরে বিভিন্ন কোম্পানীর পক্ষ থেকে ঢাকা খুলনা ও ঢাকা বরিশাল মহাসড়কের দুইপাশে কারখান স্থাপনের জন্য জায়গা ক্রয় করেছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান। ইতো মধ্যে আকিজ জুটমিল তিনটি ইউনিট চালু করেছে। এসব জমির উপর শিল্পকলকারখানা স্থাপন হলে গোপালগঞ্জবাসীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।এখানকার মানুষ আর্থিকভাবে লাভবান হবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে গোপালগঞ্জবাসী ব্যfপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। সেই সাথে ক্রিড়াঙ্গনও সম্প্রসারিত হতে শুরু করেছে।

অপরদিকে পদ্মা সেতুর চালুর পর থেকে সুবিধা ভোগ করছে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। বিশেষ করে চাকরীজিবী ও ব্যবসায়ীরা খুব অল্প সময়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যেতে পারছেন। কেউ কেউ সকালে বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ বা অফিস সেরে আবার সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফিরছেন।এতে তাদের খুবই সুবিধা হচ্ছে। আর পরিবহন সেক্টর বলছে পদ্মা সেতু চালুর পর এই রুটে ঢাকায় যাওয়া মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে,এই জেলার অনেকে ঢাকা বা ঢাকার আশপাশ জেলায় চাকরী করেন,ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য প্রতিনিয়ত ছোটেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।আবার উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা যান রাজধানী ঢাকায়।পদ্মায় সেতু চালুর পর থেকে এসমস্ত মানুষের জন্য আর্শিবাদ হয়ে দাড়িয়েছে এই পদ্ম সেতু। আগে কর্মস্থলে যেতে একদিন আগে বাড়ি থেকে রওনা হতে হতো। আর এখন পদ্মা সেতুর পাড়ি দিয়ে খুব অল্প সময়ে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যেতে পারছেন। কেউ আবার সকালে বাড়ি থেকে ঢাকায় যেয়ে সমস্ত কাজ সেরে সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খাচ্ছেন।অনেকে বৃহস্পতিবার অফিস সেরে বাড়ি চলে আসছেন। দুইদিন মা বাবা বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আবার রবিবার সকালে গিয়ে অফিস করছেন।গোপালগঞ্জে যারা চাকরী করেন তারাও বৃহস্পতিবার অফিস সেরে ঢাকায় যাচ্ছেন,আবার রবিবার সাকালে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে গোপালগঞ্জে এসে কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে রওনা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন।

কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের কালিগঞ্জ গ্রামের মেয়ে অর্চণা হালদার। তিনি চাকরী করেন ঢাকায়। রবিবার সকাল সাতটায় দেখা হয় গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইস মোড়ে ইমাদ পরিবহন কাউন্টারে।তিনি ঢাকায় যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষায় বসে আছেন। তখন তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালুর ফলে বিশেষ করে আমার খুব সুবিধা হয়েছে। প্রতি বৃহস্পতিবার অফিস সেরে বিকালে বাড়ি চলে আসি। আবার রবিবার সকালে গিয়ে অফিস করি। আগে এমন কথা চিন্তাও করতে পারিনি।শুধু সম্ভব হয়েছে পদ্মার সেতুর এবং শেখ হাসিনার জন্য।

গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাকিবুর রহমান বলেন, আমি যখন অফিসিয়াল কাজ বা ট্রেনিং এর জন্য ঢাকা যাই। তখন সকাল সাড়ে ৭টায় রওনা দিয়ে ঠিক ১০টায় পৌছে যাই। যেয়ে ট্রেনিং এ যোগ দেই বা অফিসের কাজ করি। এসব শুবিধা শুধু সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপের জন্য । তিনি সাহস করে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ হাতে নিয়েছিলেন এবং সমাপ্ত করে চালুও করেছেন। এজন্য তাকে আমার পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাতপাড় গ্রামের কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী জয়া বিশ্বাস। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাস কাউন্টারে বসে ছিলেন। সেখানে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কি যে সুবিধা হয়েছে তা বলে বুঝানো কষ্ট। সকালে বাড়ি থেকে খেয়ে বেড়িয়েছি। আবার পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে আসবো।অথচ আমার বড় বোন বা দাদা পরীক্ষা দিতে গিয়ে অনেক কষ্ট করেছে।তারা ১/২ দিন আগে ঢাকা যেয়ে হোটেলে বা অন্য কোন ছাত্রের হোস্টেলে গিয়ে থাকতো। পরীক্ষা দিয়ে পরে বাড়ি ফিরতো। এতে প্রায় তিন চার দিন লেগে যেত। এখন সকাল বিকাল হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।

যাতায়াত সুবিধা ও উন্নয়ন সম্পর্কে গোপালগঞ্জ জেলা উদীচীর সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন,পদ্মা সেতুর চালুর পর পরিবহন সেক্টরে পরিবর্তন এসেছে। আগের মত এখন ঘাটে বসে থাকা লাগে না। গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা আবার ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জে পন্য আনানেয়ার সময় কম লাগে।তাতে ব্যবসায়ীরা সঠিক সময়ে নিদৃষ্ট স্থানে পন্য পৌছে দিয়ে লাভবান হচ্ছে।এছাড়া গোপালগঞ্জে উৎপাদিত বিভিণ্ন ধরনের কৃষিপন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়

বিক্রিতে সুবিধা হচ্ছে। কৃষক লাভবান হচ্ছে। তাতে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হওয়া শুরু হয়েছে।

গোপালগঞ্জ জেলা ক্রিড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ক্রিড়া সংগঠক শিব শংকর অধিকারী বলেন, আগে বি লীগের খেলা গোপালগঞ্জে করতে খুব বেগ পেতে হয়েছে। যেদিন খেলা থাকতো  তার  একদিন বা দুইদিন আগে খেলোয়ারদের এসে হোটেলে থাকতে হতো। এখন প্লেয়াররা খেলার ১/২ঘন্টা আগে এসে খেলা সেরে আবার ঢাকায় ফিরে যায়। ন্যাশনাল দল ও খেলোয়ারদের খেলা বেশী বেশী হওয়ায় গোপালগঞ্জের ক্রিড়ামদি ছেলে মেয়েরো খেলাধুলায় উৎসায়িত হওয়া শুরু করেছে।

জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন,পদ্মসেতু চালুর পর গোপালগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার সরাসরি সেতু বন্ধন তৈরী হয়েছে। এলাকার উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের পন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। উৎপাদনকারীরা ন্যয্যমূল্য পাচ্ছে। এলাকার শিল্পকলকারখানা তৈরীর জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জায়গা নিয়েছে। অনেকে আবার জায়গার জন্য আবেদন করেছেন। অফিসিয়াল কাজে সুবিধা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে গিয়ে মিটিং করা সম্ভব হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য ছেলে মেয়েরা স্বল্প সময়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আবার ফিরে আসতে পারছে। ফলে পদ্মা সেতু গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। যার সুফল এ এলাকার মানুষ পাচ্ছেন।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION