কালের খবরঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গোপালগঞ্জে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়।কর্মসূচীর মধ্যে জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, স্বেচ্ছায় রক্তদান, ফ্রি মেডিকেল, র্যালী, আলোচনাসভা,কনসার্ট ও বাদ জোহর ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থণা।সরকার ঘোষিত এসব কর্মসূচী গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়।
রবিবার (২৮মে) সকালে জেলা সদরের সুইমিং পুল এন্ড জিমনেশিয়াম অডিটরিয়ামে দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। ফ্রি মেডিকেলে গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডেকিল কলেজ হাসপাতাল ও আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের,গাইনী, অর্থোপেডিক, চক্ষু, শিশু, চর্ম,মেডিসিন ও সার্জরী বিভাগের ২০জন সিনিয়র চিকিৎসক ও অর্ধশত জুনিয়র ও ইন্টার ডাক্তার প্রায় এক হাজার রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।চিকিৎসা সেবা দেয়ার পর এসব রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয়।
চিকিৎসা নিতে আসা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের চরমানিকদাহ গ্রামের আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মর্জিনা বেগম বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও স্যার মোহসীন উদ্দিন আমাদের লোক দিয়ে খবর পাঠায়। সে গিয়ে বলে রবিবার সারাদিন ফ্রিতে চিকিৎসা ও ওষুধ দেয়া হবে।তাই আমি সকালে এসে গাইনী ডাক্তার উর্মি হককে দেখাই। তিনি আমাকে দেখে এবং আমার রোগের কথা শুনে ওষুধ দিয়েছেন।এখানে কোন টাকা দিতে হয়নি। সব কিছুই ফ্রিতে হয়েছে।
একই এলাকার বাসিন্দা রুপা বেগম। তিনি তার ৫বছর বয়সী শিশু কন্যা তানিয়া খানমকে নিয়ে আসেন চিকিৎসা নিতে। এখানে মেয়ের জন্য শিশু ডাক্তার শ্যামল সরকারকে দেখাই।তিনি আমার মেয়েকে দেখে ওষুধ লিখে দিয়েছেন। আরা আমি দেখিয়েছি মেডিসিনের ডাক্তার প্রবীর ব্যানার্জীকে।দুই ডাক্তারের কাগজ নিয়ে ওষুধের কাছে গেলে তারা আমাদের ফ্রিতে ওষুধ দেন।
সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের সোনাকুড় গ্রামের শ্রমজীবী মোঃ শওকত শেখ(৬০)।কোমর ব্যাথা নিয়ে আসেন ফ্রি চিকিৎসা নিতে। তিনিও ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এই এলাকার পোদ্দারেরচর গ্রামের শেফালী রুবিদাস। তিনি পেটে ও কোমরে ব্যাথা নিয়ে আসেন ডাক্তার দেখাতে। চিকিৎসা পেয়ে প্রশান্তির হাসি হেসে বাড়ি ফেরেন তারা। শুধু এরাই নয় এরম শত শত দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষ ফ্রিতে চিকিৎসা ও ওষুধ পেয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন।
এদিকে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীতে গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী রক্তদান করে কর্মসূচীর শুরু করেন। এরপর গোপালগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অন্তত শতাধিক মানুষ রক্তদান করেন।এসব রক্ত গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে দরিদ্র রোগীদের দান করা হবে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জাকির হোসেন।
ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, জাতির পিতার জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পুর্তি উপলক্ষে সরকার ঘোষিত সকল কর্মসূচী আমরা যথাযত ভাবে পালন করছি।সেই সাথে দরিদ্র মানুষের জন্য ফ্রিতে চিকিৎসা ও ওষুধ দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যেমন মানুষের উপকারে আসতেন , গরীব দুঃখী মানুষের কথা চিন্তা করতেন। তেমনি তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবার মতোই হয়েছেন। তিনিও গরীব দুঃখী মানুষের জন্য সব সময় চিন্তা করেন। মানুষের যাতে মঙ্গল হয় সে কাজ করে থাকেন।
ফ্রি মেডিকেল কর্মসূচীতে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহাবুব আলী খান, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাক্তার মোঃ জাকির হোসেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার অসিত মল্লিক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. নাজমুন নাহার, (সার্বিক) শেখ জোবায়ের আহমেদ, (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ গোলাম কবীর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহসিন উদ্দিন, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুন খানসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply