কালের খবরঃ
বিলের মধ্যে কৃষকদের বিশ্রাম, খাওয়া দাওয়া ও প্রস্্রাব পায়খানার সুব্যস্থা এবং বজ্রপাতের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষার জন্য কৃষক শেড নির্মাণ করা হয়েছে। এটি দেশের প্রথম কৃষক শেড বলে দাবী জেলা প্রশাসনের। গোপালগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জেলার কৃষকদের সুরক্ষার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন। গোপালগঞ্জের বিল এলাকায় ফসলের মাঠে একটু উঁচু জায়গায় কৃষক শেড নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, ফসলের মাঠে, ঝড়-বৃষ্টিতে বজ্রপাতের হাত থেকে রেহাই পেতে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়া, জমিতে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাঝে একটু শ্রান্তি ও বিশ্রাম। ছায়া জায়গায় বসে খাবার খাওয়া, প্র¯্রাব পায়খানার জন্য টয়েলেট, সুপেয় পানির জন্য একটি টিউবওয়েল থাকা দরকার। তাহলে কৃষকরা ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজতে হবেনা, ক্লান্তিতে বিশ্রাম নিতে পারবে, পানি পান করতে পারবে, পায়খানা-প্র¯্রাব করার জরুরী প্রয়োজন মেটাতে পারবেন। দিন-মজুরদের আর দুর্বিসহ কষ্টের মধ্যে সারাদিন মাঠে থাকতে হবেনা। জেলার পাঁচ উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের ফসলের মাঠে একটি করে কৃষক শেড নির্মানের লক্ষ্য নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে সদর উপজেলার উলপুর ইউনিয়নে একটি কৃষক শেড নির্মান করা হয়েছে। প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত উলপুর বিলের কৃষক শেডটি বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের বর্তমান জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম কৃষক শেডটির উদ্বোধন করেন।
এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহসিন উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ মামুন খান, উলপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বাবুলসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও এলাকার কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।
উলপুর এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম মীনা, ই¯্রাফিল মিয়া, মনোয়ার হোসেন, শ্যামল সরকার, মিল্টন মোল্লা সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, এই কৃষকশেড নির্মান করায় তারা ব্যাপক ভাবে উপকৃত হবেন। তারা রোদ-বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নিরাপদে থেকে মাঠে কাজ করতে পারবেন। ঝড়বৃষ্টিতে শেডে আশ্রয় নিতে পারবেন। অকালে বজ্রপাতে প্রাণ রক্ষা পাবে। এছাড়া রোদের মধ্যে না বসে এই শেডে বসে তারা তাদের দুপুরের খাবার খেতে পারবেন। পারবেন বিশ্রাম নিতে। এমনকি কারো পায়খানার প্রয়োজন হলে তারা এখানে নির্মিত বাথরুম ব্যবহার করতে পারবেন। পানির ব্যবস্থা থাকায় খাবার পানিরও কোন সমস্যা হবে না। এটা তাদের জন্য আশির্বাদ। জেলা প্রশাসন কৃষকদের জন্যযে সুযোগ সৃষ্টি করেছে তার জন্য জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম সংবাদকর্মীদেরকে জানান, কৃষক সারাদিন মাঠে কাজ করে অনেক কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করে। তাদেরকে নিরাপদে সুস্থ রাখা ও সুযোগ- সুবিধা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময়ে, কৃষকের বিশ্রামের জন্য, এক জায়গায় বসে খাওয়ার জন্য, পানি পানের জন্য, পায়খানা-প্র¯্রাব করাসহ কৃষকের বহুমূখী কাজে ব্যবহারের জন্য এই কৃষকশেড নির্মান করা হয়েছে। এতে কৃষক ব্যাপক উপকৃত হবে বলে কৃষকরা আমাদের জানিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে জেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে একটি করে কৃষকশেড নির্মান করা হবে।
সাবেক জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের অধিকাংক মানুষ কৃষির উপর নির্ভশীল। তাই কৃষকরা যাতে একটু স্বাচ্ছন্দে মাঠে কাজ করতে পারেন সেই জন্য এই উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়। শুধু গোপালগঞ্জ নয় পর্যায়ক্রমে এই উদ্যোগ দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের কৃষকরা উপকৃত হবেন এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply