কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জ জেলা কারগারে নারী বন্দীদের সেলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে।তারা যাতে কারা ভোগের পর আর কোন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত না হয় সে জন্য তাদের সেলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃস্টি চেষ্টা করছে সরকার। প্রশিক্ষণে তারা সেলাই মেশিনের ব্যবহার , কাপড় কাটা, পোশাক তৈরীসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। ইতোমেধ্যে অনেকে পোশাক তৈরীর কাজ সুন্দরভাবে আয়ত্ত করেছেন। পেটিকোড,ব্লাউজ, স্যালেয়ার কামিজ তৈরী করতে পারছেন। কারাগারে বসেই তারা দক্ষকর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছেন। প্রশিক্ষিত এসব নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যবস্থা করে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে সমাজ সেবা অধিদপ্তররের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়। জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও কারগার কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে কারবন্দী নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে।
সমাজ সেবা অধিদপ্তররের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা আল আমিন মোল্লা বলেন, প্রায় ৫ বছর আগে জেলা কারাগারে বন্দী নারীদের সেলাই প্রাশিক্ষণ শুরু হয়। মাঝে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২০ সালের শুরুর দিয়ে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার দিক নির্দেশনায় আমরা এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পুনরায় শুরু করি। এখানে ১৩ টি সেলাই মেশিন দিয়ে এক সাথে ১৩ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের ট্রেইনার রোজিনা সপ্তাহে ৩ দিন তাদের সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে তাদের এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সমিতির সভাপতি জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। আর সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছি আমি নিজে।এ সমিতিতে সরকার অর্থায়ন করেন। এছাড়া সমাজের স্বচ্ছল ব্যক্তি ইচ্ছা করলে এ সমিতিতে অনুদান দিতে পারেন।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন,এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে যারা ভালো কাজ শিখবে তাদের আমরা ওই সমিতির মাধ্যমে পুনর্বাসন করব। বিনামূল্যে সেলাই মেশিনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা করে দেব। এভাবেই তারা দক্ষকর্মী হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জেলা কারগারের জেলার মোঃ মোশফিকুর রহমান বলেন, নারী বন্দীদের জন্য এখানে সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এখান থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা দর্জি কাজের অনেক কিছু শিখতে পারছেন। কারগার থেকে মুক্তি পেয়ে তারা এটিকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাবেন। অপরাধীর হাত কর্মীর হাতে পরিণত হবে। জেলা কারাগারের সুপার মোঃ ওবায়দুর রহমান বলেন, নারী অপরাধীদের সংশোধন করে পুনর্বাসন করার উদ্দেশ্যে কারগারে সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। এখানে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার নিয়মিত প্রশিক্ষণ তদারকি করছেন। আমরাও এ কাজে সহায়তা করছি।
প্রশিক্ষক রোজিনা বলেন, এখানে অনেক প্রশিক্ষনার্থী খুই মনোযোগী। তারা ইতিমধ্যে সেলাই মেশিন ব্যবহার, সেলাই করা, ব্লাউজ, পেটিকোড ,স্যালেয়ার, কামিজ কাটিং শিখেছেন। অনেকে পোশাক তৈরী রপ্ত করেছেন। এদের পুনর্বাসন করা হলে পরিবার উপকৃত হবে। তারা সংসারের কাজের পাশাপাশি অর্থ আয় করতে পারবেন।এতে তাদের সংসারে স্বাচ্ছন্দ আসবে।
প্রশিক্ষাণার্থী সেলিনা সুলতানা বলেন, সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছি। এখন প্রাথমিক ধারণা পেয়েছি। সেলাই মেশিন চালাতে পারছি। বন্দী ফাতেমা বেগম বলেন, গত ৬ মাসে সেলাই প্রশিক্ষণ থেকে সেলাই মেশিনের ব্যবহার , কাপড় কাটা, পোশাক তৈরী আয়ত্ত করতে পেরেছি। পুরোপুরি প্রশিক্ষণ নিয়ে এ কোর্স সমাপ্ত করব।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সবাইকে সামিল করতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই আমরা জেলা কারাগারের নারী বন্দীদের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তাদের হাতকে আমরা কর্মীর হাতে পরিণত করতে চাই। এজন্যই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply