বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) পরিবহনের জ্বালানী খাতে ৫৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এই সময়ে পরিবহন খাতে ব্যয় হওয়ার কথা নয়। তারপরও পরবর্তী অর্থবছরে অস্বাভাবিকভাবে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানাগেছে।এই নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের পরিবহন ব্যয় বাজেট সংক্রান্ত তথ্যমতে, করোনাকালীন সময়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও পরিবহন খাতে জ্বালানী বাবদ ব্যয় হয়েছে ৫৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে খরচ হয় ৮২ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা। অপরদিকে নিবন্ধন ফি সংক্রান্ত বাবদ ব্যয় ১৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকা এবং বীমা বাবদ ব্যয় ৮০ হাজার থেকে বেড়ে ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় দাড়িয়েছে। একইসাথে যানবাহন মেরামত বাবদ ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৩২ হাজার টাকা। যা আগের অর্থ বছরে ছিল ৩২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মোট পরিবহন ব্যয় ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ ৮ হাজার টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মোট পরিবহন ব্যয় হয়েছে ৭৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তর সূত্রে আরো জানাগেছে, গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে পরিবহন খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অস্বাভাবিকভাবে ব্যয় বেড়েছে। জ্বালানী বাবদ ব্যয় ছিল ১ কোটি ১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, বীমা বাবদ ১০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, যানবাহন মেরামত বাবদ ব্যয় ২৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা। মোট ব্যয় ছিল ১ কোটি ৪০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। যা গত দুই অর্থবছরের তুলনায় সর্বোচ্চ।
এ বিষয়ে বাজেট অফিসার তানিয়া ইসলাম বলেন, বিগত অর্থবছরের কিছু ব্যয় বাকি থেকে যায়। যা ওই বছরে আদায় করা হয় না। এই ব্যয় আমরা পরবর্তী অর্থ বছরে উল্লেখ করে থাকি। আর এই প্রতিবেদনে ব্যয় আমরা পরিবহন দপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত ভাউচার অনুযায়ী করে থাকি। তারাই প্রকৃত তথ্য দিতে পারবেন।
পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক তাপস বালা বলেন, ২০২০ সালের মার্চের শেষের দিকে করোনা শুরু হয়। তখন ৩ মাস গাড়ি বন্ধ ছিল। এরপর জুলই থেকে অফিস খুলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারপর গাড়ি চলাচল শুরু করে। আমরা খুলনা সহ সবরুটে গাড়ি চালিয়েছি। শিক্ষক ও কর্মকর্তারা গাড়িতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে তারা অন লাইনে ক্লাস নিয়েছেন। তাই পরিবহন সেক্টেরে জ্বালানী ব্যয় ছিল। ইভেন সেই সময়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের আমরা মাইক্রোতে করে অফিসে এনেছি। হিসাব বিভাগে জ্বালনী সহ পরিবহনের সমস্ত সেক্টরের হিসাব স্পষ্ট করে জমা দেয়া হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে আমি পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক পদটি ছেড়ে দিয়েছি। এখন শুধু মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন প্রশাসক তাপস বালা গত সপ্তাহে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। তবে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোঃ মোরাদ হোসেন বলেন, আমরা পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করিনি এবং এবিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য একিউএম মাহবুব বলেন, বিষয়টি এখনো আমার কাছে আসেনি। অস্বাভাবিক জ্বালানী খরচ হয়ে থাকলে, এটা যদি তদন্তের কোন বিষয় থাকে, তাহলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply