হৃদয় সরকার, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) অভ্যন্তরীণ রাস্তার বেহাল দশা। সামান্য বৃষ্টিপাতে হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলোতে পানি জমে। এতে করে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। এবং একাধিকবার অনেক শিক্ষার্থী বাইক দূর্ঘটনার স্বীকার হয়েছেন বলে জানা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের (বর্তমান ব্যবহৃত) রাস্তাটি পুরোনো ইট এবং রাবিশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যার কারনে সামান্য বৃষ্টি হলেই প্রধান ফটকের সামনে নর্দমার সৃষ্টি হয়। এমনকি প্রধান ফটক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রায় অধিকাংশ রাস্তায় পুরোনো ইট এবং রাবিশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যার কারনে পুরোনো ইটে বৃষ্টি পরলে সেখানে শেওলা জন্মে এবং রাস্তাঘাট পিচ্ছিল হয়ে যায়। এতে করে প্রায়শই শিক্ষার্থীরা দূর্ঘটনার সম্মুখীন হন বলে জানা যায়।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চলাচলের জন্যও শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত একই রাস্তায় গাড়ি চলাচল করায় সেখানে কাঁদাযুক্ত মাটি ও নর্দমায় পরিণত হয়। দূর্ঘটনার ভয়ে শিক্ষার্থীরা পায়ে হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছে।
বাংলাদেশের অধিকাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাঘাট যেখানে উন্নত সেখানে বশেমুরবিপ্রবির অবস্থা নিতান্তই নগন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যেসকল রাস্তা রয়েছে তাদের অধিকাংশ রাস্তাই বেশ কয়েক বছর পূর্বে পুরোনো ইট এবং রাবিশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই রাস্তায় শেওলা জন্ম নেয়। এমনকি অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা ইটের রাস্তার দু’ধারে গর্ত থাকায় বর্ষাকালের অধিকাংশ সময়ই এসব গর্তে পানি জমে থাকে। যেগুলোতে রোগজীবাণু সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুকি বেড়ে যাচ্ছে।
রাস্তাঘাটের এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সমুদ্র জীববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুদ্র দাশ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের রাস্তা একটি। যার কারনে এই রাস্তা দিয়ে সকল শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন গুলো চলাচল করে। এখানে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই এই রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করা সম্ভব হয়না। কারন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন যানবাহনগুলো এমন ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে চলাচলের কারনে নর্দমার সৃষ্টি করে। অন্যদিকে পুরোনো ইট এবং রাবিশ দিয়ে তৈরি করা রাস্তায় বৃষ্টি হলে স্বাভাবতই সেখানে শেওলা জমে যায়। যার কারনে রাস্তা পিচ্ছল হয়ে যায়। তিনি বলেন, রাস্তাঘাটের এমন বেহাল দশা আজকের নতুন না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এই রাস্তা দিয়ে প্রশাসন চলাফেরা করার পরেও তাদের চোঁখে এমন অস্বস্তিকর রাস্তাটি চোঁখে পরছেনা।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী উজ্জ্বল মন্ডল (কৃষ্ণময়) বলেন, বাংলাদেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাঘাট অতি উন্নত। কিন্তু আমাদের বশেমুরবিপ্রবিতে তার বিপরীত। সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যায়। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কয়েকটি রাস্তাঘাট আছে, যেগুলো দিয়ে হাঁটলে যেকোনো সময় বড় কোনো ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে৷ এমনকি ইতিপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে একাধিকবার বাইক দূর্ঘটনাও ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি রাস্তা পাঁকা করা হয়েছে কিন্তু বর্তমানে প্রধান ফটক হিসেবে ব্যবহৃত রাস্তা, লাইব্রেরীতে প্রবেশের রাস্তা, একাডেমিক রাস্তা, মেয়েদের হল গেইটের রাস্তাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ রাস্তাই দূর্ঘটনাপ্রবন। এসব রাস্তা আরসিসি করলে এমন অবস্থার সৃস্টি হতোনা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার এস. এম. এস্কান্দার আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাজ নির্মাধীন থাকার কারনে বর্তমানে ব্যবহৃত মন্দির গেইটের রাস্তাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাজ শেষ হয়ে গেলে এই রাস্তাটি আর ব্যবহার করা হবেনা। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাষ্টারপ্ল্যান অনুযায়ী রাস্তাটি করা হয়নি। এটি মূলত ক্যাফেটেরিয়ার পেছনে তৈরি করার কথা ছিল। কিন্তু ক্যাফেটেরিয়া না হওয়ার কারনে সাময়িক সময়ের জন্য এই রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছে। তবে বর্তমানে চলাচলের উপযোগী করার জন্য রাস্তায় কিছু রাবিশের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের অন্যান্য রাস্তার উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি রাস্তার উন্নয়ন করেছি তবে ইঞ্জিনিয়ারিং কিছু সমস্যার জন্য সকল রাস্তার কাজ শেষ করতে পারিনি। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রাস্তার কাজ কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে এবং এটির জন্য ঠিকাদারের সাথে কথা হয়েছে, তিনি খুব দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রাস্তার কাজ করবেন বলে জানান।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply