কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে দিন কাটিয়েছে জেলাবাসী।
কারফিউ জারি থাকলেও সকাল থেকে শহরে বের হয়েছে সাধারন মানুষ। তবে পেটের তাগিদে দিন মজুরদের সংখ্যাটাই ছিল বেশি। এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক।
অপরদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে অন্তর্র্বতী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলছে, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের এ কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের একজন করে অতিরিক্ত সচিব। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সমগ্র গোপালগঞ্জ জেলায় বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টা কারফিউ শিথিল থাকবে।
এদিকে, গোপালগঞ্জে নিহত চারজনের দাফন ও সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। তাদের কারও সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়নি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ সৎকার ও দাফন করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহাকে বুধবার রাতে পৌর শ্মশানে সৎকার করা হয়। টাইলস মিস্ত্রির সহকারী রমজান কাজীকে বুধবার রাতে এশার নামাজের পর দাফন করা হয়।
এছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সোহেল রানা ও ক্রোকারিজ দোকানের কর্মচারী ইমন তালুকদারকে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশ কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার ২২ ঘন্টার কারফিউ দেয়া হয়। সকাল থেকে সাধারন মানুষ কারফিউ উপেক্ষা করে বাইরে বের হতে থাকে। তবে পেট আর জীবন জীবিকার তাগিদে কাজে বের হন দিন মজুর আর রিক্সা চালকেরা। সংঘর্ষের পর থেকে গত দুইদিন তাদের আয় রোজগার কমে যাওয়া দুঃচিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের কপালে। আতংক আর উৎকন্ঠার মধ্যে থেকেই বাইরে বের হতে হয়েছে তাদের। জেলা শহরের সকল দোকানপাট ছিল বন্ধ। তবে দোকান ও ঔষধের দোকান খোলা রয়েছে। গলির মধ্যে দোকান খোলা ছিল।
এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পযর্ন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এখন পযর্ন্ত কোন মামলা দায়ের হয়নি।
সংঘর্ষ চলাকালে ভাংচুর করা হয় জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোঃ তানভীর হোসেন কারাগার পরিদর্শ করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, কি ধরনের হামলা হয়েছে, কেমন ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে তা পরিদর্শনে এসেছি। কারারক্ষিরা যথেষ্ট সাহসিকতার সাথে কাজ করেছেন। ফলে আসামী ছিনতাই ও অস্ত্র ভান্ডারের কোন ক্ষতি হয়নি। বাইরের যে পরিস্থিতি ছিলো সেটা সেনা বাহিনী, বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনী সামাল দিয়েছেন।
বর্তমানে গোপালগঞ্জে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, পুলিশ কাজ করছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দ্রুত সময়ে মামলা দায়ের করা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION