কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে নৈশ প্রহরী গৌতম গাইন (৩৫) হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। গতকাল শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে নিহতের লাশ নিয়ে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের জলিরপাড় জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে তিন শতাধিক নারী-পুরুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেয়। এর আগে বঙ্গরত্ন মহাবিদ্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে উজানি-জলিরপাড় সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নীলরতন বালা, রূপালতা মণ্ডল ও বিএনপি নেতা চিন্তাহরণ মণ্ডল। বক্তারা গৌতম গাইনকে ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যা’ করা হয়েছে দাবি করে খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
নিহত গৌতম জলিরপাড় ইউনিয়নের কলিগ্রামের বিমল গাইনের ছেলে। তিনি জলিরপাড় জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহতের ভাইঝি সমর্পিতা গাইন বলেন, “আমার কাকা একজন নিরীহ মানুষ ছিলেন। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিসের জন্য? তার অপরাধ কী ছিল?”
নিহতের ভাবি স্বরস্বতী বৈরাগী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আজ দুইটি সন্তান বাবাকে হারালো। ওরা যখন অন্যদের বাবাকে আদর করতে দেখবে, তখন কী জবাব দেবো?”
নিহতের স্ত্রী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বুধবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় গৌতম গাইন বাড়ি থেকে বের হয়ে বিদ্যালয়ে যান, এরপর থেকে নিখোঁজ হন। পরিবারের সদস্যরা তাঁর ফোন বন্ধ পান। পরদিন বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মুকসুদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-৫১৫) করেন পরিবার।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় সদর থানা পুলিশ কংশুর মধুমতী বিলরুট চ্যানেল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। শনিবার (১২ জুলাই) ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে লাশ বাড়িতে নিয়ে গেলে উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
এ ব্যাপারে মুকসুদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ পাল জানান, নিহতের স্ত্রী মিলি বৈরাগী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০–১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি বলেন, “এজাহারে বলা হয়েছে, গৌতম গাইন প্রধান শিক্ষক নির্মল সাহাকে সুদের কারবারিদের কাছ থেকে টাকা এনে দিতেন এবং বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী নিয়োগ নিয়ে বিরোধ ছিল। এসব বিষয় হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।”
তিনি আরও জানান, গৌতম গাইনের মোবাইল ফোনের কললিস্ট তলব করা হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION