কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)দুইটি কাজের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তদন্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।গতকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোপালগঞ্জ জেলা দুর্নীতি দমন অফিসের উপ-পরিচালক মোঃ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এলজিইডি অফিসে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান কলে ঘটনার সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন এই দুদুক কর্মকর্তা । এ সময় দুদুক অফিসের অপর উপপরিচালক সোহরাব হোসেন সোহেল, বিজন রায়সহ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
দুদুক সূত্রে জানাগেছে, গোপালগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতাধীন সদর উপজেলার চর গোবারা (মোল্লারহাট ব্রিজের নিকট) মোল্লারহাট পুরাতন ফেরী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ১৫৯০ মিটার সড়ক বিটুমিন কার্পেটিং দ্বারা উন্নতিকরণ বাবদ ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা। যা বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু একই সড়কে ২ ভেন্ট ৪মিঃ গুন ৪ মিটার। যা ৮মিটার আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ বাবদ ২৪,১৯,১০৫/- টাকার কাজ হাতে নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), গোপালগঞ্জ। রাস্তা নির্মান হলেও বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে প্রকৃত স্থান থেকে ১৫-২০ কিলোমিটার দুরে, সদর উপজেলার দত্তডাঙ্গা ম্যাকভিশন এগ্রো লিঃ এর ফিড মিলের প্রবেশ মুখে।এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান। যা শুধুমাত্র এই ফিড মিলে প্রবেশের জন্য । এতে জনগনের কোন উপকার হচ্ছেনা।যা ক্ষমতার অপব্যবহার যোগ্য অপরাধ।
অপর অভিযোগ হলো,গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ডুমরাসুর জতিন সাধুর বাড়ী হতে সুশীল বৌল ভায়া জিপিএস সড়ক (চেইঃ ১০৪০-১৭৬০মিঃ) উন্নয়ন সংক্রান্ত ৭২০ মিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ। এই রাস্তার ৭২০ মিটার রাস্তার মধ্যে আনুমানিক ৪০০ মিটার রাস্তা ব্যক্তি মালিকানাধীন সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদের ব্যক্তি মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কের মধ্যে অবস্থিত। এই রাস্তায় ব্যয় হয়েছে ৪২ লক্ষ ৪হাজার ৭৩২টাক। এই দুইটি কাজ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীগণ প্রাক্কলন প্রস্তুত, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বিল পরিশোধের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারী ৪২,০৪,৭৩২/- টাকার অপচয় করেছে। যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ।
গোপালগঞ্জ জেলা দুর্নীতি দমন অফিসের উপ-পরিচালক মোঃ মশিউর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশসহ প্রতিবেদন দুদক প্রধান কর্যালয়ে প্রেরণ করা হবে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, আমি গোপালগঞ্জে যোগদান করি ২০২০ সালের ১৮ মার্চ। আর কালভার্টের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে।এই কাজে বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৮লক্ষ ৪৯ হাজার ৫৪০টাকা।আর স্থান পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, সভাপতি তার ক্ষমতা বলে এই কাজ করেছেন। এখানে আমাদের কিছু করার ছিলোনা। আর সাভানা পার্কের মধ্যে সড়ক নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, এই প্রকল্পটি এলজিইডর প্রধান কার্যালয় থেকে ডিপিপির মাধ্যমে এসেছে। গোপালগঞ্জ অফিস শুধু বাস্তবায়ন করেছে। তবে যে কাজ করা হয়েছে তার গুনগতমান ভালো।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply