কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জে প্রায় ৩২ হাজার মেট্রিকটন রোপা আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ জন্য জেলার ৫ উপজেলায় ১২ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ চলছে। এখন কৃষক আমন ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে বা হাট-বাজার থেকে ধানের চারা কিনে এনে জমিতে চারা রোপন করছেন তারা। ইতমধ্যে জেলার ৮৫ ভাগ জমিতে আমন ধানের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ ধানের আবাদ সম্পন্ন হবে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপাীনাথপুর গ্রামের কৃষক সালাহউদ্দিন মিয়া বলেন, ইরি-বোরো ধান কাটার পর আমরা পাট চাষ করি। পাট কেটে আবার রোপা আমন চাষ করি। আমাদের এলাকায় তিনবার ফসল করা যায়। কেউ আবার রবিসশ্য করে। চাষাবাদ করে আমরা ভালোই আছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে না পড়লেযে ফসল হয় তা দিয়ে আমাদের বছর চলে যায়।
রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক হরেকৃষ্ণ বালঅ বলেন, রিমালের সময় আমাদের ক্ষেতের সবজি নষ্ট হয়েছে। কৃষি অফিস আমাদের ধানবীজ ও সার দিয়েছে। তা দিয়ে আমরা আমন চাষ করছি। আশাকরিকোন সমস্যা না হলে ক্ষতি উঠে আসবে।
শুধু এই দুই কৃষকই নয়। কথা হয়বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে। তারা বলেন গোপালগঞ্জের উচু এলাকায় ২/৩বার চাষাবাদ করা সম্ভব। আর নিচু এলাকায় একফসলী। বছরের এই সময় রোপা আমন ধানের চাষ হয়ে থাকে। আমন চাষ করে আমরা যে ধান পাই তা দিয়ে আমাদের সারা বছরের খাবার চাউল হয়ে যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আঃ কাদের সরদার জানিয়েছেন। প্রতি হেক্টর জমিতে আমন ধানের গড় উৎপাদন ধরা হয়েছে আড়াই মেট্রিকটন। সে হিসাবে এ জেলায় ১২ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে ৩১ হাজার ৯৩৭ টন ৫০০ কেজি রোপা আমন ধান উৎপাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ওই কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে জেলার ৮৫ ভাগ জমিতে আমন ধানের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে রোপা আমন ধান আবাদ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা সৃষ্টি হয়েছে। এতে এ ধান আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, ঘুর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্থ ৫ হাজার কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় বিনামূল্যে ৫ কেজি করে ধান বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় ২ হাজার ৪০০ কৃষককে বিনামূল্যে ৫ কেজি করে ধান বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে। এসব উপকরণ দিয়ে কৃষক ৭ হাজার ৪০০ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন । এতে জেলায় ধানের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, এ উপজেলায় ২ হাজার ৯৮৭ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কৃষক ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে এ ধানের আবাদ সম্পন্ন করেছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষক বোরো, আউশ ও আমান সহ ধব ধরনের ধানের আবাদ করছেন। সব মৌসুমেই কৃষক ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। এতে জেলায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে কৃষকের আয় বাড়বে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply