মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন

৫৫ বছর পর নদীর সাথে সংযোগ হতে যাচ্ছে গোপালগঞ্জের বেদভীটা খাল

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০২৩, ১০.৪৬ এএম
  • ১৬৫ Time View

কালের খবরঃ

৫৫ বছর পর নদীর সাথে সংযোগ হতে যাচ্ছে বেদভীটা খাল। ১৯৬৯ সালে (পাকিস্তান আমলে) মধুমতি বিলরুট চ্যানেলের (কুমার মধুমতি) সাতপাড় বাজারে গেটসহ পাউবো বাধ ভেঙ্গে গেলে এই খালের মুখটি বন্ধ করে পাশেই নতুন সড়ক নির্মান করা হয়। সেই থেকে খালের মুখ বন্ধ রয়েছে। এতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাতপাড়, বেদভীটা, আড়–য়াকান্দি, কলপুর,  নটাখোলা, পুকুরিয়া গ্রামসহ এই এলাকার প্রায় ২০টি গ্রামের কৃষক চাষাবাদে ক্ষতির সস্মুখীন হন। এসব গ্রামের কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন, সড়ক বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড খালটি নদীর সাথে সংযোগের উদ্যোগ গ্রহন করেন।

জেলা প্রশাসনের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্মানাধীন টেকেরহাট-হরিদাসপুর-ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের সাতপাড় বাসষ্টান্ড সংলগ্ন বেদভীটা খাল মুখে একটি ব্রীজ এবং ওই খালের নদীমূখে সাতপাড় বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি বোটপাস নির্মান করার সিধান্ত গ্রহণ করে। সড়ক বিভাগ ইতোমধ্যে ব্রীজের নির্মান কাজ শুরু করেছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড তারই ৩’শ মিটার সামনে নদীমুখে বোটপাস নির্মানের জন্য পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আর এতে করে দীর্ঘ ৫৫ বছর পর গোপালগঞ্জে কুমার মধুমতি নদীর সাথে বেদভীটা খালের সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। এই খালটি নদীর সাথে সংযোগ হলে নদীর পানি সাতপাড়, বেদভীটা, আড়–য়াকান্দি, কলপুর, নটাখোলা, পুকুরিয়া, আমগ্রাম খাল হয়ে কোটালীপাড়ার বিল এলাকায় প্রবেশ করবে। এলাকার কৃষক ফলাবে ফসল, জেলে ধরবে মাছ, দিনমজুর জিবিকা নির্বাহ করবে শাপলা, শামুক, সবজি আহরন করতে পারবে বলে এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

এলাকার বয়জেষ্ঠ্য ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, পাকিস্তান আমলে ১৯৬৯ সালে মধুমতি বিলরুট চ্যানেলের (কুমার মধুমতি) সাতপাড় বাজারে গেটসহ পাউবো বাধ ভেঙ্গে যায়। সেই সময় খালের মুখটি বন্ধ করে পাশেই নতুন সড়ক নির্মান করা হয়। সেই সময় থেকে বেদভীটা  খালটিতে ময়লা আবর্জনার স্তুপে ভরে ওঠে এবং পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। খালের পানি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কারনে এলাকার ফসল উৎপাদনে বিঘœ সৃস্টি হয়।

সরেজমিনে দেখাযায়, ইতিমধ্যে গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগ টেকেরহাট-হরিদাসপুর-ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রকল্পের আওতায় সাতপাড় বাসষ্টান্ড সংলগ্ন বেদভীটা খাল মুখে সাড়ে ১২ মিটার প্রসস্থ  ব্রীজ নির্মান কাজ শুরু করেছে। এরই প্রায় ৩’শ মিটার সামনে নদীর মূখে একটি বোটপাস নির্মান করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যেখানে রয়েছে সাতপাড় বাজারের প্রায় ৩০ টি স্থাপনা। নদীর মূখে বোটপাস নির্মান বা পানি প্রবেশ করাতে প্রথমে এইসব স্থপনা অপসারন করতে হবে। তবে এসব ব্যবসায়ীরা বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করে নদীর মুখে খাল কাটার দাবী জানিয়েছেন। তা না হলে তাদের পথে বসতে হবে।

স্থানীয় সাতপাড় ইউনিয়নের কৃষক আসিত মন্ডল (৫০), ভুবন বিশ্বাস (৭২), প্রমোদ বিশ্বাস (৬৫), ফটিক বিশ্বাস (৬৮), দীলিপ মন্ডল (৬০), মৃনাল বিশ্বাস (৬৫) বলেন, পানির অভাবে আমাদের এলাকার কৃষি জামিতে চাষাবাদ করতে কষ্ট হয়। কিছু জমিতে স্যালো মেশিন বসিয়ে বোরো আবাদ করা হয়, বেশীর ভাগ জমিই অনাবাদি থাতে। জলাবদ্ধতার কারনে অনেক জমিতে চৈত্রমাসেও মাটির দেখা মেলেনা। নদীর সাথে বেদভীটা খালের সংযোগ হলে আমাদের অনেক উপকার হবে। এই খাল হয়ে নদীর পানি সাতপাড়, বেদভীটা, আড়–য়াকান্দি, কলপুর, নটাখোলা, পুকুরিয়া এলাকার বিলে পর্যাপ্ত পানি পাওয়ার পর রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম খাল হয়ে কোটালীপাড়ার বিল এলাকায় প্রবেশ করবে।

স্থানীয় সাতপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রনব বিশ্বাস বাপ্পী বলেন, বেদভীটা খাল নদীর সাথে সংযোগ হলে সাতপাড়, কদমবাড়ি, কলাবাড়ি ইউনিয়নের ১৫ হাজার হেক্টর অনাবাদী জমিতে চাষাবাদ করে এই এলাকার ৪০ হাজার কৃষক উপকৃত হবে। তবেবেশ কিছু ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসায়ীকে প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরাতে হবে।

গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো ঃ জাহিদ হোসেন বলেছেন, বেদভীটা খালের আওতাধীন স্থানীয় কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকদের দাবীর প্রেক্ষিতে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রকল্পের আওতায় সাতপাড় বাসষ্টান্ডে বেদভীটা খাল মুখে একটি ব্রীজ নির্মানের কাজ শুরু করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাজারের কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীমূখে সংযোগ দিলে এলাকার কৃষকরা সুফল পাবে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রিফাত জামিল বলেন, আমার জানামতে বেদভীটা খালটির মুখ দীর্ঘ ৫৫ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। নদীমূখে পুরনো স্ট্রাকচারও রয়েছে। এলাকার কৃষকদের যৌক্তিক দাবীর প্রেক্ষিতে খালটি নদীর সাথে সংযোগ সৃষ্টির জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহন করেছি। এজন্য জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সাতপাড় বাজারের প্রায় ৩০ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বাজারের দোকানী ও ক্রেতাদের চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।বোটপাস নির্মাণে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও বরাদ্ধ প্রাপ্তি সাপেক্ষ্যে পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION