কালের খবরঃ
মশারি বা পলিথিন মোড়ানো খেলার ঘর নয়।পলিথিন দিয়ে ঘিরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে লেখা-পড়া করানো হচ্ছে।গাছ তলায় উপরে ত্রিপল টানানো আর বাইরে শীতের ঠান্ডা বাতাস ঠেকাতে শিক্ষকরা এই অভিনব কায়দায় শিক্ষার্থীদেরকে শীতের হাত থেকে বাঁচিয়ে লেখা-পড়া করাচ্ছে।এটি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দৃশ্য।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ অবস্থা দীর্ঘ দিনের।রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে আর শীতের দিনে বাইরে বসেই শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনা করতে হচ্ছে।
স্কুল ভবনটি পরিত্যক্ত হয়েছে অনেক দিন আগেই।ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়েছে।ভবনের নানা জায়গা ভেঙ্গেও পড়ছে।এরমধ্যে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে পড়নো বা ক্লাস নেয়া ঝুকিপূর্ন।
শিক্ষককেরা বাধ্য হয়েই স্কুল ভবনের সামনের জায়গায় গাছের নিচে লেখা-পড়া করাচ্ছেন। ভবনটি ভেঙ্গে পড়ে দুর্ঘটনার আশংকায় ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষ ওই ভবনে ক্লাশ নিতে নিষেধ করেছেন। এমনকি গত ৪/৫মাস আগেই নিলাম বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী লাকী সরকার ও ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী জেবানন্দ বিশ্বাস জানায়, রোদ-বৃষ্টি আর এই শীতের মধ্যে আমরা ঠিকমত লেখা-পড়া করতে পারছিনা। আমাদের স্কুল ভবনটি যাতে তাড়াতাড়ি নির্মান কাজ সম্পন্ন করা হয় তার দাবী জানাচ্ছি।
ওই স্কুলের শিক্ষার্থী অভিভাবক সুশান্ত ঢালী ও চামেলী বিশ্বাস জানান, এ অবস্থায় ছেলে-মেয়েদেরকে ঠিকমত লেখা-পড়া করতে স্কুলে পাঠাতেও ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়। তা’ছাড়া বাইরে বসে ঠিকমতো শিক্ষাদান ও করতে পারছেনা শিক্ষকেরা।
বিদ্যালয় ভবনটি নির্মানের টেন্ডার হয়েছে আরো কয়েক মাস আগে।কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এনডিসি কনস্ট্রাকশন-এর কর্মকর্তা প্রকৌশলী সোহেল রানা যেটা বললেন তাতে আরো কত মাস বা বছরে এ অবস্থা থেকে উত্তোরন হবে তা অনেকটা অনিশ্চিত।
প্রধান শিক্ষক,পল্লি বিশ্বাস জানান, এবছর বিদ্যালয়ে মোট ৭৫জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। আগে বেশী ছিল। ক্লাস রুমের সমস্যার কারনে অনেকে অন্য বিদ্যালয়ে চলে গেছে। অবস্থায় ছেলে-মেয়েদেরকে ঠিকমত লেখা-পড়া করানো যাচ্ছেনা।মুখে মুখে কতটা আর পড়ানো যায়। ব্লাক বোর্ড ব্যবহার করানো যাচ্ছেনা।ঠিকমতো শিক্ষার্থীরা শিক্ষাও নিতে পারছেনা বললেন শিক্ষকেরা। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদেরকে শীতের হাত থেকে বাঁচাতে পলিথিন দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। উপরে রোদ-বৃষ্টি ঠেকাতে দেয়া হয়েছে ত্রিপল। এভাবে শিক্ষার্থীরা ঠিকমত লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পারছেন না বলে জানান প্রথান শিক্ষক। সব সমস্যা বা বাঁধা অতিক্রম করে অনতিবিলম্বে স্কুল ভবনটি নির্মান করে শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখা পরিবেশ সৃষ্টি করার দাবী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply