কালের খবরঃ
ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে গোপালগঞ্জের সরকারি শিশু পরিবারের এতিম শিশুদের মাঝে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করলেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম। তিনি বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর দেড়টায় সরকারি শিশু পরিবারে যান। সেখানে অবস্থানকারী ৩৩জন শিশুকে চেয়ার টেবিলে বসিয়ে ঈদের জন্য রান্না করা উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করেন। খাবার তালিকায় ছিলো সাদা পোলাও, খাসির মাংস, মুগ ডাল, পায়েস, কোমল পানিয় ও রসগোল্লা। খাবার পরিবেশন কালে তিনি শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজ খবর নেন।
এর আগে তিনি শিশু পরিবারে শিশুদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে সদ্য জিআই পন্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া দত্তের রসগোল্লা (মিষ্টি) শিশুদের হাতে তুলে দেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মোঃ গোলাম কবির, সহকারী কমিশনার রোন্টি পোদ্দার, রাসেল মুন্সী, শপথে বৈরাগী, শিশু পরিবারের উপ-তত্বাবধায়ক হাসান সাদিক মাহমুদ সহ শিশু পরিবারের অন্য কর্মকর্তাগণ ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।জেলা প্রশাসকের পরিবেশিত খাবার খেয়ে খুশী এসব শিশু। তারা খুব আনন্দ নিয়ে খাবার খেয়েছে এবং ঈদের খুশী ভাগাভাগী করেছে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি গ্রামের বাদশা বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল্লাহ বিশ্বাস । সে থাকে গোপালগঞ্জ সরকারি শিশু পরিবারে এবং ১৫০নং সরকারি পথশিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হলে আব্দুল্লাহ জানিয়েছে, বাড়িতে গিয়ে ভালো লাগেনা। এখানে বন্ধু আছে অনেক। তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে পারি। এক সঙ্গে খবার খেতে পারি। ঈদের দিন ভালো ভালো খাচ্ছি। সকালে মুরগী মাংস দিয়ে ভুনা খিচুড়ি, নামাজ পড়ার পর সেমাই খেয়েছি। দুপুরে পোলাও, খাসি, সেভেন আপ,রসগোল্লা আবার বিকালে নিমকি আর মিষ্টি। আবার ডিসি স্যার আমাদের নিজের হাতে খাওয়ালেন। সবমিলে আমার খুব মজা হয়েছে। আমি তাই বাড়ি যাবো না। এখানেই থাকবো। বাড়ি গেলে তো এসব খেতে পার তাম না।
অপর নিবাসী মোঃ শাওন শেখ বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা জামা, প্যান্ট, স্যান্ডেল ও ভালো ভালো খাবার পেয়েছি। শিশু পরিবারের স্যাররা এবং ডিসি স্যার আমাদের অনেক ভালো বাসেন। ঈদের দিন ডিসি স্যার আমাদের নিজ হাতে খাবার দিলেন। আমরা খুব আনন্দ পেয়েছি।
শুধু শাওন আর আব্দুল্লাহ নয় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অন্যসব শিশুরাও। তারা বলেন বাড়ি আর এই খানের মধ্যে অনেক তফাৎ। এখানে সময় মতো খাবার ও লেখা পড়া করতে পারি। স্যারেরা আমাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি শারীরীক খোঁজ খবর নেন।বিশেষ করে ডিসি স্যার আমাদের মাঝে ঈদের দিন ছুটে এসেছেন। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় সমাজের পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর ছেলে মেয়েদের আন্তরিক ভাবে সন্তানজ্ঞানে দেখেন। আমরা যারা সরকারের কর্মকর্তা আছি তারাও দরিদ্র মানুষদের সুযোগ সুবিধা সৃস্টিতে আন্তরিক। আর আজ ঈদের দিন।এই দিন দরিদ্র পরিবারের শিশুরা কেমন আছে, কিভাবে ঈদ উদযাপন করছে। কি খাচ্ছে তা দেখার জন্য এবং ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে শিশু পরিবারে আসলাম। ওদের সঙ্গে কথা বললাম, লেখাপড়ার খোঁজ খবর নিলাম, কোন সদস্যা আছে কিনা জানার চেষ্টা করলাম। ভালো একটা সময় কাটালাম। এখানে এসে আমারই খুব ভালো লেগেছে। শিশুরা খুব মজা করেছে। আমার এই কর্মকান্ড অব্যাহত থাকবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply