টেকেরহাট( রাজৈর) প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বরইহাটী আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাসের বিরুদ্ধে অসত্য, বানোয়াট, কু-রুচিপূর্ন বক্তব্য মিডিয়ায় প্রদান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে যাতায়াতে বাঁধা এবং অপমান-অপবাদের প্রতিবাদে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র-ছাত্রীরা মানববন্ধন করেছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় দিগনগর-বনগ্রাম সড়কের বরইহাটি এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় । ঘন্টা ব্যাপি চলা মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অংশ নেয় । মানববন্ধন চলাকালে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আঊয়াল শেখের সভাপতিত্বে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসত্য, বানোয়াট, কু-রুচিপুর্ন বক্তব্য স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে বাঁধা দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাস, বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আলমগীর হোসেন প্রমুখ ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাসের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে ২০ লক্ষ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। আর এমন অভিযোগ ওঠে সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য। এ ব্যাপারে উক্ত পদের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসকসহ কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ ও মানববন্ধন করে প্রার্থীগণ ও এলাকাবাসি ।
অন্যদিকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে প্রেরিত লিখিত অভিযোগে জানাযায়, মুকসুদপুর উপজেলার বরইহাটী আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাস আর্থিক সুবিধা নিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ দিবে বলে এমন গোপন সূত্রে খবর পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবর নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের জন ৫জন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবেদন করে কিন্তু লিখিত অভিযোগ করলেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অভিযোগের বিষয়ে কর্নপাত না করে তার সহযোগিতায় বরইহাটী আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাস প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহন করে গত মঙ্গলবার (২১জুন) নিয়োগ পরীক্ষা নেন । এই নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা লেনদেনের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরও এ নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করেনি ।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আঃ লতিফ শেখ জানান, তার ছেলে অলিউর শেখকে অফিস সহায়ক পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে নগদ ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে আবার বে-সরকারী ব্যাংকের মাধ্যমে ওই ৩ লক্ষ টাকা ফেরত দেন। কারন অন্য প্রার্থীর কাছে বেশি টাকা পেয়ে তাকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে। বিদ্যালয়ের রাস্তা তৈরীর জন্য জমিদাতা ওই স্কুলের সাবেক আয়া সুফিয়া বেগম বলেন, আমি স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিনা বেতনে কাজ করে আসছি । পরে আমার চাকুরীর বয়স শেষ হলে প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাস বলেন আমাকে তুমি স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী যাওয়ার জন্য একটু জায়গা দাও তোমার মেয়েকে আয়া পদে চাকরী দেওয়া হবে। আমি স্যারের এ কথায় আশ্বাসে ভূমিহীন হয়েও মেয়ের চাকরীর লোভে পড়ে নিজের সম্পত্তি দেয়ার পরও তিনি চাকরী না দিয়ে জমি দখল করে রাখে। অপর আরেক প্রার্থী হাফিজা আক্তারের মা আতসী বেগম জানায়, আমার ১৯ শতাংশ জমি স্কুলের নামে জাল দলিল করে নেন প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাস। পরে আমি কোর্টে মামলা করলে মেয়েকে চাকরী দেওয়ার কথা বললে আমি আপোষ মিমাংসায় যাই । কিন্তু আমার মেয়েকে চাকরী দেয়নি ।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আঊয়াল শেখ জানান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে বাঁধা সৃষ্টি করছে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিচ্ছে অভিযোগকারীরা । একজনের টাকা নিয়েছিল তা ব্যাংকের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়েছে বলেও জানান।
এ বিষয়ে স্বপন কুমার দাস জানান আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট।
মুকসুদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহাদৎ মোল্যা বলেন, বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে । প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাসের বিরুদ্ধে নিয়োগে ঘুষ নেয়ার বিষয় কিছু বলতে পারবো না । সেটা তার ব্যাপার। তবে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, অভিযোগ দেখে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply