স্টাফ রির্পোটার,মহাসিন আহমেদ রানাঃ
২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের একটি পরিকল্পনা হলো স্মার্ট বাংলাদেশ ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম এই প্রতিশ্রুতি ও স্লোগান দেন।
১২ই ডিসেম্বর ২০২২ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২ উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী ২০৪১’ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব এবং বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ।সরকার প্রধান আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন স্থাপন করেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়।
চারটি ভিত্তি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার। এগুলো হচ্ছে—স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ।স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ চারটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে অগ্রসর হলে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হবে সময়োপযোগী পদক্ষেপ ।স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট সরকার এর মাধ্যমে সব ধরণের সেবা এবং মাধ্যম ডিজিটালে রূপান্তরিত হবে।অপরদিকে স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করলে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।‘স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিদীপ্ত ও উদ্ভাবনী। এককথায় সব কাজই হবে স্মার্ট। যেমন স্মার্ট শহর ও স্মার্ট গ্রাম বাস্তবায়নের জন্য স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা, স্মার্ট পরিবহন, স্মার্ট ইউটিলিটিজ, নগর প্রশাসন, জননিরাপত্তা, কৃষি, ইন্টারনেট সংযোগ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত করার প্রধান হাতিয়ার হবে ডিজিটাল সংযোগ।স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজের জন্যে ডিজিটাল সংযোগ মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। এ ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপের কথা না বললেই নয়, আর তা হলো ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কক্ষপথে উৎক্ষেপণ সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।বাংলাদেশ এখন বিশ্বের স্যাটেলাইট পরিবারের ৫৭তম গর্বিত সদস্য।’ গত বছর সিত্রাং ঘুর্ণিঝড়ের সময়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বিচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু করতে সক্ষম হয়েছেন।এ ছাড়া স্যাটেলাইটের অব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে বাংলাদেশ প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যে বহুমুখী কার্যক্ষমতা সম্পন্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’ ২০২৪ সালের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করতে যাচ্ছে। কারণ, ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে।’ বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৩৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ক্ষমতা অর্জন করেছে ।এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে ব্যান্ডউইথের সক্ষমতা ৭২০০ জিবিপিএসে উন্নীত করা হবে। তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের পর এটি ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএসে উন্নীত হবে।এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কম্পিউটার ও আইসিটি সুবিধার আওতায় এসেছে। ৮৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৮৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা পাচ্ছে এবং ৮০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষক রয়েছেন, যারা শিক্ষার্থীদের আইসিটি শেখান। কলেজ তথা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অবস্থা আরো ভালো—৯৮ শতাংশ কম্পিউটার বা আইসিটি সুবিধার আওতায় রয়েছে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ যুগে স্মার্ট বাংলাদেশ একটি যুগান্তকারী ধারণা যা বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার পথ দেখাবে। উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানে সফল হোক সকল মহৎ পরিকল্পনা।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply