কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জে অ্যাম্বুলেন্সের দ্রুত গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেলো চালক ও রোগীসহ ৪ জনের। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৪জন। নিহতরা সবাই অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ শহরের আরামবাগ এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, রোগী অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক (মেডিসিন) সামচুল আলম (৬৫), অ্যাম্বুলেন্স চালক মো, মোমিন (৪০), অ্যাম্বুলেন্স হেলপার মোঃ ফয়সালের (৩৫) ও মর্ডাণ সাইক্রিয়াটিক হাসপাতাল লিমিটেডের স্টাফ জুয়েল হাসান (২৫)।
আহত ৩ জনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে এবং এক জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক খান মোঃ শরীফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মানসিক রোগী সামচুল আলম নামে এক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসককে নিয়ে খুলনার সামচুর রহমান সড়কের বাসা থেকে ঢাকার কেরানিগঞ্জের মর্ডাণ সাইক্রিয়াটিক হাসপাতাল লিমিটেডের ম্যানেজারসহ স্টাফরা একটি অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় যাচ্ছিল। রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি গোপালগঞ্জ শহরের আরামবাগ এলাকায় পৌছালে বিপরিত দিক থেকে আসা সদর উপজেলার ঘোনাপাড়াগামী একটি মাটিকাটা স্কেবেটরবহনকারী লোবেটের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে চালক মোঃ মোমিন নিহত হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে অ্যাম্বুলেন্সের রোগী সামচুল আলম যারা যান। আর হাসপাতালে আনার পর পটুয়াখালি জেলার ডুমকি উপজেলার মো. শাহ আলমের ছেলে জুয়েল হাসান ও অ্যাম্বুলেন্স হেলপার মোঃ ফয়সালের মৃত্যু হয়।
আহত চারজনের মধ্যে ১জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকী তিন জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে যেয়ে জানতে পারি অ্যাম্বুলেন্সটির দ্রুতগতি ছিল। সে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লোবেটের সঙ্গে এসে ধাক্কা খেলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহত সামচুল আলমের ছেলে রিশাদুল আলম বলেন, আমার বাবা প্রায় তিন বছর হলে মানসিক রোগী। উনার চিকিৎসার জন্য কেরানীগঞ্জের মর্ডাণ সাইক্রিয়াটিক প্রাইভেট হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল। আগেও এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। বর্তমানে শরীরের অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে কল করা হয়। হাসপাতালের লোকজনই বাবাকে নিয়ে রওনা হয়। পথিমধ্যে এই দুর্ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শী থ্রিহুলার চালক আফজাল হোসেন বলেন, ঘটনা আমি দেখেছি। অ্যাম্বুলেন্সটি গতি ছিল বেশী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি অ্যাম্বুলেন্সটি লোবটের মাঝামাঝি এসে ধাক্কা খায়। এতে বিকট শব্দ হয়। এসময় দুইটি গাড়ী দুই দিকে ছিটকে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় নিহত ও আহতদের গোপালগঞ্জ হাসপাতালে আনা হয়।
অপর দিকে, একই সড়কের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর রাতইল হর্টিকালচারের সামনে প্রাইভেট কারের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা গ্রামের মোঃ সলেমান শরীফের ছেলে মোটরসাইকেল চালক আলামিন শরীফ নিহত হয় বলে হাইওয়ে থানা পুলিশের পরিদর্শক খান মোঃ শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ জোবায়ের আহমেদ জানিয়েছেন, পরে আইনী প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া নিহতদের পরিবার প্রতি নগদ ২৫ হাজার ও আহতদের পরিবার প্রতি ১০ হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply