কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত মেধাবী স্কুল ছাত্র মুজাহিদ হাওলাদার (১৬) গত ১২দিন ধরে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে মারা গেছে।বুধবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মুজাহিদ হাওলাদার মারা যায়। তার মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় জড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করে। তবে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশের হস্তক্ষেপে কোন অপ্রতিকর ঘটনা ছাড়াই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মুজাহিদ উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের কুরপালা গ্রামের সেকেন্দার হাওলাদার ছিকুর ছেলে ও মেধাসিঁড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে কুরপালা গ্রামের হাওলাদার বংশের সাথে শেখ বংশের বিরোধ চলে আসছিল। এরই সূত্র ধরে গত ৮ এপ্রিল সড়কের পাশে একটি গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে হারুন হাওলাদারের ছেলে ওয়ালিদ হাওলাদারের সাথে কালাম শেখ ও তরিকুল শেখের কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে তরিকুলের লোকজন স্কুল ছাত্র মুজাহিদকে মারপিট ও চুরিকাঘাত করে। এতে মুজাহিদ গুরুতর আহত হয়। আহত মুজাহিদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এখানে পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুজাহিদ হাওলাদারের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় হঠাৎ করে মুজাহিদ হাওলাদার অসুস্থ হলে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
মুজাহিদ হাওলাদারের পিতা সেকেন্দার হাওলাদার ছিকু বলেন, এই ঈদের পরে আমার ছেলের এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা। তাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে মুজাহিদকে নিয়ে বাড়ি চলে আসি। বুধবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে মুজাহিদ অসুস্থ হলে পড়ে। তাকে আমরা দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাই। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা বলেন, আমার বাবা আর বেঁচে নেই। আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।
এদিকে মুজাহিদ হাওলাদার মারা যাওয়ার পরে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ও তাদের পরিবারের লোকজন বাড়ি ঘরে তালা মেরে পালিয়ে যায়। এজন্য তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন বলেন, একটি গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে মেধাবী ছাত্র মুজাহিদ হাওলাদার ছুরিকাঘাতে আহত হয়। মুজাহিদ হাওলাদার আমার চাচাতো ভাই। ওই দিনের ঘটনায় আমার পিতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান হাওলাদার এলাকায় ছিলেন না। তার পরও আমার বাবাকে প্রধান আসামী করে প্রতিপক্ষ বায়জিদ শেখ বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় মামলা দায়ের করে। মামলাটি কোটালীপাড়া থানায় এফআইআর হয়েছে। আমার পিতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গাছ কাটা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মুজাহিদ হাওলাদারের লাশ ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ পাঠানো হয়েছে ।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply