বাশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন, প্রভাতফেরি, আলোচনা সভা, মসজিদে দোয়া মাহফিল, মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা, শিশুদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা ও উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে ৫০১নং কক্ষে ‘বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ভাষা-ব্যবহার-প্রকৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব, প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাখাওয়াৎ আনসারী এবং বিশেষ আলোচক ছিলেন ট্রেজারার ড. মোঃ মোবারক হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সালেহ আহমেদ, রেজিস্ট্রার মোঃ দলিলুর রহমান, প্রক্টর ড. মোঃ কামরুজ্জামান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. মোঃ আবু সালেহ, শিক্ষার্থী মাহমুদ শেখ প্রমূখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ ফায়েকুজ্জামান মিয়া ও বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার এন্ড বাংলাদেশ স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক সানিয়া আক্তার।
আলোচনা সভার সভাপতি ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব বলেন, একটি সমৃদ্ধ জাতি গড়ে তোলার জন্য সকল ক্ষেত্রে মাতৃভাষার চর্চা বাড়াতে হবে। আমাদের মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করতে হলে রাজনীতিবীদ ও শিক্ষাবীদদের এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষাকে শক্তিশালী করার জন্য বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করেছেন।
প্রধান আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাখাওয়াৎ আনসারী বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ভাষা ব্যবহারের প্রকৃতির ঐতিহাসিক ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো তার মাতৃভাষা আর শিক্ষাক্ষেত্রে মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি আরো বলেন, বিভক্ত শিক্ষাব্যবস্থায় একটি জাতি সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে না। বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যম হওয়ায় এদেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তিনি এদেশের সকল স্তরের শিক্ষাব্যবস্থায় শুধুমাত্র বাংলা মাধ্যমে চালু করার জোর দাবী জানান।বিশেষ আলোচক ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ মোবারক হোসেন বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এর আগে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুবের নেতৃত্বে একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ০১ মিনিটে ক্যাম্পাসের শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় আরো শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ট্রেজারার ড. মোঃ মোবারক হোসেন, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রলীগ, অফিসার্স এসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি। সকাল পৌনে ৮টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুবের নেতৃত্বে প্রভাতফেরি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় এবং সকাল ৮টায় সকল হল, বিভিন্ন বিভাগ এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিকে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিকালে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
এছাড়া শিক্ষক সমিতি বিকেল ৪টায় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা ও উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply