বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে আলোচনা সভা, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চত্বরের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন, মসজিদে দোয়া ও মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
বুধবার(১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় একাডেমিক ভবনের ৫০১নং কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মানবিকী অনুষদের ডিন মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া, প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ কামরুজ্জামান, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ আবু সালেহ, ইতিহাস বিভাগের সভাপতি মোছাঃ সানজীদা পারভীন, স্বাধীনতা দিবস হলের প্রভোস্ট মাহবুব আলম, বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতা শেখ তারেক প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার এন্ড বাংলাদেশ স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক সানিয়া আক্তার।
সভার সভাপতি ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানানোর অর্থই হলো দেশ প্রেমে জাগ্রত হওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবী ও দার্শনিক। তিনি ছিলেন নিপিড়ীত জনগণের কন্ঠস্বর। নতুন প্রজন্মকে বুঝাতে হবে যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাদ দিয়ে এদেশ সঠিকভাবে গড়ে উঠবে না।
মানবিকী অনুষদের ডিন মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া তরুণ প্রজন্মের প্রতি উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা যদি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের ইতিহাস এবং কেন শহীদ বুদ্ধিজীবীরা তাদের জীবন উৎসর্গ করলেন তা সঠিকভাবে জানতে না পারি তাহলে আমরা দেশের জন্য কাজ করতে পারব না।
প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ যাতে মাথা তুলে না দাঁড়াতে পারে তার জন্য পাক হানাদার বাহিনী এদেশের দোসরদের সহায়তায় দেশের সূর্য সন্তানদের হত্যা করে। সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করার মাধ্যমেই এদেশ কলঙ্কমুক্ত হবে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ আবু সালেহ বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা হিসেবে এখনও স্বীকৃতি পায়নি। এ স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষক সমাজকেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাজনৈতিক ও কুটনৈতিকভাবে তৎপরতা চালাতে হবে।
ইতিহাস বিভাগের সভাপতি মোছাঃ সানজীদা পারভীন বলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল যাতে এদেশ কখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
স্বাধীনতা দিবস হলের প্রভোস্ট মাহবুব আলম বলেন, বর্তমানে বুদ্ধিজীবীরা দেশ গঠনে দায়িত্ব পালন করছেন না এবং আমরা অনেক ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুৎ হচ্ছি। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গঠনে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
ছাত্রলীগ নেতা শেখ তারেক বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুবের নেতৃত্বে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চত্বরে জয়বাংলা পুকুরপাড়স্থ শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে এবং সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। শিক্ষক সমিতি, ছাত্রলীগ, কর্মচারী সমিতি, বিভিন্ন বিভাগ ও হল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার শান্তি কামনা করে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং বিকেলে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
এছাড়া ইতিহাস বিভাগের আয়োজনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সন্ধ্যায় শহীদ মিনার চত্বরে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply