বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কাশিয়ানীতে শিক্ষক সমিতি পুনঃগঠিত গোপালগঞ্জে সিএমএসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তা ঋন বিতরণ মসজিদ ভাংচুর ও আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন বেকার মুক্তি পরিষদের কাশিয়ানী শাখার বহিস্কৃত সভাপতিকে গ্রেপ্তারের দাবীতে গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সংবাদ সম্মেলন ভারতে হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে গোপালগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ টুঙ্গিপাড়ায় নারী শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল বিতরন মাদক সন্ত্রাস যাবতীয় উন্নয়নের পথে প্রধান অন্তরায়- জেলা প্রশাসক সরকারি জায়গা দখল নিয়ে মুকসুদপুরে দুই ইউনিয়নবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ। আহত অর্ধশতাধিক গোপালগঞ্জে আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের উদ্ধোধন মুকসুদপুরে দুই ইউনিয়নবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ। আহত অর্ধ শতাধিক

শ্রেণীকক্ষের অভাবে পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২, ১২.০৩ এএম
  • ১৭৫ Time View

সুমাইয়া আশা, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) শ্রেণীকক্ষের অভাবে নিয়মিত পাঠদানে অংশ নিতে পারছেনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এমনকি রুটিনমাফিক সেমিষ্টার পরীক্ষাও দিতে পারছেনা তারা। এতে সেশনজটের মতো মহামারীর সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪টি বিভাগের মধ্যে ইতিহাস বিভাগ, বাংলা বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ, আর্কিটেকচার বিভাগ, ফুড এন্ড এগ্রো প্রসেসিং বিভাগ, পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সহ আরও বেশ কয়েকটি বিভাগের ছাত্র ছাত্রী।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ল্যাব রুমের অভাবে ল্যাব ক্লাস করা যাচ্ছেনা, অতি গুরুত্বপূর্ণ ল্যাব ক্লাসটিও করা লাগছে অস্থায়ী কোনো শ্রেণীকক্ষে, যেটি ল্যাব ক্লাসের জন্য অনুপযোগী। শিক্ষার্থীর তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমানে শ্রেণীকক্ষ নেই। এতে করে তারা নিয়মিত পাঠদান করতে পারছে না। এমনকি বেশ কয়েকটি বিভাগ নিয়মিত সেমিষ্টার পরীক্ষাতেও অংশগ্রহণ করতে পারছে না। শিক্ষার্থীরা জানায়, শ্রেণীকক্ষের অভাবে আমরা নিয়মিত ক্লাস করতে পারছিনা, একটি ক্লাস একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় হয়, আরেকটি হয় উপর তলায়। এভাবে এলোমেলো ভাবে ক্লাস করা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ইতিহাস বিভাগ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ শরিফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, বর্তমান সময়ের আলোচিত সমস্যা ক্লাস রুম সংকট নিয়ে, ক্লাস রুম নিয়ে কেন শিক্ষার্থীদের কে আন্দোলন করতে হবে, সেই করোনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বিভাগ গুলো কে নিদিষ্ট পরিমাণ ১২/১৬ স্পান করে রুম  বণ্টন করে দেয়া হবে। কিন্তু এর সমাধান আজও পেলাম না, গত চার বছরে আজ এখানে কাল ওখানে এভাবে ক্লাস করে আসতেছি। তিনি বলেন, ক্লাস রুম সংকটের কারণে গত সেমিস্টারে দীর্ঘদিন ক্লাস করতে পারিনি। এতে করে আমরা সেশনজটের মত মহামারির শিকার হয়ে পরেছি। পরবর্তীতে প্রশাসন কে বলে গ্যারেজ থেকে নতুন একাডেমিক বিল্ডিং এর অষ্টম তলা পুরোপুরি কাজ শেষ হতে না হতেই দুটি রুমে কাঠের বেঞ্চ তুলে সেমিস্টার টা শেষ করি, মাঝখানে কৃষি বিভাগের ভাইবন্ধুদের সাথে ঝামেলাও হয়, কিন্তু আমরা ঝামেলা করতে চাই না বলে প্রশাসন কে জানিয়ে দেই আপনারা যখনই বলবেন আমরা রুম ছেড়ে দিবো এবং ছেড়ে ও দিয়েছি অনেক দিন হলো। এখন আমরা ক্লাসের বাহিরে কি করা উচিত ইতিহাস বিভাগের।

এদিকে রবিবার (২৩অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী শ্রেণীকক্ষ বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগীর সভাপতির রুমে তালাবদ্ধ করে রেখেছে বলে জানা যায়। এবং শ্রেণীকক্ষ বিন্যাসে অসামঞ্জস্য থাকায় ইতিহাস বিভাগের সাথে পরিসংখ্যান বিভাগের মধ্য মনোমালিন্য দেখা দিয়েছে।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য পূর্বে বরাদ্ধকৃত শ্রেণীকক্ষ ছিল একটি। কিন্তু বর্তমানে তাদেরকে যে শ্রেণীকক্ষটি প্রদান করা হয়েছে সেটি শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক ছোট। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে বর্তমানে ব্যাচের সংখ্যা আটটি (৮) এবং প্রতি ব্যাচে ৮০-১০০ জন শিক্ষার্থী ক্লাস করি, সে তুলনায় বর্তমানে পাওয়া রুমটি আমাদের জন্য পর্যাপ্ত না। এই রুমটিতে ৪০-৫০জন শিক্ষার্থীর অধিক শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হতে পারবেনা।

এবিষয়ে বাংলা বিভাগ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্থায়ী রুমের অভাবে ছিলাম। যার কারনে আমরা নিয়মিত শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত হতে পারিনি এমনকি উপস্থিত হতে পারলেও রুটিনমাফিক ক্লাস করতে পারিনি। অতিরিক্ত শিক্ষার্থী তবে সে অনুযায়ী ক্লাসরুম সংকট ছিল। তবে এখন আমাদেরকে যে রুমটি দেওয়া হয়েছে সেটি আমাদের শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক ছোট।

এদিকে বাংলা বিভাগের সভাপতি জাকিয়া সুলতানা মুক্তা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের শুরু থেকে আমরা দুই (২)রুমে পাঠদান কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছি৷ কিন্তু প্রতিবছর শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার কারনে শ্রেনীকক্ষের তুলনায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। যার কারনে আমরা নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে”। তিনি বলেন, “এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বৈঠক হয়েছে। প্রশাসন আমাদেরকে একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলার শ্রেণীকক্ষের পরিবর্তে প্রশাসনিক ভবনে যেকোনো একটি ফ্লোরে শ্রেণীকক্ষ বুঝিয়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেছেন। তবে এটি সমাধান হতে আরো এক(১) সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি”। তবে নতুন করে বাংলা বিভাগ প্রশাসনিক ভবনের পঞ্চম তলার ৫০৩নাম্বার রুমটি পেয়েছে বলে জানা যায়।

অন্যদিকে, রুম সংকট নিয়ে ইতিহাস বিভাগ ও পরিসংখ্যান বিভাগের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় রুম বন্টন অনুযায়ী একাডেমিক ভবনে নতুন করে ইতিহাস বিভাগ ১৫স্প্যানের মধ্যে ভবনের পঞ্চম তলায় ৭স্প্যান এবং দশম তলায় ৮স্প্যান পেয়েছে কিন্তু বর্তমানে পরিসংখ্যান বিভাগ একই স্প্যানের রুমগুলোতে ক্লাস করছে বলে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান। অন্যদিকে পরিসংখ্যান বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত রুম অনুযায়ী একই ভবনের তৃতীয় তলায় ৭স্প্যান এবং চতুর্থ তালায় ৫স্প্যান সহ মোট ১২স্প্যানের রুম দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে রুম বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। এটি নিয়ে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রুম দখল নিয়ে মানসিক উত্তেজনা লক্ষ করা গিয়েছে।

 

এবিষয়ে পরিসংখ্যান বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেজবাহ্ রহমান সুপ্ত বলেন, পরিসংখ্যান বিভাগে বর্তমানে নয়টি(৯) ব্যাচের শিক্ষার্থীর সংখ্যা চার শতাধিক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ইতিহাস বিভাগকে বর্তমানে আমাদের ব্যবহৃত রুমটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে৷ আইনগত ভাবে তারা এখন রুমের দাবিদার কিদাবিদার কিন্তু আমরা আমাদের ১২স্প্যানের রুমগুলো এখনও বুঝে পাইনি। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এভাবে অহৈতুকি রুম বন্টন করে আমাদের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে উদ্ধৃতপূর্ন মনভাব তৈরি করে দিয়েছে যেটি আমাদের জন্য নেতিবাচক হচ্ছে।

 

শ্রেণীকক্ষ বিন্যাসজনিত সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, আমরা প্রতিটি বিভাগের শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে শ্রেণীকক্ষ বন্টন করে দিয়েছি। কিন্তু শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা সেটি মেনে নিতে পারছেনা। যার কারনে শিক্ষার্থীরা দু’দিন পর পর প্রশাসনিক ভবনে তালা দিচ্ছে। এতে করে প্রশাসনিক কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনিভাবে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ হচ্ছে৷ তিনি বলেন, কোনো বিভাগ যদি শ্রেণীকক্ষ বিন্যাস মেনে নিতে না পারে তাহলে সেটি সেই বিভাগের ব্যাপার।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION