কালের খবরঃ
দীর্ঘ ৬৩ বছর পর গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত পাঁচুড়িয়া খাল যৌবন ফিরে পেতে চলছে। খালের প্রবেশ মুখ খুলে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করায় শহরবাসীর মধ্যে খুশির আমেজ বিরাজ করছে। শনিবার ( ১ অক্টোবর) সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত পাঁচুড়িয়া খালের সাথে মধুমতি নদীর পুণঃসংযোগ কাজের শুভ উদ্বোধন করা হয়।শহরের পাঁচুড়িয়া পৌর নিউ মার্কেট এলাকায় এ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, পৌরসভার মেয়র শেখ রকিব হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন নাহার, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি শেখ রুহুল আমিন, গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসেন, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফাইজুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহসীন উদ্দিন, সহকারি কমিশনার (ভূমি ) মো. মামুন খানসহ পৌর কাউন্সিলরগণ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত পাঁচুড়িয়া খাল দিয়ে টুঙ্গিপাড়া থেকে নৌপথে গোপালগঞ্জ আসা যাওয়া করতেন। ১৯৫৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার এ খালের মুখটি বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘ বছর খালটির পানি প্রবাহ বন্ধ থাকায় দখল আর দূষণে প্রায় মৃত হয়ে ছিল খালটি।
দীর্ঘ ৬৩ বছর পর এ খালটির বন্ধ মুখ অবমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহন করেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। এতে দুষণ আর দখলের হাত থেকে রক্ষা পাবে খালটি। দীর্ঘদিন খালের দুই পাড়ে বসবাস করা মানুষ দুর্গন্ধ মুক্ত নির্মল বাতাস উপভোগ করতে পারবেন। খালের পানি দিয়ে তারা নিত্যদিনের প্রয়োজন মিটাতে পারবেন। খালের মাছ ধরে মৎস্যজীবীরা জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। এতে নৌ চলাচলের সুবিধাসহ মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
খালের মুখ উন্মুক্ত করার খবরে বিপুল সংখ্যক মানুষ খাল পাড়ে ভীড় করেন। তাদের চোখে মুখে ছিলো আনন্দ ও উচ্ছ্বাস। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী দাবী থাকলেও খালটি দুষণ আর দখলের হাত থেকে রক্ষায় উদ্যোগ নেয়নি কেউ।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ রুহুল আমিন বলেন, এই খালটি দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নৌকায় করে টুঙ্গিপাড়া থেকে গোপালগঞ্জ শহরে আসতেন। জাতির পিতার স্মৃতিধন্য খালটিতে আবার পানি প্রবাহ হবে এটা খুব আনন্দের খবর।
গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. রকিব হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে খালটির পানি প্রবাহ আটকে রাখায় কচুরিপনা ও ময়লার স্তুপ তৈরী হয়েছিলো। দখলে ছোট হয়ে যাচ্ছিল খালের প্রশস্থতা। পানি পচে দুর্গন্ধ ও মশামাছি অভায়রণ্যে পরিণত হয়েছিলো শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহমান খালটি।
তিনি আরো বলেন, পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর খালটির ময়লার স্তুপ অপসারণ ও কচুরিপনা পরিস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। পরবর্তিতে খালটি পানি প্রবাহ পুণঃসঞ্চালনের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। পরবর্তিতে এই এলাকার সৌন্দর্য বর্ধনসহ নানাবিধ কাজ করা হবে। এটি শহরবাসীর একটা পছন্দের স্থান হবে।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত পাঁচুড়িয়া খালটিতে দীর্ঘদিন ধরে পানি প্রবাহ বন্ধ ছিল। এই কারনে দুষণ আর দখলে খালটি সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। জনগনের সুবিধার কথা চিন্তা করে আমরা মধুমতি নদীর সাথে খালটি পুণঃসংযোগ স্থাপন করে অবাধ পানি প্রবাহের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি এবং উদ্যোগ নিয়েছি। শুধু মুখ খুলে দেয়া নয় এ খালটিকে ঘিরে নানামুখি উদ্যোগও গ্রহন করা হয়েছে। এটি শহরবাসীর একটি দর্শনীয় স্থান হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply