কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার উনশিয়া গ্রামে তুচ্ছ এক বিষয়কে কেন্দ্র করে ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই নিহত হয়েছে। বিষয়টি ছিল, বসত বাড়ির ছাদের পানি পড়া নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ, যা পরিণতি হয় মর্মান্তিক এক হত্যাকাণ্ডে।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রবিবার রাতে, উনশিয়া গ্রামের ঘোষ বাড়িতে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত সুধীর ঘোষের ছেলে, ব্যবসায়ী আনন্দ ঘোষ ও তার তিন ভাই , গৌরাঙ্গ ঘোষ, কালা ঘোষ,ও যুগল ঘোষ এর মধ্যে পূর্ব থেকে একটি বিরোধ চলছিল। উনশিয়ার বাড়ির ছাদ থেকে পানি পড়াকে কেন্দ্র করে এই বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে। রবিবার বৃষ্টি চলাকালীন সময়ে রাতের বেলায় আনন্দ ঘোষের সাথে তার ভাইদের বাকবিতণ্ডা হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গৌরাঙ্গ, কালা, যুগল এবং তাদের ভাতিজা নয়ন ঘোষ ও সৌরভ ঘোষ লাঠি দিয়ে আনন্দ ঘোষকে আঘাতে মারাত্মত আহত করে।এসময় ঠেকাতে গিয়ে আনন্দ ঘোষের স্ত্রী মিতা ঘোষ আহত হয়।
পরে, আহত অবস্থায় আনন্দ ঘোষকে পরিবারের সদস্যরা কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।এ বিষয়ে আনন্দ ঘোষের স্ত্রী, মিতা ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, দিনে বৃষ্টি হয়েছিল, ছাদ থেকে পানি পড়ায় আমার দেবর ও ভাসুররা এসে আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আনন্দ ঘোষের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে, অথৈ ঘোষ কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বাবা আমাকে নার্স বানাতে চেয়েছিলেন। আমারও সেই স্বপ্ন ছিল, কিন্তু এখন সেটা আর সম্ভব নয়। আমার কাকা ও কাকাতো ভাইরা মিলে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।
প্রতিবেশী বাচ্চু হাওলাদার জানান, ছাদের পানি পড়া নিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকায় সালিশ বৈঠক হয়েছে, তবে সালিশকারিরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত এমন একটি তুচ্ছ কারণে ভাইয়ের হাতে আনন্দ ঘোষ প্রাণ হারালেন। এটা খুবই দুঃখ জনক।
এ ঘটনায় গৌরাঙ্গ, কালা এবং যুগল ঘোষদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি।তবে কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, আনন্দ ঘোষের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে, এবং অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION