মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কোটালীপাড়ায় যুবলীগ নেতা পদত্যাগ করে যুবদলে যোগদান গোবিপ্রবিতে ২৭২ অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী পেল মেধা বৃত্তি গোপালগঞ্জে তুলার কারখানার হলারে গামছা পেঁচিয়ে ফাঁস লেগে শ্রমিকের মৃত্যু নিখোঁজের ২১ দিন পর গোপালগঞ্জে ব্যবসায়ীর গলিত মরদেহ উদ্ধার, গ্রেপ্তার-১ গোপালগঞ্জ শহরের একটি হোটেলের কক্ষ থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার প্রান্তিক জনগণের উন্নয়ন ও পরিবেশ সচেতনতায় কর্মশালা, প্রকাশনা উৎসব এবং তথ্যচিত্র প্রদর্শনী কোটালীপাড়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু। গোপালগঞ্জে এমএস মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যানের পিতার অষ্টম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত গোবিপ্রবিতে প্রয়াত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্মৃতিতে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত গোপালগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবী করেছে বঞ্চিত পাঁচ প্রার্থী

প্রতি শুক্রবার দরিদ্রদের মুখে হাসি ফুটান হানজালা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫, ২.৫৮ পিএম
  • ১৯৮ Time View

কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ

শুক্রবার, সময় দুপুর সোয়া দুইটা। জুম্মার নামাজ শেষ হয়েছে ১৫/২০ মিনিট আগে। মসজিদের গেটে ভিক্ষুকদের ভিড়। হঠাৎ প্যাকেট খাবার নিয়ে হাজির ২৫/৩০ বছরের এক যুবক। যুবকটি খাবার নিয়ে আসতেই উপস্থিত ভিক্ষুকদের মুখে ফুটে উঠলো আনন্দের হাসি। একে একে সকলের হাতে যুবকটি তুলে দিলো প্যাকেট খাবার।জানাগেলো, যুবকটির নাম হানজালা ফকির। বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামে।হানজালার পিতা আব্দুস সাত্তার একজন দিনমজুর। আব্দুস সাত্তারের একটি মাত্র পুত্র সন্তান হানজালা। এছাড়া তার পাঁচটি কন্যাও রয়েছে।

হানজালা গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এম এ পাশ করেছেন। বর্তমানে কোটালীপাড়া উপজেলার মাস্টার রোলে একটি ব্যাংকে পিয়ন পদে ১২ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করছেন।

নিজের বেতনের টাকা দিয়ে ২০২১ সাল থেকে প্রতি শুক্রবার হানজালা পথে-ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা পাগল, ভিক্ষুকদের দুপুরে খাওয়ানো শুরু করেন। এরপর শুক্রবার উপজেলা সদরের বিভিন্ন মসজিদের গেটে দাঁড়িয়ে থাকা ভিক্ষুকদেরকেও সে খাবার দেওয়া শুরু করেন।

হানজালার খাবার মেনুতে রয়েছে পোলাউ-রোস্ট, বিরিয়ানি, ডিম-খিচুড়ি। একেক সপ্তাহে একেক ধরনের খাবার তিনি পরিবেশন করেন। খাবার রান্না ও প্যাকেট তিনি নিজ হাতেই করেন বলে জানিয়েছেন হানজালা ফকির।

তিনি বলেন, প্রায় ৫ বছর ধরে আমি এভাবে প্রতি শুক্রবার পাগল ও ভিক্ষুকদের মাঝে খাবার পরিবেশন করে আসছি। এই কাজটি আমার ভালো লাগা থেকে একা শুরু করেছিলাম। এখন এর পরিধি বাড়ার কারণে আমার একার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমার কিছু বন্ধু বান্ধব আমাকে এ কাজে সহযোগিতা করছে। আমার কষ্ট হলেও আমি আগামীতেও এ কাজ চালিয়ে যেতে চাই।

ঘাঘর বাজার ডাকবাংলো জামে মসজিদের সামনের কয়েকজন ভিক্ষুক বলেন, “আমরা প্রতি শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজের পর এখানে হাজির হই। হানজালা ভাই আমাদেরকে দুপুরের খাবার দেন। কোন শুক্রবার বিরিয়ানি, কোন শুক্রবার পোলাউ-মাংস, কোন কোন শুক্রবার খিচুরি ডিম দেন। আমরা দোয়া করি হানজালা ভাই যেন ভালো থাকেন।”

হানজালার পিতা আব্দুস সাত্তার বলেন, “আমার দুটি ছেলে ও পাঁচটি মেয়ে ছিল। বড় ছেলেটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এখন পুত্র সন্তান শুধু হানজালা একা। ও যা করে এতে আমাদের কোন রাগ বা ক্ষোভ নেই। বরং ওর এই কাজে আমরা আনন্দিত।”

তিনি আরো বলেন, “ও প্রতি শুক্রবার নিজে বাজার করে, নিজে রান্না করে, আবার নিজেই প্যাকেট করে। আমরা পারিবারিকভাবে ওকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করি।”

লেখক, কবি মিটু রায় বলেন, “হানজালা আমাদেরকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন মানবতা কাকে বলে। একটি ব্যাংকে মাস্টার রোলে মাত্র ১২ হাজার টাকায় চাকরি করে তা দিয়ে প্রতি শুক্রবার দুপুরে ভিক্ষুকদের খুঁজে খুঁজে উন্নতমানের খাবার দিচ্ছেন। এটা একটি মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই মানবিক কাজের জন্য হানজালা ফকিরকে ধন্যবাদ জানাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, “এই মহৎ কাজের জন্য হানজালা যদি কখনো আমাদের কাছে সহযোগিতা চায়, তা হলে আমরা উপজেলা প্রশাসন থেকে তাকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করবো।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION