কালের খবরঃ
গত এক সপ্তাহ ধরে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে পঁচাত্তরোর্দ্ধ এক বৃদ্ধা নারী। কিছু যুবক ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ডাস্টবিনের পাশ থেকে তুলে এনে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিসিন বিভাগের ৭ তলার নারী কামরার বাইরে রেখে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ছেলে মেয়ে বা আপন জনের কোন সন্ধ্যান না মেলায় রোগীকে বাড়ি পাঠাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এই বৃদ্ধার এমন করুন পরিনতি দেখে অনেকেকেই আফসোস করতে দেখা গেছে।
আজ মঙ্গলবার (২৭মে) বিকেলে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সরেজমিন দেখা গেছে,পঁচাত্তরোর্দ্ধ বৃদ্ধা হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছে। বেশ লোকজন চারপাশি ভিড় করে দাড়িয়ে দেখছে। বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেন এই বৃদ্ধার কোন লোকজন নেই। কয়েকজন যুবক তাকে হাসপাতালে রেখে চলে গেছে। আর তারা আসেনি। বৃদ্ধার সাথে কথা বলার চেষ্ট করা হলো। তিনি কোন কথা বলতে পারছেন না।কেউ তাঁর নাম কিংবা ঠিকানা জানেন না।কিছু হৃদয়বান যুবক এক গত সপ্তাহ আগে জেলা সদরের ঘোনাপাড়ায় চক্ষু হাসপাতাল এলাকায় ডাস্টবিনের পাশে পড়ে থাকতে দেখে এই বৃদ্ধাকে। দয়াপরবশত হয়ে তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করে রেখে যায়। সেই থেকে ওই বৃদ্ধার জায়গা হয়েছে হাসপাতালের মেঝে।মৃত্যুর জন্য প্রহর গোনা এই বৃদ্ধার কাছে আপনজন বলতে কেউ নেই। না আছে কোন সন্তান, না আছে কোন আত্মীয়-স্বজন।
ধারনা করা হচ্ছে তার কোন স্বজনই হয়তোবা রাস্তার পাশে এভাবে ফেলে রেখে চলে গেছে। কথা বলতে না পারায় কেউ তার পরিচয় বা ঠিকানা জানতে পারছেনা।স্বজনদের কোন ঠিকানাও পাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।যারা তাকে হাসপাতালে নিয়েে এসেছে তাদের কোন খোঁজ খবর নেই। হাসপাতালের আয়া বা ওয়ার্ড বয় যারা আছে তারা যেটুকু পারছে দেখভাল করছে ওই বৃদ্ধাকে।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, খাওয়ানো সবই করছেন হাসপাতালের পক্ষ থেকে।
গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে অজ্ঞাতনামা এক মহিলা ভর্তি হয়েছেন। তাকে যারা নিয়ে এসেছেন তারাও নাম ঠিকানা বলতে পারেনি। এই ধরনের রোগী হাসপাতালে মাঝে মধ্যে আসে। নৈতিকতা থেকে আমরা তাদের চিকিৎসা দিয়ে থাকি। রোগী দেখে মনে হচ্ছে তিনি খুব ক্ষুধার্ত । অপুস্টির শিকার। আপনজন বা দেখার লোক না থাকলে সে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে যাবে। আমরা তাকে যথাসাধ্য চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। যত্মসহকারে খেয়াল রাখা হচ্ছে। আপনজনদের কাছে থাকতে পারলে তিনি দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠবে। আশাকরি আপনজনেরা তাকে বাড়ি নিয়ে যাবেন।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply