শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মুকসুদপুরে অপহরণের ১৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৯ মাসের শিশু রুম্পা উদ্ধার গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো বাইসাইকেল প্রতিযোগিতা টুঙ্গিপাড়ায় গাড়ি ভাংচুর ও মশাল মিছিল মামলায় দুই আ.লীগ নেতা কারাগারে গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর জয়নগর ফেরী ঘাট উদ্বোধন , দুই জেলার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে কোটালীপাড়ায় ভ্যান চাপায় শিশু নিহত আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণে বিরত থাকতে সেলিমুজ্জামান সেলিমের নির্দেশ এসএম জিলানী মনোনয়ন পাওয়ায় কোটালীপাড়ায় বিএনপির আনন্দ মিছিল বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা। কে পেলেন কোন আসন। দেখুন পূর্ণ তালিকা শিক্ষক কালিপদ মন্ডলের ২০তম মৃত্যু বার্ষিকী সালিশ বা দাঙ্গা-ফ্যাসাদে না জড়াতে কর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দিলেন- সেলিমুজ্জামান

ব্রি ধান-৮ খাদ্য নিরাপত্তার হাতছানি দিচ্ছে

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১.১৭ পিএম
  • ১৭১ Time View

কালের খবরঃ

খাদ্য নিরাপত্তার অর্থ হলো অবাধ খাদ্য সরবরাহ। সারাবছর খাদ্যের পর্যাপ্ত প্রাপ্যতা ও মানুষের খাদ্য ভোগের অধিকার। এ অধিকার নিশ্চিতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত  ব্রি হাইব্রিড ধান-৮ ব্যাপক ভূমিকা রাখছে । অধিক  ফলন দিতে সক্ষম এ ধান চাষাবাদ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। গোপালগঞ্জ জেলায় এ বছর ১৫ হেক্টর জমিতে ধানটির চাষাবদ হয়েছে। হেক্টরে এ ধান সাড়ে ১০ টন ফলন দিয়েছে।

গত বছর   গোপালগঞ্জ জেলায় প্রথম  ৮ হেক্টর জমিতে এ ধানের আবাদ হয়। এ বছর ৭ হেক্টর জমিতে ব্রি হাইব্রিড ধান৮ এর আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।  এই জাতের ধান দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের হাতছানি দিচ্ছে বলে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের  গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও মূখ্য  বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমিনা খাতুন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এ কর্মকর্তা  আরো জানান, দেশে প্রচলিত  হাইব্রিড জাতের ধানের  চালের ভাত মোটা ও আঠালো । তাই অধিকাংশ মানুষ হাইব্রিড চালের ভাত খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু  ব্রি হাইব্রিড ৮ ধানের  আকৃতি  লম্বা ও চিকন । ভাত  ঝরঝরে। খেতে সুস্বাদু। তাই এ ধানের ভাত  সবার কাছে পছন্দের ও সমাদৃত । এ ধানের জীবনকাল ১৪৫ দিন থেকে ১৪৮ দিন। ভালো পরিচর্যা পেলে এ জাতের ধান হেক্টরে ১১ থেকে ১২  টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। ধানটিতে তেমন কোন রোগ বালাই নেই। সেচ, সার ও কীটনাশক  সাশ্রয়ী ।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চরগোবরা গ্রামে ব্রি হাইব্রিড ধান৮ আবাদকারী  কৃষক, নয়ন মালাকার , তসিকুর রহমান খাঁ  বলেন, আমরা দীর্ঘ বছর হীরা হাইব্রিড ধান-২, এসএল-৮-সহ অনেক জাতের হাইব্রিড ধানের আবাদ করে আসছি । ওইসব জাত হেক্টরে ৮ থেকে সাড়ে ৮ টন ফলন দিয়ে থাকে । কিন্তু ব্রি হাইব্রিড৮ ধান চাষাবাদ করে শতাংশে এক মনের বেশি ফলন পেয়েছি। সে হিসাবে হেক্টরে এই ধান সাড়ে ১০ টন ফলন দিয়েছে। এ ধানের চাল লম্বা,। ওজনও বেশি। প্রতিটি ছড়ায় ধানের পরিমাণও বেশি পেয়েছি। জমিতে আগে এত ধান ফলেনি। এই ধান চাষাবাদে সেচ, কীটনাশক ও সার খরচ কম লেগেছে। তেমন কোনো রোগবালাই নেই। তাই কম খরচে বেশি ধান উৎপাদন করতে পেরে আমরা লাভবান হয়েছি। আমাদের দেখে অনেকেই আগামী বছর এ জাতের ধান চাষ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ওই গ্রামের কৃষাণী বিনারানী বিশ্বাস, ‘প্রমিলা মজুমদার বলেন, ‘ হাইব্রিড ধান সাধারণত মোটা হয়। এটি  লম্বা ও চিকন।  এ জাতের ধানের ফলনও  প্রচলিত হাইব্রিডের তুলনায় অনেক বেশি । বাজারে এ ধান বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই  বীজ পেলে আগামী বছর এ জাতের ধান আবাদ করব।’

একই গ্রামের কৃষক বিবেকানন্দ পাইক বলেন, ‘হাইব্রিড ধানের বীজ রাখা যায় না। প্রতি বছর বাজার থেকে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা কেজি দরে বীজ কিনে চাষাবাদ করতে হয়। এ বীজের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।  আমরা সরকারের ভর্তুকি মূল্যে মান মানসম্পন্ন বীজ পেলে লাভজনক ব্রি হাইব্রিড ৮ ধানের আবাদ  বাড়াব । ’

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, ‘হাইব্রিড ধানের জাতের মধ্যে ব্রি হাইব্রিড ধান-৮ অধিক ফলনশীল। এটির চাষাবাদ সম্প্রসারিত হলে কৃষক লাভবান হবে। দেশে ধানের উৎপাদন বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে। দেশ ধানে সমৃদ্ধ হবে। তাই আমরা এ জাতের ধানের চাষাবাদ সম্প্রসারণে কৃষকদের সাথে নীবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রোমেল বিশ্বাস বলেন, ‘ এই ধানের গাছ খাটো জাতের, শক্ত। তাই হেলে পড়ে না।  রোগবালাই সহিষ্ণু। এক হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন ২৪ দশমিক ৩ গ্রাম।  চালে অ্যামাইলোজ ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং প্রোটিন ৯ দশমিক ২ শতাংশ। দানার পুষ্টতা ৮৮ দশমিক ৬ শতাংশ।  প্রতি বছর পুষ্টি সমৃদ্ধ এ ধানের আবাদ আরো বাড়াতে ভর্তুকি মূল্য ১৫০ টাকা কেজি দরে ধান বীজ সরবরাহের চিন্তা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই  বাংলাদেশর কৃষিতে এ ধান সমৃদ্ধির আশা জাগিয়েছে। আমার এ ধারা অব্যাহত রাখব।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আঃ কাদের সরদার বলেন, ‘ বিল বেষ্টিত গোপালগঞ্জ জেলার অন্তত ৭৮ শতাংশ জমিতে হাইব্রিড ধানের আবাদ হয়।  এই ধান অধিক ফলন দিচ্ছে। এ জেলায় এ জাতের ধানের আবাদ বাড়াতে পাড়লে ধান উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION