শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ০৪:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কোটালীপাড়ায় মাছের ঘর কাটা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০ কাশিয়ানীতে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ২৮ গোপালগঞ্জে ইজিবাইক চালকদের নামে মামলায় ও জরিমানা কোটালীপাড়ায় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ টুঙ্গিপাড়ায় গোসল করতে গিয়ে পা পিছলে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির মৃত্যু গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগে দুদকের অভিযান। অনিয়মের সত্যতা মিলেছে গোপালগঞ্জে উদ্যোক্তাদের নিয়ে ইনকিউবেশন বিজনেস প্রশিক্ষণ ছাত্রদল নেতা হত্যার প্রতিবাদে গোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ গোপালগঞ্জে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গনশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের ভূমিকা” বিষয়ক কর্মশালা গোপালগঞ্জে নার্স-মিডওয়াইফ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী

বিনাধান-২৫ এ কমবে চিকন চাল আমদানি নির্ভরতা

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ৮.১৭ পিএম
  • ৭৪ Time View

কালের খবরঃ

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ধীরাইল গ্রামের কৃষানী লিপী বেগম। এবছর বোরো মৌসুমে ৩ একর জমিতে “বিনাধান-২৫” এর চাষ করেছেন।ফলনও হয়েছে বাম্পার। “বিনাধান-২৫” বাসমতির মতো দেখতে চিকন ও লম্বা এবং খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বিগত কয়েক বছর ধরে এ ধানের চাষ করে আসছেন। লিপি বেগম বলেন, এ জাতের ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড় না লাগায় ফলন বেশি হয়েছে। সেই সাথে সার ও কিটনাশক একেবারেই না লাগায় অার্থিক সাশ্রয় হয়েছে। ফলে আগামী বছরও তিনি এই জাতের ধানের আবাদ করবেন। লিপি বেগমের মত একই কথা বলেন ধীরাইল গ্রামের অন্যন্য কৃষকরা।

“বিনাধান-২৫” দেখতে বাসমতির মতো চিকন ও লম্বা, খেতেও সুস্বাদু। অন্যন্য ধানের তুলনায় রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় ফলনও বেশ। সেই সাথে সেচ ও সার কম লাগায় অর্থ সাশ্রয় হওয়ায় এ জাতের ধানের আবাদ বেড়েছে গোপালগঞ্জে। এ জাতের ধান চাষ করলে একই জমিতে চার ফসলে রূপান্তর করার পাশাপশি আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে জানায়, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।

সরেজমিনে জানাগেছে, বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জের কৃষকরা হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের আবাদ করে থাকেন। তবে এবছর গোপালগঞ্জের কৃষকরা বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বিনাধান-২৫ জাতের ধানের আবাদ করেছেন। এতে ফলনও হয়েছে বাম্পার। মাঠের পর মাঠ সোনালী ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। ১৪০ দিনের স্বল্প জীবনকাল হওয়ায় প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এ জাতের ধান আগাম পাকায় কৃষকরা দ্রুত ঘরে তুলতে পারেন। তবে জমিতে পানি জমে থাকলে বা ঝড়-বৃষ্টির হলে গাছ সাময়িক হেলে পড়লেও গাছের গোড়া সবুজ থাকে এবং মাটির সাথে মিশে যায়না। ফলে এতে ফলনে কোন প্রভাব পরেনা। এ জাতের ধানে অন্যন্য ধানের তুলনায় রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় একদিকে যেমন ফলনও বাড়ে, অন্য দিকে সেচ ও সার কম লাগায় অর্থ সাশ্রয় হওয়ায় এ জাতের ধান আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে গোপালগঞ্জের কৃষকরা।

এ জাতের ধান চাষ করলে বিদেশ থেকে চিকন চাল আনতে হবে না। এতে আমদানি নির্ভরতা কমায় একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে কৃষক লাভবান হবে।

এদিকে, বিনার গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের অর্থায়নে “বিনাধান-২৫” এর প্রয়োগীক পরীক্ষণ মূল্যায়ন ও চাষাবাদ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।এ মাঠ দিবসে প্রধান অথিতি ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ। গোপালগঞ্জ বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মোঃ হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ মাহবুবুল আলম তরফদার, উপপ্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ আশিকুর রহমান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সনজয় কুমার কুন্ডু, বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌরভ অধিকারী উপস্থিত ছিলেন।

ধীরাইল গ্রামের কৃষানী মিনি বেগম বলেন, বিনার কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে “বিনাধান-২৫” এর আবাদ করেছি। ফলনও খুব ভালো পেয়েছি। এ ধান আগাম পাকায় ঝড়-বৃষ্টির আগে কেটে ঘরে তোলা যায়। এবার অন্তত ৭০ মন ধান পাবো।

অপর কৃষক বলেন, এ জাতের ধান আগে হয় এবং আগাম পাকে। ফলে ঝড়-বৃষ্টিতে কোন ক্ষতি হয় না। এ জাতের ধানের ভাত খেতে সুস্বাদু। এ জাতের ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড় না লাগায় কোন ধরনের কিটনাশক ব্যবহার করতেই হযনি। এতে আমাদের আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে।

বিনা গোপালগঞ্জের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন, দেশে চিকন চালের প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং প্রতিদিনিই চাহিদা বাড়ছে। যে কারনে আমাদের বিদেশ থেকে চিকন চাল আমদানী করতে হয়। “বিনাধান-২৫” চিকন ও লম্বা, খেতেও সুস্বাদু। এ জাতের ধান আবাদ করলে বিদেশ থেকে চিকন চাল আমদানি করতে হবে না। এতে আমাদের দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে অন্য দিকে কৃষক লাভবান হবে।

বিনা ময়মনসিংহ-এর মহাপরিচালক ড. মো: আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বিনাধান-২৫” বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটির একটি জাত। বাংলাদেশ যত চিকন চালের আবাদ করা হয় তার মধ্যে সবচেয়ে চিকন চাল হলো “বিনাধান-২৫”। এ জাতের ধানের জীবনকাল কম, মাত্র ১৪০দিন। উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় একর প্রতি ৭৬ মন উৎপাদন হলেও সর্বোচ ৮১ মন ধান উৎপাদন হয়ে থাকে। ফলে কৃষকরা লাভবান হয়ে থাকেন। দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য “বিনাধান-২৫” অনন্য ভূমিকা রাখবে বলেও দাবি করেন বিনার মহাপরিচালক।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION