কোটালীপাড়া প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় শুক্রবার (১মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে ৩দিন দিনব্যাপী কবি সুকান্ত মেলা। ইতোমধ্যে মেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন এ মেলার আয়োজন করেছে। জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলাটি উদ্বোধন করবেন।
উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈত্রিক ভিটায় ৩দিন ব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
মেলায় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও থাকবে বাংলাদেশের বিভিন্ন নামী-দামী শিল্পীর অংশ গ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বসবে বই ও গ্রামীন মেলা। এই মেলাকে ঘিরে উপজেলা ব্যাপী বইছে উৎসবের আমেজ। উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনী কবির বাড়ীটি সার্বক্ষনিক ভাবে মনিটরিং করছেন। অপরদিকে এই মেলাকে কেন্দ্র করে নবরুপে সেজেছে কবির বাড়ী ও এর আশপাশের এলাকা।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, এ মেলাকে ঘিরে উপজেলা ব্যাপি বইছে উৎসবের আমেজ। উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা সকলে মিলে এ মেলার আয়োজন করেছি। আগামীতেও এ মেলা যাতে অব্যাহত থাকে সে জন্য আমরা কাজ করে যাবে।
পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান হাজরা বলেন, আমি চাইবো সরকার কবির স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বিশেষ করে কবির পৈত্রিক ভিটায় একটি পর্যটন কেন্দ্র ও একটি আধুনিক লাইব্রেরী গড়ে তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে কবিকে তুলে ধরবেন।
কবি সুকান্ত স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অশোক কর্মকার বলেন, কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১১বছর ধরে কবির পৈত্রিক ভিটায় আমরা মেলা করে আসছি। কবির জন্ম আগস্ট মাসে। আগস্ট মাস শোকের মাস থাকায় আমরা প্রতিবছর মার্চের প্রথম সপ্তাহে এ মেলার আয়োজন করে থাকি।
শেখ হাসিনা আদর্শ সরকারি মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কবি মিন্টু রায় বলেন, প্রতি বছরই সুকান্ত মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দেশ বরণ্যে কবি, লেখক, সাহিত্যিকদের আড্ডা বসে। আশা করছি এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবেনা। এ মেলায় এসে কবি সাহিত্যিকরা তাদের প্রাণ খুলে কথা বলতে পারে। তাদেরকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। এ জন্য আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সভাপতি সুশান্ত মন্ডল বলেন, প্রতি বছর আমরা এই মেলায় বইয়ের স্টল দিয়ে থাকি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর আমরা বড় পরিসরে বইয়ের স্টল দিবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন বলেন, স্থানীয় সুধীজনদের সহযোগিতায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন এ মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা মেলার সকল আয়োজন শেষ করেছি। আমি চাইবো প্রশাসন ও এলাকাবাসী যেন আগামীতে কবির স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এ ধরনের গ্রামীন মেলার আয়োজন করেন। এ ছাড়া কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের আদর্শকে বর্তমান যুব সমাজের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আমাদের আরো নানা মূখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য: ১৯২৬ সালের ১৫ আগষ্ট কবি সুকান্ত ভট্রাচার্য্য কলিকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামা বাড়ীতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নিবারন ভট্রাচার্য্য। মাতা সুনীতি দেবী। ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন। ছাড়পত্র, ঘুম নেই, পূর্বাভাস, অভিযান, হরতাল- তার উল্লেখ যোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কবির প্রতিটি কবিতায় অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply